সেন্ডেল মারার খেসারত > আমনুরায় রেল পুলিশের মেটাল ডিটেক্টরের আঘাতে হাসপাতালে স্কুল শিক্ষিকা

চাঁপাইনবাবগঞ্জ আমনুরা রেলওয়ে জংশন স্টেশনে জিআরপি পুলিশকে সেন্ডেল মারায় পাল্টা মেটাল ডিটেক্টরের আঘাতে আহত হয়েছে সদর উপজেলার ঝিলিম ইউনিয়নের কেন্দুল সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষিকা কুলসুম নাহার রানী। রোববার দুপুরে জিআরপি পুলিশ ফাঁড়িতে ছোট ভাই মইনুদ্দীনকে আটকে রাখার ‘প্রতিবাদ’ করতে গিয়ে আঘাতপ্রাপ্ত হন রানী। তাকে রাজশাহী মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
প্রত্যক্ষদর্শী ও স্থানীয় সূত্রগুলো জানায়, রাজশাহী থেকে ছেড়ে আসা কমিউটর ট্রেনযোগে ২ জন যাত্রী ঝিলিম ইউনিয়নের আমনুরা রেলবাজার এলাকার মুক্তিযোদ্ধা মৃত আব্দুল কাদেরের ছেলে মইনুদ্দীনের বাড়িতে বেড়াতে আসে। দুপুরে ওই যাত্রী দু’জনকে আনতে মইনুদ্দীন রেলস্টেশনে যায়। সেখানে স্টেশন থেকে যাত্রী বের হওয়াকালে দায়িত্বরত টিটি যাত্রীদের কাছ থেকে টিকিট নিয়ে নেয়ার সময় তারা টিকিট ফেরত দিতে রাজি না হলে কথা কাটাকাটি শুরু হয়। কথা কাটাকাটির এক পর্যায়ে মইনুদ্দীন টিটিকে ধাক্কা দিলে সেখানে অবস্থান করা জিআরপি (পুলিশ) সদস্য মোশারফ আলী মইনুদ্দীনকে মারধর এবং আটক করে পুলিশ ফাঁড়িতে নিয়ে যায়।  মইনুদ্দীনকে আটকের খবর তার বাড়িতে গেলে স্টেশনে ছুটে আসেন কেন্দুল সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষিকা কুলসুম নাহার রানী।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানায়,  রানী আমনুরা রেলওয়ে পুলিশ ফাঁড়িতে ঢুকেই জানতে চায় কে মোশারাফ। এরপর সে তার সেলফোনে মোশারফের ছবি তোলা শুরু করে। তাকে নিবৃত করার চেষ্টা করা হলে সে আরো ক্ষুব্ধ হয়ে উঠে এবং বলেন, ‘ আমি ওকে দেখে নিবো। আমি মুক্তিয্দ্ধোার সন্তান। আমার ভাই পুলিশের দারোগা’।  একপর্যায়ে রানী তার পায়ের সেন্ডেল খুলে মোশারফের দিকে ছুড়ে মারলে মোশারফ তার হাতে থাকা মেটার ডিটেক্টর দিয়ে আঘাত করে। যা রানীর মাথায় লাগে। আঘাতে তার মাথা থেকে রক্ত বের হলে তাকে স্থানীয়রা দ্রুত চাঁপাইনবাবগঞ্জ সদর হাসপাতালে নিয়ে আসে। হাসপাতাল সূত্র জানিয়েছে, উন্নত চিকিৎসার জন্য ওই শিক্ষিকাকে রাজশাহী মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।
আমনুরা স্টেশন মাস্টার খাইরুল ইসলাম বলেন, ‘ প্রথমে ঘটনাটি ঘটার পর আমার স্থানীয়ভাবে মীমাংসার জন্য পুলিশ ফাঁড়িতে বসেছিলাম। এরই মাঝে কুলসুম নাহার ঘটনাস্থলে আসলে পরিস্থিতি উতপ্ত হয়ে উঠে। ক্ষুব্ধতার একপর্যায়ে রানী মোশাররফকে উদ্দেশ্য করে জুতা ছুড়ার পর মোশররফও মেটাল ডিটেক্টর দিয়ে পাল্টা আঘাত করেন। এতে কুলসুমের কপালে আঘাত লাগে’। পুলিশকে জুতা মারার কথা স্বীকার করেছেন কুলসুম নাহার রানীর ভাই মইনুদ্দীনও।
তবে আহত স্কুল শিক্ষিকা অভিযোগ করেন বলেন, ‘পুলিশ তাকে শুধু মেটাল ডিকেকটর দিয়েই আঘাত করেনি। আমাকে মারধরও করেছে। মাথায় আঘাতের পর আমি জ্ঞান হারিয়ে ফেলি। স্থানীয়রা আমাকে হাসপাতালে নিয়ে আসে’।
এব্যাপারে রাজশাহী রেলওয়ে পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আকবর হোসেনের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, ঘটনাটি খুবই অনাকাঙ্খিত। ঘটনাটি তদন্ত করে দেখা হচ্ছে। উ™ভুত পরিস্থিতিতে কন্সটেবল মোশাররফকে প্রত্যাহার করা হয়েছে।

চাঁপাইনবাবগঞ্জ নিউজ/ নিজস্ব প্রতিবেদক/ ৩১-০১-১৬

,