মেধাবী জনি’র উচ্চ শিক্ষা নিয়ে অনিশ্চয়তা

বয়স তখন তার মাত্র ২২ দিন। জন্মদাতা পিতা আব্দুস সালাম তাদের ছেড়ে চলে যায় ভিন্ন যায়গায়। মা মাসুদা বেগমের দু’ চোখজুড়ে তখন শুধুই অন্ধকার। চাঁপাইনবাবগঞ্জের গোমসত্মাপুর উপজেলার ফকিরপাড়া গ্রামের ভাইয়ের বাড়ির বারান্দার পার্শ্বে একচালা তুলে শিশু সনত্মান নিয়ে আশ্রয় নেয় মাসুদা বেগম। চরম অসহায়ত্বের মাঝে বেড়ে উঠা সেই শিশু সনত্মান জনি ইসলাম শত প্রতিকুলতা পেরিয়ে এবার কারিগরি শিড়্গা বোর্ডের অধিন ভোকেশনাল শাখা থেকে গোল্ডেন জিপিএ-৫ পেয়েছে। ভাল ফলাফল করে গোমসত্মাপুর পাইলট উচ্চ বিদ্যালয়সহ এলাকার মুখ উজ্বল করলেও আগামীতে লেখাপড়া করা হবে কি না হবে তা নিয়ে দুঃশ্চিনত্মা তাড়া করছে তাকে।
জনি ইসলামের মা মাসুদা বেগম জানান, স্বামী ছেড়ে চলে যাবার পর ‘কোলের শিশু’কে নিয়ে বাড়ি বাড়ি ঝিয়ের কাজ করে জীবিকা নির্বাহ করেছে সে। এখনও অন্যের বাড়িতে কাজ  করে দিনকাটে তার। ছোট থেকে জনি’র লেখাপড়ার প্রতি চরম আগ্রহ দেখে আরো সংগ্রামী হয়ে উঠে মাসুদা বেগম। বাড়ি বাড়ি কাজ করার পাশাপাশি শুরম্ন করেন খাবার হোটেলেও থালা বাসন মাজার কাজ। সকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যনত্ম কঠোর পরিশ্রম করে প্রাথমিকে গন্ডি পেরিয়ে জনিকে ভর্তি করেন গোমসত্মাপুর পাইলট উচ্চ বিদ্যালয়ে। নিজের কঠোর পরিশ্রম আর মানুষের সাহায্য সহযোগিতায় চলে জনি’র লেখা পড়া। মামা বাড়ির পার্শ্বের চালা ঘরে বিদ্যুতের আলো না থাকায় হ্যারিকেন ও কূপির আলোয় লেখা পড়া করেছে জনি ইসলাম। এখন তার ইচ্ছে ইলেক্ট্রিক্যাল ইঞ্জিনিয়ার হওয়ার। তার ইচ্ছেই বাধসেধেছে ‘অর্থ’।
মাসুদা বেগম বলেন, ‘পরের বাড়িতে কাম কোইর‌্যা আর চাইহ্যা চিনত্ম্যা ছাইল্যাকে মানুষ কোর‌্যাছি। এখন ভাল রেজাল্ট কোইর‌্যাছে তাই চরম বঞ্ছনার জীবনে  ওকে (জনিকে) লিয়্যাই স্বপ্ন দেখি। কিন' উপরের কেলাসে পড়হাইতে গেলে তো ম্যালাই টাকা লাগবে। এতো টাকা পাবো কুনঠে’।
সনত্মানকে ঘিরে সুখের স্বপ্ন দেখা মাসুদা বেগমকে এখন চিনত্মা তাড়া করছে, জনির উচ্চ শিড়্গার জন্য কিভাবে অর্থের যোগান হবে।

, , ,