চাঁপাইনবাবগঞ্জে সাড়ে ১১ হাজার খামারের পশুতে মিটবে চাহিদা


ঈদুল আজহাকে সামনে রেখে উত্তরের সীমান্ত জেলা চাঁপাইনবাবগঞ্জে এ বছরে ১১ হাজার ৫৪৯ টি খামারে বাণিজ্যিকভাবে প্রায় ১ লাখ ৬৫ হাজার ৬শ’ ১৫টি গবাদি পশু লালন পালন হয়েছে। সৃষ্টি হয়েছে অনেক নতুন উদ্যোক্তাও। এ সব নতুন উদ্যোক্তা ও খামারীরা তিনটি প্রধান গবাদি পশুর হাট বটতলা হাট, তর্তিপুর হাট ও সোনাইচণ্ডি হাটসহ জেলার ছোট বড় মিলিয়ে ১৯টি গবাদি পশু হাটে নিয়ে গিয়ে বেচা-কিনা করছেন। সেই সাথে নতুন উদ্যোক্তারা অনলাইনেও পশু’র বেচা-কিনা বেড়েছে। ব্যাপক পরিমাণ গবাদি পশু লালন হলেও গো খাদ্যের দাম বেশি হওয়ায় এবার লাভ নিয়ে শংকা করছেন খামারিরা।
তবে চাঁপাইনবাবগঞ্জ প্রাণী সম্পদ কর্মকর্তারা বলছেন, জেলায় ১১ হাজার ৫৪৯ টি খামারে প্রচুর পরিমাণ গবাদি পশু রয়েছে। যা এবারের চাহিদার চেয়ে ৫০ হাজারেরও বেশি। চাহিদা মিটিয়ে কোরবানী যোগ্য এসব পশু গুলো বাহিরের জেলাগুলোতে বিক্রির জন্য পাঠানোর হচ্ছে।
চাঁপাইনবাবগঞ্জ প্রাণী সম্পদের তথ্য মতে, জেলায় ১ লাখ ৬৫ হাজার ৬১৫টি গবাদি পশু লালন পালন করছেন খামারিরা। জেলায় মোট গরু-মহিষ আছে ৮৮ হাজার ৪৭৬টি, আর ছাগল-ভেড়া আছে ৭৭ হাজার ১৩৯টি। এরমধ্যে চাঁপাইনবাবগঞ্জ সদর উপজেলায় ৩ হাজার ২৩৫টি খামারে কুরবানি যোগ্য গরু-ছাগল আছে ৭৭ হাজার ৮২২টি, শিবগঞ্জ উপজেলায় ৫ হাজার ৫৭৬ টি খামারে পশু আছে ৩৫ হাজার ১২৫টি, নাচোল উপজেলায় ৭৩৩টি খামারে ৯ হাজার ৮৩৫টি, গোমস্তাপুর উপজেলায় ৯৭৫ টি খামারে ২৯ হাজার ৭৩৪টি, আর ভোলাহাটে ১ হাজার ৩০ টি খামারে ১৩ হাজার ৯৯টি গরু-ছাগল কুরবানির জন্য প্রস্তুত করেছেন খামারিরা।
খামারি মুনিরুল ইসলাম বলেন, দেশের দেিনর প্রায় জেলাগুলোতে বন্যা দেখা দিয়েছে। আমাদের চাঁপাইনবাবগঞ্জ থেকে সে অঞ্চলের ব্যাপারীরা গরু কিনে নিয়ে যায়। কিন্তু কোরবানীর ঈদ কাছিয়ে আসছে, তাদের কোন খবর নেই। তাদের সাথে যোগাযোগ করেছি, কিন্তু তারা এবার গরু কিনতে আসবেন কিনা সঠিকভাবে বলতে পারছেন না। বাহিরের জেলার ব্যাপারীরা না আসলে সঠিক দাম পাওয়া নিয়ে খামারিদের ভূগতে হবে।
গো খাদ্যের দাম বেশি উল্লেখ করে খামারি এসএম কামাল বলেন, বন্যার আগে থেকেই গো খাদ্যের দাম অনেক বেশি। দেশের বিভিন্ন স্থানে বন্যা হওয়ায় আরও বেড়ে গেছে গো খাদ্যের দাম। আগের চেয়ে প্রায় দ্বিগুন দামে খৈল, ভুষি, খড় কিনতে হচ্ছে। এমন করে চলতে থাকলে গরুর নায্য দামও পাওয়া যাবে কিনা সন্দেহ।
চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ডা. মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, চাঁপাইনবাবগঞ্জে এবছর কোরবানীর লমাত্রা ধরা হয়েছে ১ লাখ ১৩ হাজার ৩ শ’ ৯৩ টি পশু। এবার কোরবানির ঈদে লমাত্রার চেয়ে ৫২ হাজার ২২২ টি পশু বেশি আছে। জেলার চাহিদা মিটিয়ে কোরবানী যোগ্য এসব পশু  বাহিরের জেলা বিক্রির জন্য নিয়ে যাচ্ছে খামারিরা। তিনি আরো বলেন, এ জেলায় খামারিদের  পাশাপাশি প্রতিটি মানুষের বাড়িতেও ৪-৫টি করে পশু লালন-পালন করে থাকে। তবে বাড়ির পশুগুলো গণনার বাইরে থাকে।



চাঁপাইনবাবগঞ্জ নিউজ/ নিজস্ব প্রতিবেদক/ ০৫ জুলাই, ২০২২