পণ্য ছাড়াই চাঁপাইনবাবগঞ্জ থেকে যাত্রা করলো কৃষিপণ্য স্পেশাল ট্রেন
চাঁপাইনবাবগঞ্জের রহনপুর রেলওয়ে স্টেশন থেকে উদ্বোধনী দিনেই কোন রকমের কৃষিপণ্য ছাড়াই ঢাকার উদ্দেশ্যে যাত্রা করেছে কৃষিপণ্য স্পেশাল ট্রেন। যাত্রাপথে চাঁপাইনবাবগঞ্জের নাচোল ও আমনুরা রেলওয়ে জংশনেও কোন পণ্য বুকিং না করাই খালি লাগেজ নিয়ে চাঁপাইনবাবগঞ্জ ছেড়ে যেতে হয়েছে বিশেষ এই ট্রেনটিকে। ট্রেনের সময়সূচি ও অন্যান্য জটিলতার কারণে কৃষক ও কৃষি ব্যবসায়ীদের তেমন সাড়া না মেলেনি বলে জানিয়েছেন কৃষকরা।
চাঁপাইনবাবগঞ্জের রহনপুর রেলওয়ে স্টেশনের সহকারী স্টেশন মাস্টার মামুনুর রশিদ জানান, কৃষক ও কৃষি ব্যবসায়ীদের স্বল্প খরচে কৃষিপণ্য পরিবহনের সুবিধা দিয়ে শনিবার থেকে বিশেষ ট্রেন কৃষিপণ্য স্পেশাল ট্রেন চালু হয়। কিন্তু শুরুর দিনে রহনপুর স্টেশনে কোন কৃষিপণ্য বুকিং না হওয়ায় কোনো পণ্য ছাড়াই সকাল ৯টা ৪৫ মিনিটে ছেড়ে যায় ট্রেনটি। তিনি বলেন, ' রেলওয়ে কর্তৃপক্ষের নির্দেশনা অনুযায়ী গেল ক' দিন ধরে আমরা প্রস্তুতি নিয়েছিলাম। স্বল্প খরচে কৃষিপণ্য পরিবহনের সুবিধার কথাটি কৃষকদের মাঝে ব্যাপক প্রচারও করেছিলাম। কিন্তু তাদের কাছ থেকে সাড়া পেলাম না'। তবে শনিবারের বৃষ্টিজনিত আবহাওয়ার কারণে কৃষিপণ্য বুকিং না হতে পারে বলে মন্তব্য করেন।
এদিকে প্রস্তুতি ও প্রচার প্রচারণা থাকলেও চাঁপাইনবাবগঞ্জের নাচোল ও আমনুরা রেলওয়ে জংশনেও কোন কৃষিপণ্য বুকিং হয়নি। ফলে পণ্য ছাড়াই চারটি সাধারণ লাগেজ (বগি) ও একটি শীততাপনিয়ন্ত্রিত লাগেজ সম্বলিত বিশেষ এই ট্রেনটি চাঁপাইনবাবগঞ্জ ছেড়ে গেছে।
চাঁপাইনবাবগঞ্জ রেলওয়ে স্টেশন মাস্টার ওবায়দুল্লাহ বলেন, ' রহনপুর রেলওয়ে স্টেশনসহ চাঁপাইনবাবগঞ্জের তিনটি স্টেশন থেকে কৃষিপণ্য পরিবহনের কথা ছিল ওই বিশেষ ট্রনটির। পাশাপাশি চাঁপাইনবাবগঞ্জ স্টেশন থেকে ঢাকাগামী আন্ত:নগর ট্রেন বনলতাতেও একটি লাগেজ যুক্ত হয় কৃষিপণ্য পরিবহনের জন্য। প্রস্তুতি থাকলেও কোনটিতেই পণ্য বুকিং হয়নি'।
এদিকে কৃষকরা বলছেন, ট্রেনে ভাড়া কম হলেও পরিবহনের সময় ও অন্যান্য জটিলতায় তারা আগ্রহ দেখাচ্ছেননা। রহনপুরের কৃষক আব্দুস সবুর বলেন, 'ট্রেনে পরিবহন করতে গেলে ট্রেনের ভাড়ার পাশাপাশি কুলি খরচ, ফসলের মাঠ থেকে স্টেশন এবং স্টেশন থেকে মোকামের আলাদা পরিবহনে খরচ করতে হবে। হিসাব করে দেখতে গেলে ট্রেনে খরচ পড়বে কেজিপ্রতি প্রায় ৩ টাকা। অথচ সড়কপথে ট্রাকে মাল পরিবহন করে মোকামে খরচ হয় কেজিপ্রতি দুই থেকে আড়াই টাকা'।
একই এলাকার কৃষক পারভেজ আলী বলেন, ' রহনপুর স্টেশন থেকে সকাল সোয়া ৯ টায় এই ট্রেনটি ছেড়ে যাবে। ঢাকায় পৌছবে বিকেল বা সন্ধ্যায়। পণ্য বাজারজাত করা নিয়ে জটিলতা হতে পারে। সড়কপথে সন্ধ্যায় পণ্য নিয়ে ঢাকায় খুব ভোরে পৌছে যায়। ভোরেই পণ্য বিক্রি করে দিতে পারি। ট্রেনটি সকালে না হয়ে সন্ধ্যায় হলে ভাল হতো '।
প্রান্তিক কৃষকদের স্বল্প খরচে কৃষিপণ্য পরিবহনের সুবিধা দিতে রহনপুর স্টেশন থেকে প্রতি কেজি কৃষিপণ্য পরিবহনে ভাড়া ১ টাকা ৩০ পয়সা নির্ধারণ করে চালু হয় এই বিশেষ ট্রেন। সপ্তাহের প্রতি শনিবার চাঁপাইনবাবগঞ্জের রহনপুর থেকে সকালে শুরু করে যাত্রাপথের ১৩ টি স্টেশনে বিরতী দিয়ে কৃষিপণ্য পরিবহন করে বিকেলে ঢাকার তেজগাঁও স্টেশনে যাওয়ার কথা।
চাঁপাইনবাবগঞ্জ নিউজ / নিজস্ব প্রতিবেদক / ২৬ অক্টোবর ২০২৪