ফজলি আম কাউকেই নিরাশ না করে চাঁপাইনবাবগঞ্জ ও রাজশাহীর

ফজলি আম রাজশাহীর, নাকি
চাঁপাইনবাবগঞ্জের এ নিয়ে রশি টানাটানি চলছিল এত দিন।  সেই ফজলি আম কাউকেই নিরাশ না করে চাঁপাইনবাবগঞ্জ ও রাজশাহীর নিজস্ব পণ্য হিসেবে যৌথভাবে জিআই সনদ পেল।রাজশাহী ফল গবেষণা কেন্দ্র ফজলি আমের জিআই স্বত্ত্ব দাবি করার পর, পাল্টা দাবি জানায় চাঁপাইনবাবগঞ্জ। মঙ্গলবার এ নিয়ে ঢাকায় শুনানি হয়। শুনানি শেষে পেটেন্ট, ডিজাইন ও ট্রেডমার্কস অধিদপ্তরের রেজিস্ট্রার (অতিরিক্ত সচিব) যনেন্দ্রনাথ সরকার রাজশাহী-চাঁপাইনবাবগঞ্জের আমকে যৌথভাবে জিআই পণ্য হিসেবে আদেশ দেন।
তবে আগামী রবিবার পূর্ণাঙ্গ রায় প্রকাশ হবে বলে জানিয়েছেন শুনানিতে অংশ নেয়া আবেদনকারী ও চাঁপাইনবাবগঞ্জ কৃষি এ্যাসোসিয়েশনের সাধারন সম্পাদক মুনজের আলম মানিক।
রাজশাহী ফল গবেষণা কেন্দ্রের প্রধান বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা ড. আলীম উদ্দিন জানান, তিনি রাজশাহীর পে শুনানিতে অংশ নিয়েছিলেন। সেখানে তথ্য-উপাত্ত তুলে ধরেন।
আর চাঁপাইনবাবগঞ্জের পে জাহাঙ্গীর সেলিম ও মুনজের আলমসহ ৬ জন অংশ নেন। তারাও চাঁপাইনবাবগঞ্জের পে তথ্য-উপাত্ত তুলে ধরেন। প্রায় তিন ঘণ্টা ধরে চলা শুনানি শেষে বিকেলে আদেশ দেওয়া হয়। তাতে যৌথভাবে রাজশাহীও চাঁপাইনবাবগঞ্জকে ফজলি আমের জন্য জিআই সনদের স্বীকৃতি দেওয়া হয়। তিনি আরো জানান, এখন আদেশের বিরুদ্ধে কোনো প সংুব্ধ হলে আদালতে যেতে পারবেন। রাজশাহীর জন্য কী করা হবে, সেটি পরবর্তীতে ভেবে তারা সিদ্ধান্ত নেবেন। আপাতত রায় ঘোষিত আদেশই চূড়ান্
এদিকে শুনানিতে অংশ নেন চাঁপাইনবাবগঞ্জের পে লেখক ও গবেষক জাহাঙ্গীর সেলিম, এ্যাডভোকেট আবু হাসিব ও আবেদনকারী কৃষি এ্যাসোসিয়েশনের সাধারন সম্পাদক মুনজের মানিক। শুনানীতে অংশগ্রহনকারী জাহাঙ্গীর সেলিম বিষয়টি নিশ্চিত করে জানান, রায় ঘোষণার পর থেকে চাঁপাইনবাবগঞ্জ ও রাজশাহী উভয় জেলাই ফজলি আম কে নিজেদের মেধাস্বত্ব হিসেবে দাবী করতে পারবে।
অন্যদিকে আবেদনকারী মুনজের আলম মানিক এ বিজয় চাঁপাইনবাবগঞ্জ বাসীর ঐক্যবদ্ধ চেষ্টার বিজয় দাবী করে বলেন, শুনানীর ফলাফল লিখিত আকারে আগামী রবিবার পাওয়া যাবে।
উল্লেখ্য, রাজশাহী ফল গবেষণা কেন্দ্রের প্রধান বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা ড. আলীম উদ্দীন ভৌগলিক পণ্য নির্দেশক হিসেবে রাজশাহীর বাঘা ফজলি নামে ফজলি আমের উৎপত্তিস্থল ও এর জীবনচক্র রাজশাহীর দাবী করে আমটির পূর্ব ইতিহাস তাদের পে উল্লেখ করে এর মধাস্বত্ত দাবী করে পণ্য ব্যবহারকারীর নিবন্ধনের জন্য ১৫ নম্বর আবেদন করেন ২০১৭ সালের ৯ মার্চে। বিষয়টি জানার পর চাঁপাইনবাবগঞ্জ কৃষি এসোসিয়েশনের সাধারন সম্পাদক মো: মুনজের আলম মানিক চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলার পে ফজলি আম কে রাজশাহীর ভৌগলিক পণ্য নিবন্ধনের বিরোধীতা করে চলতি বছরের ১ মার্চ একটি মামলা দায়ের করেন। যার স্মারক নং-জি আই / অপজিশন মামলা নং-১/২০২১/২২০।
রিশাপাতের পর এবার রসালো, আঁশবিহিন, আকারে বিশাল ফজলী আমের ভৌগলিক নির্দেশক (জি আই) পণ্য হিসেবে স্বীকৃতির দাবি করে চাঁপাইনবাবগঞ্জ। সে সাথে ফজলি আম জিআই পণ্য হিসেবে রাজশাহী জেলার পে নিবন্ধনের বিরোধিতা করে চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলার পে নিবন্ধনের দাবিতে শিল্প মন্ত্রণালয়ের ডিজাইন, পেটেন্ট ও ট্রেড মার্কস বিভাগে একটি আপত্তি দাখিল করা হয়। এর পরিপ্রেেিত পেটেন্ট, ডিজাইন ও ট্রেড মার্কস বিভাগ এই আপত্তির যৈক্তিকতা বিবেচনা করে ২৪ মে উভয়পরে শুনানির দিন ধার্য করা হয়েছিলো। এছাড়া, বাংলাদেশের নয়টি পন্য জিওগ্রাফিক্যাল আইডেন্টিফিকেশন (জি আই) বা ভৌগলিক নির্দেশক হিসেবে নিবন্ধিত হয়েছে। এর মধ্যে ২০১৯ সালের ৭ জানুয়ারী স্বীকৃতি পায় চাঁপাইনবাবগঞ্জের রিসাপাত আম।

চাঁপাইনবাবগঞ্জ নিউজ/ নিজস্ব প্রতিবেদক/ ২৪ মে, ২০২২