বিএনপির মরা গাঙ্গে আর জোয়ার আসবেনা- আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের

বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বিএনপি’র উদ্দ্যেশে ৮ বছরে কয়টা আন্দোলন হলো প্রশ্ন তুলে বলেছেন, এই বছর নয়, ওই বছর আন্দোলন হবে কোন বছর- কেউ জানেনা। বিএনপি এই বছর আন্দোলন আর ওই বছর আন্দোলন এমন কথা বলে সময় পার করেছে। নির্বাচন চলে আসছে তাই বিএনপি আর আন্দোলন করতে পারবেনা। বিএনপির মরা গাঙ্গে আর জোয়ার আসবেনা। বুধবার দুপুরে চাঁপাইনবাবগঞ্জের হরিমোনহন সরকারি উচ্চ বিদ্যালয় মাঠে আওয়ামী লীগের সদস্য সংগ্রহ ও নবায়ন কর্মসুচির উদ্বোধন উপলক্ষে আয়োজিত এক সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি একথা বলেন।
বিএনপিকে বাংলাদেশ নালিশ পার্টি উল্লেখ করে ওবায়দুল কাদের উল্লেখ করেন ওবায়দুল কাদের বলেন, ওরা ঘরের মধ্যে বসে ভাঙ্গা রেকর্ড বাজায়। কথামালা আর চাতুরী ছাড়া আগামী নির্বাচনে জেতার জন্য বিএনপি নেতাদের আর কোন পুজি নেই।
ওবায়দুল কাদের বলেন, বিএনপিকে ভোট দিলে আবারও হাওয়া ভবন সৃষ্টি হবে। দেশ আবারও অন্ধকার, অমানিসার অন্ধকারে দেশ নিমজ্জিত হবে। ৫ জানুয়ারির নির্বাচনে বিএনপি আন্দোলনের নামে গাছ কেটে রাস্তা কেটে। আগুন সন্ত্রাস চালিয়েছে।
তিনি আওয়ামী লীগকে ঐক্যবদ্ধ থাকার আহবান জানিয়ে বলেন, বিএনপি সাংগঠনিকভাবে দুর্বল কিন্তু মনে রাখবেন এখানে আরেকটা শক্তি আছে জামায়াত । নির্বাচনে তাদের (জামায়াতের) ভোট গুলো যোগ করে নিবে বিএনপি’র সঙ্গে। সেই কারণে তাদের দুর্বল ভাবা ঠিক হবেনা। সর্মথনের দিক থেকে তারা (বিএনপি) দুর্বল নয়। সেই কারণে দলের মধ্যে বিভেদ রাখলে চলবেনা। এটার মনে রেখেই আওয়ামী লীগকে কাজ করতে হবে। ঘরে ঘরে যেতে হবে। ভাল আচরণ করতে হবে।
সরকারের উন্নয়ন কর্মকান্ড তুলে ধরে সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বলেন, শেখ হাসিনার নেতৃত্বাধীন সরকার গত ৩ বছরে যে উন্নয়ন করেছেন ৭৫ পরবর্তী কোন সরকারই করতে পারেননি। তাদের সম্মেলিত উন্নয়নের চেয়েও শেখ হাসিনার উন্নয়ন বেশি। শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বাংলাদেশ আজ বিশ্ব দরবারের মাথা উচু করে দাড়িয়েছে।
তিনি বলেন, শেখ হাসিনার সরকার জনগনের উন্নয়নের লক্ষে কাজ করে চলেছে। শেখ হাসিনার সরকার বয়স্ক ভাতা দিচ্ছেন, বিধবা ভাতা দিচ্ছেন, দেশের সুর্য সন্তান মুক্তিযোদ্ধাদের ভাতা দিচ্ছেন। তিনি বলেন, শেখ হাসিনা দেশে নারীর ক্ষমতায়ন সৃষ্টি করেছেন।
সরকারের ডিজিটাল বিপ্লবের সুফল প্রত্যান্ত এলাকার মানুষ ভোগ করছেন। গ্রামে বসেই বিদ্যুতের বিল, পানি বিল, ভর্তি ফরম পুরনসহ নানান ডিজিটার সুবিধা আজ মানুষ ভোগ করছেন।
সদস্য সংগ্রহ ও নবায়ন কর্মসুচির উদ্বোধীন সমাবেশে ওবায়দুল কাদের বলেন, যারা এলাকায় সন্ত্রাসী হিসেবে পরিচিত, চাঁদাবাজ হিসেবে পরিচিত, মাদক ব্যবসায়ী তারা আওয়ামীলীগের সদস্য হতে পারবে না। আওয়ামীলীগের সদস্য হতে হলে নিবেদিত প্রাণ হয়ে দলের জন্য কাজ করতে হবে।
তিনি আওয়ামী লীগ নেতাদের উদ্দ্যেশে বলেন, যখন কমিটি গঠন করবেন ভুলেও পটেক কমিটি করবেন না। যদি পটেক কমিটি করেন তাহলে আমরা প্রয়োজনী ব্যবস্থা নিবো। তাই কমিটি গঠন করা আগে যারা দলের হয়ে কাজ করেছে তাদের কমিটিতে জায়গা করে দিতে হবে।
মন্ত্রী বলেন, নেতা চাই, কিন্তু পাতি নেতা নয়। ক্ষমতায় এসে কর্মীদের মূলায়ন করবেন না সেটা মেনে নেয়া যাবে না।
আগামী নির্বাচনে দলীয় প্রার্থী মনোনয়ন সর্ম্পকে ওবায়দুল কাদের বলেন, যারা প্রার্থীতা হতে চান কোন সমস্যা নেই। তবে, অসুস্থ ব্যক্তি প্রার্থী হতে পারবেন না। প্রার্থীতা হলেই যে মনোয়ন পাবেন সেটা নয়। তিন মাস পর পর জনমত জাচাই হচ্ছে। তিনটি গোয়েন্দা সংস্থা ও অন্য দু’টি সংস্থার জরিপ প্রধানমন্ত্রীর কাছে যাচ্ছে। নেত্রীর কাছে সবার এসিআর জমা হচ্ছে। কে ভাল কাজ করছেন আর কে খারাপ কাজ করছেন। যারা জনগনের কাছে গ্রহণযোগ্য নয়, তারা আগামী নির্বাচনে আওয়ামী লীগের মনোনয়ন পাবেননা।
তিনি দলীয় নেতাকর্মীদের ঐক্যবদ্ধ হয়ে কাজ করাসহ আগামী নির্বাচনে চাঁপাইনবাবগঞ্জবাসীকে দল বিবেচনা না করে যে নেতা উন্নয়ন দেয় সেই নেতাকে আগামী নির্বাচনে ভোট দেয়ার আহবান জানান।
চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি মইনুদ্দীন মন্ডলের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সমাবেশে অন্যান্যের মাঝে বক্তব্য রাখেন, বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক জাহাঙ্গীর কবীর নানক, সাংগঠনিক সম্পাদক খালেদ মাহমুদ চৌধুরী, কেন্দ্রীয় সদস্য এ.এইচ.এম খায়রুজ্জামান লিটন, নুরুল ইসলাম ঠান্ডু, সংসদ সদস্য আব্দুল ওদুদ, রাজশাহী জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আসাদুল ইসলাম আসাদ, রাজশাহী মহানগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ডাবলু সরকার, চাঁপাইনাববগঞ্জ জেলা আওয়ামী লীগের নেতা অধ্যাপক কামাল উদ্দীন, এ্যাড. আতাউর রহমান। এসময় উপস্থিত ছিলেন, সংসদ সদস্য গোলাম রাব্বানী, সংসদ সদস্য গোলাম মোস্তফা বিশ্বাস, বেগম আখতার জাহান, সাবেক  বিদ্যুৎ প্রতিমন্ত্রী এনামুল হক, সাবেক সংসদ সদস্য জিয়াউর রহমান, জেলা আওয়ামীলীগের সহ-সভাপতি আলহাজ্ব রুহুল আমিন, জেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সম্পাদক ডা. সামিল উদ্দীন আহম্মেদ শিমুল, নাচোল উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান আব্দুল কাদের, সদর উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এ্যাড. নজরুল ইসলাম, চাঁপাইনবাবগঞ্জ পৌর আওয়ামী লীগের সভাপতি শরিফুল আলম, সাধারণ সম্পাদক এ্যাড. মিজানুর রহমান, প্রকৌশলী মাহতাব উদ্দীন, যুবলীগের কেন্দ্রীয় প্রেসিডিয়াম সদস্য আনোয়ারুল ইসলাম আনোয়ার, সহ সস্পাদক সৈকত জোয়ার্দার, জেলা যুবলীগের সভাপতি মাসিদুর রহমান, সাধারণ সম্পাদক শহীদুল হুদা অলক, স্বেচ্ছাসেবক লীগের সাধারণ সম্পাদক আতিকুল ইসলাম, কৃষক লীগের সভাপতি এ্যাড. আব্দুস সামাদ বকুল, সাধারণ সম্পাদক মুসফিকুর রহমান টিটো, জেলা ছাত্রলীগের সভাপতি সাকিউল ইসলাম সাকিল, সাধারণ সম্পাদক আরিফুর রেজা ইমন প্রমুখ।
এরআগে মন্ত্রী চাঁপাইনবাবগঞ্জের চারটি উন্নয়ন প্রকেল্পর উদ্বোধন ও ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করেন। উন্নয়ন প্রকল্পগুলোর মধ্যে রয়েছে কানসাট-গোমস্তাপুর-রহনপুর সড়কের রহনপুর সেতু ও চাঁপাইনবাবগঞ্জ সদর উপজেলার চর ইসলামাবাদ ও চর তেররশিয়া ইসলামপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় ভবনের উদ্বোধন এবং চীফ জুডিসিয়াল আদালত ভবন থেকে জজ আদালত ভবন পর্যন্ত আরসিসি ওভার ব্রীজ নির্মাণ ও সদর উপজেলার মরা পদ্মা নদীর খাকচাপাড়া নামক স্থানে সেতু নির্মাণ।

চাঁপাইনবাবগঞ্জ নিউজ/ নিজস্ব প্রতিবেদক/ ২৯-১১-১৭