চরাঞ্চলের মানুষের স্বপ্নজয়

একপাশে প্রমত্তা পদ্মা আর অন্যপাশে মহানন্দা। মাঝখানে চরাঞ্চলের ৭ টি ইউনিয়নের ৫ লক্ষ মানুষের বসাবাস। এক সময়ের দুর্গম ইসলামপুর, দেবীনগর, আলাতুলি, শাহজাহানপুর, চরবাগডাঙ্গাসহ অন্যান্য এলাকার মানুষের জেলা সদরের সঙ্গে যোগাযোগ মানেই নদী পারাপারের দুর্ভোগ।
ইসলামপুর ইউনিয়নের মীরের চরা গ্রামের আবুল কাশেম বলেন, ‘মহানন্দা নদী তীরেই ছোট থেকে বড় হয়েছি। ঘাট পার হতে দেখেছি বহুমানুষের দুর্ভোগ। গর্ভবতি (প্রসুতি মা) মহিলাকে নিয়ে হাসপাতালে যেতে মানুষকে পড়তে হয়েছে মহা বিড়াম্বনায়। রোগী নিয়ে মানুষকে ঘাটে এসে নৌকার জন্য বসে থাকতে হয়েছে ঘন্টার পর ঘন্টা। বর্ষা আর বন্যার সময় দুর্ভোগের শেষ থাকতো না। আজ সেই দুর্ভোগের লাঘব হয়েছে’।
দেবীনগর ইউনিয়নের দানেশ আলী বলেন, ‘ শেখ হাসিনা আমাদের ব্রীজ করে দেয়ার কথা দিয়েছিলেন। তিনি কথা রেখেছেন, ব্রীজও করে দিয়েছেন। এই ব্রীজ শেখ হাসিনার নামে হওয়ায় আমরা বেজায় খুশি’।
চরবাগডাঙ্গা ইউনিয়নের রফিকুল ইসলাম বুলবুল বললেন, ‘ আগে বাজার আসা ( জেলা সদরে আসা) মানেই ছিল পায়ে হেটে যাত্রা করা। চরাঞ্চলে যান্ত্রিক যান। কল্পনায় ছিল না চরাঞ্চরের মানুষদের। এখন তারা বাস, অটো, টেম্পোতে করে সহজেই চলে আসছে বাজারে’।
চাঁপাইনবাবগঞ্জ পৌর এলাকার অদূরে নামোশংকরবাটির এলাকার সাহেবের ঘাটে এই সেতু নির্মিত হওয়ায় সড়ক যোগাযোগ সুবিধার পাশাপাশি সেতু সংলগ্ন এলাকার জমির দাম বেড়েছে বহুগুন।
সেতু পার্শ্ববর্তী পোল্লাডাঙ্গা গ্রামের আব্দুল হান্নান বলেন, আগে ওই এলাকার মাটি বলা যায় পানির দামে বিক্রি হতো। সেতু এলাকার বসত মাটি আগে যেগুলো বিক্রি হতে ৫০ হাজার থেকে ১ লাখ টাকা দরে। সেই মাটির দাম এখন ৩ থেকে ৪ লাখ টাকা কাঠা। আর আবাদি জমি বা ভেতরে দিকের মাটি যেগুলো বিক্রি হতো দু’ থেকে আড়াই লাখ টাকা বিঘা দরে তা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৬ থেকে ৭ লাখ টাকায়।
তিনি জানান, জমির দাম বেড়েছে তিন থেকে চারগুন।
চরাঞ্চলের সাধারণ মানুষ জানিয়েছে, নতুন এই সেতু খুলে দিল চাঁপাইনবাবগঞ্জের চরাঞ্চলের লক্ষ লক্ষ মানুষের বহু কাংখিত স্বপ্নের সড়ক যোগাযোগের দ্বার।

চাঁপাইনবাবগঞ্জ নিউজ/ নিজস্ব প্রতিবেদক/ ১৬-০৫-১৫