র‌্যাবের নিখোঁজ তালিকায় থাকা চাঁপাইনবাবগঞ্জের একজন বাড়িতেই রয়েছেন

র‌্যাব প্রকাশিত নিখোঁজের তালিকায় ২৬১ জনের মধ্যে থাকা চাঁপাইনবাবগঞ্জের ৪ জনের একজন বাড়িতে রয়েছেন। অপহরণের ঘটনায় ‘নিখোঁজ’ মোস্তফা কামাল নামের ওই যুবক ঘটনার এক সপ্তাহ পর বাড়ি ফিরে আসে। প্রকাশিত তালিকার চার জনের মধ্যে তিনজন শিবগঞ্জ ও একজন নাচোল উপজেলার।
নাচোল উপজেলার নেজামপুর গ্রামের সাইদুর রহমানের ছেলে মোস্তফা কামাল (২৮) গত ৬ জুলাই সোনাইচন্ডি হাটে অপহরণের শিকার হয়েছিলেন।
সাইদুর রহমান জানান, মোস্তফা কামাল সোনাইচন্ডি হাতে গরু কিনতে গেলে  অপহরনকারিরা তাকে অজ্ঞান করে। পরে তাকে মাইক্রোবাসে করে নিয়ে যায়। যখন তার স্বাভাবিক জ্ঞান আসে তখন সে বুঝতে পারে হাত-পা ও মুখ বাঁধা অবস্থায় একটি মাইক্রোর মধ্যে। তার কাছে থাকা ৩১ হাজার ৫০০ টাকা কেড়ে নেয়। এ সময় অপহরনকারিরা দুই লক্ষ টাকা মুক্তিপন চেয়ে তার পরিবারকে ফোন করতে বললে সে তা অস্বীকার করে। এতে ক্ষিপ্ত হয়ে অপহরণকারীরা তাকে মারধোর করে। এক পর্যায়ে অপহরনকারিরা ওই স্থান থেকে অন্যত্র সরিয়ে নেয়। এক সপ্তাহ পর তারা তাকে রাত তিনটার দিকে মাইক্রো থেকে ফেলে দেয়। স্থানীয় এক ব্যক্তি সকালে তাকে দেখে জিজ্ঞাসা করলে তাকে মোস্তফা কামাল পুরো ঘটনার বিবরণ দেয়। ওই লোকের মাধ্যমে সে জনতে পারে ওই স্থানটি টেকনাফ। ওই লোক মোস্তফা কামালকে কক্সবাজারের শ্যমলী পরিবহনের কাউন্টারে পৌছে দেয়। শ্যামলী পরিবহন কাউন্টার থেকে মোস্তফা কামাল তার পরিবারের সঙ্গে যোগাযোগ করে বিকাশের মাধ্যমে ২ হাজার টাকা নিয়ে বাড়ি ফিরিয়ে নিয়ে আসে।
মোস্তাফা কামালের পিতা সাইদুর রহমান জানান, নিখোঁজের পর দিন নাচোল থানায় একটি জিডি করেন। তার ছেলে ফিরে আসার পর বিষয়টি পুলিশকে অবহিত করা হয়। নাচোল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা ফাসির উদ্দীন জানান, মোস্তফা কামালের নিখোঁজের বিষয়টি আমরা অবগত। ওই পরিবারের বিরুদ্ধে থানায় কোন অভিযোগ নাই।
এদিকে স্থানীয়রা জানায়, তাদের পরিবার আওয়ামী লীগের সাথে সংশ্লিষ্ট।
অন্যদিকে, শিবগঞ্জ উপজেলার চকনাধরা গ্রামের নজিবুল্লাহ আনসারী, রানীনগর গ্রামের মতিউর রহমানের ছেলে বাদশা আলী (২৫) ও কমলাকান্তপুর গ্রামের সুমন আলী। এদের মধ্যে বাদশা ও সুমন বাড়ি থেকে রাগ করে চলে গেছে বলে জানায় তাদের পরিবার।
শিবগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (তদন্ত) চৌধুরী জোবায়ের আহমেদ জানান, নজিবুল্লাহ আনসারী চাঁপাইনবাবগঞ্জে গ্রামের বাড়িতে থাকতোনা। সে পরিবারের সাথে চট্রগ্রামে থাকতো। অপর দুইজন বাড়ি থেকে রাগ করে চলে যাবার পর ফিরে আসেনি। তবে বাদশা বাড়ি থেকে যাবার পর তার ভাই ওয়াহাব আলী শিবগঞ্জ থানায় জিডি করেন।
বাদশার ভাই ওয়াহাব আলী জানান, সে ঢাকায় রাজমিস্ত্রীর কাজ করতো। রোজার ঈদের আগের দিন ফোন করেছিল। তবে কোথায় আছে তা জানায়নি। কোরবানী ঈদে বাড়ি ফিরে আসবে বলে জানিয়েছে। অভিভাকরা পারিবারিক বিষয় নিয়ে বকাবকি করলে এবছরের ২২ এপ্রিল সে বাড়ি থেকে চলে যায়।
সুমনের পিতা মতিউর রহমান জানায়, ২০১১ সালে পারিবারিক বিষয় নিয়ে বকাবকি করলে সে বাড়ি থেকে চলে যায়। গত দুই বছর আগে তাদের গ্রামের এক লোক ঢাকার আমিন বাজারে তাকে একটি ট্রাক থেকে ইট নামাতে দেখেছে। এরপর থেকে আর কোন যোগাযোগ নেই।
তিনি থানায় কোন জিডি করেননি বলে জানান সুমনের পিতা।


চাঁপাইনবাবগঞ্জ নিউজ/ নিজস্ব প্রতিবেদক/ ২১-০৭-১৬