দুই মাস পর নীলগাইটি বঙ্গবন্ধু সাফারি পার্কে হস্তান্তর


দুই মাস ৮ দিন পর বিরল প্রজাতির সেই নীলগাইটি বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব সাফারি পার্কে হস্তান্তর করেছে বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি)। বৃহস্পতিবার সকালে বিজিবি’র ঢাকা সেক্টরের সেক্টর কমান্ডার কর্নেল আবু মোহাম্মদ মহিউদ্দিন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব সাফারি পার্ক, গাজীপুরে বন অধিদপ্তরের অধীনস্থ বন্যপ্রাণী অপরাধ দমন ইউনিটের পরিচালক মো. ছানাউল্যা পাটওয়ারীর কাছে নীলগাইটি হস্তান্তর করেন। এসময় বিজিবি’র পরিচালক (ভেটেরিনারি) আ.ন.ম. আশরাফুল আলম মন্ডলসহ বিজিবি’র অন্য কর্মকর্তাবৃন্দ এবং বন অধিদপ্তরের সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাগণ উপস্থিত ছিলেন।
বিজিবি’র জনসংযোগ কর্মকর্তা মো. শরিফুল ইসলাম এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে চাঁপাইনবাবগঞ্জস্থ রহনপুর ব্যাটালিয়ন (৫৯ বিজিবি)’এর মাধ্যমে এসব তথ্য জানিয়েছেন।
ওই বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, গত বছরের ২৬ অক্টোবর ৫৯ বিজিবি’র রহনপুর ব্যাটালিয়নের সোনামসজিদ বিওপি’র টহলদল চাঁপাইনবাবগঞ্জের শিবগঞ্জ উপজেলার দাইপুকুর ইউনিয়নের সীমান্তবর্তী হাউসনগর এলাকা থেকে আহত অবস্থায় এই নীলগাইটিকে উদ্ধার করে। এলাকাবাসীর ধাওয়া খেয়ে বিভিন্ন জায়গায় ছোটাছুটি করার কারণে নীলগাইটির শরীরে মারাত্মক জখম হয় এবং দীর্ঘণ না খেয়ে থাকায় অত্যন্ত দুর্বল ও মৃতপ্রায় হয়ে পড়ে। পরবর্তীতে সংবেদনশীল ও বিরল প্রজাতির এই প্রাণীটিকে উদ্ধার করে বিজিবি’র তত্ত্বাবধানে দীর্ঘ ২ মাস ৮ দিন ধরে নিজস্ব ভেটেরিনারি ডাক্তার দ্বারা চিকিৎসা প্রদান, প্রয়োজনীয় খাবার ও বাসস্থানের ব্যবস্থা করে অত্যন্ত নিবিড় পরিচর্যার মাধ্যমে সম্পূর্ণরূপে সুস্থ ও সুঠাম দেহের অধিকারী করে তোলা হয়।
বিরল প্রজাতির এই প্রাণীটিকে জাতীয়ভাবে সংরণের জন্য বৃহস্পতিবার বঙ্গবন্ধু সাফারি পার্কে হস্তান্তর করা হয়।
ওই বিজ্ঞপ্তিতে আরো বলা হয়, এর আগে ২০২১ সালের ২৩ ফেব্রুয়ারি ঠাকুরগাঁওয়ের কান্তিভিটা এলাকায় মৃতপ্রায় একটি পুরুষ নীলগাই উদ্ধার করে বিজিবি সদস্যগণ বিওপিতে নিয়ে আসে এবং সুদীর্ঘ চিকিৎসা ও নিবিড় পরিচর্যার মাধ্যমে বিরল এ প্রাণীটিকে সম্পূর্ণ সুস্থ করে তোলে। এছাড়া ২০২২ সালের ৬ জানুয়ারি দিনাজপুর ব্যাটালিয়নের বৈরচূনা বিওপির টহলদল আহত অবস্থায় আরো একটি নীলগাই উদ্ধার করে চিকিৎসা প্রদান ও নিবিড় পরিচর্যার মাধ্যমে সেটিকেও সুস্থ করে তোলে। পরবর্তীতে প্রাণী দুটিকে ঢাকায় এনে পিলখানাস্থ অভয়ারণ্যে গাছের সুশীতল ছায়াতলে সবুজ প্রকৃতির মাঝে আশ্রয় প্রদান করা হয়েছে।
উল্লেখ্য, বিজিবি সবসময়ই প্রাণীকল্যাণ আইনের প্রতি শ্রদ্ধাশীল এবং প্রাণী সংরণে অত্যন্ত যত্নবান। এছাড়াও দেশের বিভিন্ন প্রান্তে সীমান্ত দিয়ে পাচারকালে বিভিন্ন প্রজাতির বন্যপ্রাণী উদ্ধারপূর্বক বিজিবি নিয়মিতভাবে বন বিভাগে হস্তান্তর এবং অবমুক্ত করা হচ্ছে। ঢাকাস্থ পিলখানা বিজিবি সদর দপ্তরে গাছের সুশীতল ছায়াতলে সবুজ প্রকৃতির মাঝে সুবিস্তৃত এলাকা নিয়ে পশু-পাখিদের জন্য একটি অভয়ারণ্য সৃষ্টি করা হয়েছে, যেখানে অনেক বিরল প্রজাতির পশু-পাখি নিবিড় মমতায় বিচরণ করছে।

চাঁপাইনবাবগঞ্জ নিউজ/ নিজস্ব প্রতিবেদক/ ০৫ জানুয়ারী, ২০২৩