চাঁপাইনবাবগঞ্জে আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী প্রার্থীর অফিস ভাঙ্গচুর ও কর্মীদের উপর হামলার অভিযোগ


আগামী ৩০ নভেম্বর অনুষ্ঠিতব্য চাঁপাইনবাবগঞ্জ পৌরসভা নির্বাচনে আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী স্বতন্ত্র মেয়র প্রার্থী সামিউল হক লিটন তার মোবাইল ফোন প্রতিকে নির্বাচনী অফিস ভাঙ্গচুর ও তার সমর্থকদের হুমকী-ধামকী দেয়ার অভিযোগ করেছেন। সোমবার চাঁপাইনবাবগঞ্জ শহরের একটি হোটেলে আয়োজিত সাংবাদিক সম্মেলনে তিনি এই অভিযোগ করেন।
লিখিত অভিযোগে সামিউল হক লিটন বলেন, গত ২৬ অক্টোবর নির্বাচন স্থগিত হওয়ার আগে আমার ৯টি নির্বাচনী ক্যাম্প ভাংচুর ও অগ্নি সংযোগ করা হয়। আবার নতুন নির্বাচনের তারিখ ঘোষানার পর ২০ নভেম্বর শহরের বিদিরপুরে ও ২১ নভেম্বর রাতে শহরের মসজিদপাড়া, শিবতলামোড় ও পুরাতনবাজাবারে ৩টি নির্বাচনী ক্যাম্প ভাংচুর ও অগ্নি সংযোগ করা হয়েছে।
‘শুধু মোবাইল ফোনের ভোট করার জন্য বটতলা হাট এলাকায় মোবাইল প্রতিকের কর্মী জাহেদুল, সোহেল ও রিপনকে, বিশ্বরোড মোড় এলাকায় মিলন ও শহরে দুলাল এবং দিদারকে অর্তকিতভাবে হামলা চালিয়ে মারধর করা হয়েছে। এসব ঘটনার জন্য পরিস্থিতিকে খুবই ভয়ংকর উল্লেক করে তিনি বলেন, শহরজুড়ে একটি ভীতিকর পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছে।
সাংবাদিক সম্মেলনে এসব ঘটনার জন্য শহরের কয়েকজন সন্ত্রাসীকে দায়ি করলেও তাদের নাম পরিচয় জানাননি। তিনি অভিযোগ করেন, এ সব ঘটনায় তিন দফা রির্টনিং কর্মকর্তা ও জেলা নির্বাচন অফিসারকে লিখিতভাবে ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য আবেদন করেছেন।
তিনি অভিযোগ করেন, নির্বাচনকে ঘিরে নৌকার কর্মীরা তাদের নিজেদের অফিস ভাঙ্গচুর করে আমাদের কর্মীদের বিরুদ্ধে মামলার দায়েরের পরিকল্পনা গ্রহণ করছে।
চাঁপাইনবাবগঞ্জ পৌরসভায় ভোট নিয়ে এমন সহিংসতা কোনদিন দেখিনি উল্লেখ করে তিনি আরও বলেন, বাড়ি থেকে বের হওয়ার সময় আমার মা বলে, ১০-১২ জন ছেলেকে নিয়ে চলাফেরা করবে। আমার অপরাধ কি? আমাকে কেন বডিগার্ড নিয়ে চলতে হবে? আমার স্ত্রী বলছে, রিটার্নিং কর্মকর্তার মাধ্যমে আবেদন করে অস্ত্রধারী দেহরী নিয়ে চলাফেরা করো। যাতে জীবনের নিরাপত্তা থাকে ও আমরা শঙ্কামুক্ত থাকতে পারি।
তিনি আগামী পৌরসভা নির্বাচনে সুষ্ঠুভাবে ও শান্তিপুর্ণভাবে ভোট প্রদানের সুযোগ সৃষ্টি করে দেয়ার জন্য স্থানীয় প্রশাসনের প্রতি দাবি জানান।
এব্যাপারে চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আব্দুল ওদুদের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, আওয়ামী লীগ কোন নির্বাচনে কোন রকম বিশৃংখলা করেনি ভবিষ্যতেও করবেনা। এটার অপপ্রচার। এই অপপ্রচারের মাধ্যমে সাধারণ মানুষের সহানুভুতি নেয়ার চেষ্টা করা হচ্ছে।
এবিষয়ে জেলা নির্বাচন কর্মকর্তা মোতাওয়াক্কিল রহমান জানান, অভিযোগ পাওয়ার সাথে সাথেই ঘটনাস্থলে পুলিশ ও ম্যাজিস্ট্রেট পাঠানো হয়েছে। এমনকি অভিযোগগুলোর বিষয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে পুলিশ সুপারকে জানানো হয়েছে।
সংবাদ সম্মেলনে মোবাইলফোন প্রতীকের মেয়র প্রার্থী লিটনের বন্ধু দুলাল, জুয়েল ও রিঙ্কুসহ জেলার কর্মরত বিভিন্ন গণমাধ্যমের সাংবাদিকগণ উপস্থিত ছিলেন।
উল্লেখ্য, আগামী ৩০ নভেম্বর চাঁপাইনবাবগঞ্জ পৌরসভা নির্বাচনে আওয়ামী লীগের প্রার্থীসহ মোট ৪ জন মেয়র পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন।

চাঁপাইনবাবগঞ্জ নিউজ/ নিজস্ব প্রতিবেদক/ ২২ নভেম্বর, ২০২২১