পিঠা-পুলির সমারহে গোমস্তাপুরে পালিত হল গ্রাম বাংলার নবান্ন উৎসব

গ্রাম বাংলার ঐতিহ্য পৌষ মাসে পিঠা-পুলির সমারহে উৎসব জমে উঠেছে চাঁপাইনবাবগঞ্জের গোমস্তাপুরে। এলাকার বিভিন্ন জায়গায় পালন হয়েছে নবান্ন উৎসব। শনিবার সকাল থেকে উৎসবের আয়োজন হয় চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলার রহনপুর পৌর এলাকার বাবুরঘোন গ্রামে।
প্রতি বছর গ্রামের কৃষাণ-কৃষাণীর ছেলে মেয়ের মনে আনন্দ দেয়ার জন্য নবান্ন উৎসবের এই আয়োজন করেন উত্তর রহনপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষিকা মমতাজ বেগম। এলাকার ছাত্র-ছাত্রীরা তাদের প্রিয় শিক্ষিকাকে তিন কেজি করে সংগ্রহ করা মাঠের ধান দিয়ে এ নবান্ন উৎসবকে উৎসাহিত করে। প্রায় শতাধিক ছাত্র-ছাত্রী ও এলাকার উৎসাহী কৃষাণীরা এতে অংশ নেয়। এলাকাটিতে এ উৎসবে পিঠা খাওয়ার ধুম পড়ে যায়। লাল-হলুদ শাড়ি, কাঁচা ফুলের মালা পরে ছাত্র-ছাত্রী ও বয়োবৃদ্ধারা সারাদিন পিঠা তৈরি ও নাচে-গানে মেতে উঠে। গ্রাম-বাংলার ঢেঁকি ও যাঁতার শব্দ ওই দিনটিতে শুনতে পাওয়া যায়। ছেলে মেয়েদের সংগ্রহ করা ধান থেকে ঢেঁকি ছাঁটা চাল যাঁতার পিষা আটা দিয়ে হরেক রকমের পিঠা-পুলি খেতে আসে উৎসুক মানুষ। আবার প্যাকেট করে সমাজের গণ্যমান্য ব্যক্তিদের বাসায় পৌঁছে দেয়া হয় পিঠা। পিঠা খেতে আসা উৎসুক অতিথিদের গ্রাম-বাংলার গীত গেয়ে আনন্দ দেয় ওই ছাত্র-ছাত্রীরা। গ্রামের এ ঐতিহ্যকে উৎসাহ যোগাতে ছুটে আসে রাজনৈতিক নেতা ও স্থানীয় সাংবাদিকরা।
এ ব্যাপারে শিক্ষিকা মমতাজ বেগম গতকাল জানান, তার নানা-নানী বহুযুগ ধরে বিভিন্ন ধরনের পিঠা-পুলি বানিয়ে গ্রামের কৃষাণ-কৃষাণীদের দাওয়াত করে খাওয়াতেন। সেই থেকেই এ ঐতিহ্যকে ধরে রাখতে প্রতিবছর গ্রামের ছাত্র-ছাত্রীদের নিয়ে উৎসবটি পালন করে আসছেন। তাকে এ কাজে সহযোগিতা ও উৎসাহ যোগিয়ে আসছে বড়বোন কলেজ শিক্ষিকা শামিমা আখতার ও এলাকার কৃষাণীরা।
উৎসব উপলক্ষে বিকালে আলোচনা সভা ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান অনুষ্ঠিত হয়। এতে বক্তব্য রাখেন সাবেক সংসদ সদস্য জিয়াউর রহমান, রংপুর পায়রাবন্দর রোকেয়া গবেষনা কেন্দ্রের গবেষক রফিকুল ইসলাম দুলাল, সামাজিক ব্যক্তিত্ব গোলাম সাওয়ার, অবসরপ্রাপ্ত অধ্যাপক সাদিকুল ইসলাম প্রমূখ। পরে স্থানীয় শিল্পীরা মনোঙ্গ সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান পরিবেশন করে।

চাঁপাইনবাবগঞ্জ নিউজ/ নুর মোহাম্মদ, গোমস্তাপুর/ ২৬-১২-১৫

,