চাঁপাইনবাগঞ্জের ১১ বীরঙ্গনাকে মুক্তিযোদ্ধার স্বীকৃতি প্রদান > সদরের বীরঙ্গনার হদিস মেলেনি

মহান মুক্তিযুদ্ধে অবদানের জন্য দেশের ৪১ জন বীরাঙ্গনাকে মুক্তিযোদ্ধার স্বীকৃতি দিয়ে গেজেট প্রকাশ করেছে সরকার। এর মধ্যে ১১ জন রয়েছেন চাঁপাইনবাবগঞ্জের। সোমবার মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রণালয় এ-সংক্রান্ত আদেশ জারি করে। গেজেটে বলা হয়, জাতীয় মুক্তিযোদ্ধা কাউন্সিল আইন অনুযায়ী প্রকৃত বীরাঙ্গনা মুক্তিযোদ্ধাদের তালিকা গেজেট আকারে প্রকাশ করা হলো।
চলতি বছরের জুলাই মাস থেকে তাদের মুক্তিযোদ্ধার সুযোগ-সুবিধা দেওয়া হতে পারে বলে জানিয়েছে মন্ত্রণালয়।
একাত্তরে মুক্তিযুদ্ধের সময় নির্যাতিত নারীদের এর আগে বীরাঙ্গনা স্বীকৃতি দিয়ে সম্মান জানানো হয়। দীর্ঘ ৪৫ বছর পর বীরঙ্গনাদের মুক্তিযোদ্ধা হিসেবে এ স্বীকৃতি প্রদান করা হলো।
স্বীকৃতিপ্রাপ্ত ১১ জন হচ্ছেন, গোমস্তাপুর উপজেলার বোয়ালিয়া ইউনিয়নের নরশিয়া গ্রামের এন্তাজ আলীর স্ত্রী রাবিয়া বেগম, শিবগঞ্জ উপজেলার মনাকষা ইউনিয়নের চৌকামনকষা গ্রামের রুস্তম আলীর স্ত্রী মালেকা বেগম, গোমস্তাপুর উপজেলার বোয়ালিয়া ইউনিয়নের লক্ষিনারায়ণপুর গ্রামের এন্তাজ আলীর স্ত্রী হাছিনা বেগম, লালাপুর গ্রামের কালু শেখের স্ত্রী জলো বেগম, বড় বানেশ্বরপুর গ্রামের রাজ্জাকের স্ত্রী সাফেদা বেগম, ঝড়– শেখের স্ত্রী আয়েশা বেগম, নরশিয়া গ্রামের নওশাদ আলীর স্ত্রী রেনু বেগম, সাহাপাড়া গ্রামের তামির আলী স্ত্রী হাজেরা বেগম, অহেদুল আলীর স্ত্রী আরবী বেগম, নরশিয়া গ্রামের শহীদ অয়েজউদ্দীনের স্ত্রী রাহেলা বেগম, চাঁপাইনবাবগঞ্জ সদর উপজেলার লাখেরাজপাড়া গ্রামের তাজেমুল হকের স্ত্রী লিলি বেগম।
এদিকে, চাঁপাইনবাবগঞ্জ সদরের বীরঙ্গনা হদিস মেলেনি। গেজেট প্রকাশের পর বীরঙ্গনাদের মুক্তিযোদ্ধা স্বীকৃতি দেয়ার খবর গণমাধ্যমে আসলে চাঁপাইনবাবগঞ্জ নিউজ ডটকম’র পক্ষ থেকে লিলি বেগমের অনুভুতি জানার জন্য গোটা লাখেরাজপাড়া খুজে ফিরলেও কেউ তার সন্ধান দিতে পারেননি।
লাখেরাজপাড়ার গৃহশিক্ষক আলী আহম্মদ জিয়া বলেন, ‘ লাখেরাজপাড়া মহল্লাটি বড় মহল্লা নয়। দীর্ঘদিন ধরে এই মহল্লায় বসবাস করছি এই নামের কোন বীরঙ্গনার নাম শুনিনি’।
লাখেরাজপাড়ায় বসবাসকারী চাঁপাইনবাগঞ্জ সেক্টর কমান্ডার্স ফোরামের আহবায়ক মুক্তিযোদ্ধা  এ্যাড. আব্দুস সামাদ জানান, লিলি বেগম নামে কোন বীরঙ্গনা চাঁপাইনবাবগঞ্জে ছিল এটি তার জানা নেই। তিনি আক্ষেপ করে বলেন, ‘ কোথা থেকে যে কি হয়ে যাচ্ছে। ভুয়া মুক্তিযোদ্ধা হচ্ছে। এখন দেখছি ভুয়া বীরঙ্গনাও হচ্ছে’।
এ ব্যাপারে চাঁপাইনবাগঞ্জ জেলা মুক্তিযোদ্ধা সংসদের কমান্ডার সিরাজুল ইসলামের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি কিছু জানেনা বলে জানান। লাখেলাজপাড়ায় কোন বীরঙ্গনা ছিল এটিও তার জানা নেই। তিনি বলেন, ‘চাঁপাইনবাবগঞ্জ পৌর এলাকার টিকরামপুরের এক বীরঙ্গনার কথা শুনেছিলাম। কিন্ত তার নাম সম্ভবত লিলি বেগম নয়’।

চাঁপাইনবাবগঞ্জ নিউজ/ নিজস্ব প্রতিবেদক/ ১২-১০-১৫

,