৭০-৮০ কিলোমিটার বেগের হটাৎ কালবৈশাখী ঝড় > নয়ানশুকায় গাছ চাপায় এক ছাত্র নিহত > ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি

চাঁপাইনবাবগঞ্জের উপর দিয়ে শনিবার বিকেলের বয়ে যাওয়া কালবৈশাখী ঝড়ে জেলার বিভিন্ন এলাকার ব্যাপক গাছপালা, বাড়িঘর ও টিনের চালার স্থাপনা লন্ডভন্ড হয়ে গেছে। ঝড়ে চাঁপাইনবাবগঞ্জ পৌর এলাকার নযানশুকায় গাছ চাপায় এক কলেজ ছাত্র নিহত হয়েছে। দিন পেরিয়ে রোববার চাঁপাইনবাবগঞ্জের বিভিন্ন এলাকা থেকে ব্যপক ক্ষয়ক্ষতির খবর পাওয়া গেছে। ঝড়ে জেলাজুড়ে বন্ধ হয়ে যাওয়া বিদ্যুৎ সরবরাহ এখনও বিপর্যসস্তই রয়েছে। কিছু কিছু এলাকায় ধীরে ধীরে বিদ্যুৎ সরবরাহ চালু করা হচ্ছে।
চাঁপাইনবাবগঞ্জ পৌর এলাকার নয়ানশুকার বাসিন্দা আব্দুল হান্নান মাষ্টার জানান, ঝড়ের সময় নয়ানশুকা ঘোষপাড়া গ্রামের তৈমুর রহমানের ছেলে কলেজ ছাত্র আব্দুল্লাহ আল মামুন (২২) গাছ চাপা পড়ে নিহত হয়েছে। মামুন সাইকেল যোগে নয়াগোলা এলাকা থেকে বড়ি ফিরছিল। বাড়ির মাত্র ১শ গজ দূরে পৌছলে একটা নিমের গাছ তার উপর পড়ে যায়। পরে স্থানীয়া গাছের নিচে সাইকেল পড়ে থাকতে দেখে এগিয়ে গেলে মামুনকে দেখতে পায়। তাকে উদ্ধার করে হাসপাতালে নেয়ার পথে সে মারা যায়। রোববার তাকে স্থানীয় গোরস্থানে দাফন করা হয়েছে।
এদিকে আমাদের প্রতিবেদক আসাদুল্লাহ জানান, বিদ্যুৎ ব্যবস্থা ভেঙ্গে পড়ায় শহরের পানি সরবরাহ অনেকটাই বন্ধ হয়ে গেছে। ফলে চরম ভোগান্তির মধ্যে পড়েছে পৌর নাগরিকরা। পৌর এলাকার মানুষদের দূরদরান্ত থেকে টিউবয়েলের পানি সংগ্রহ করতে দেখা গেছে।
পৌর এলাকার মহাডাঙ্গা থেকে স্থানীয় সোহেল রানা চাঁপাইনবাবগঞ্জ নিউজ ডটকমকে জানিয়েছেন,   মহাডাঙ্গা এলাকায় কাঁচা ঘরবাড়ি বিদ্ধস্ত হওয়ার পাশাপাশি ওই এলাকার ব্যাপক ধানি জমি ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে।
বিভিন্ন চাষীরা জানিয়েছে, ঝড়ে চাঁপাইনবাবগঞ্জের প্রধান অর্থকরি ফসল আমসহ ধানিজমির ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। তবে রোববার দুপুরে চাঁপাইনবাবগঞ্জ কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক জানান, ঝড়ে ধানি জমির তেমন ক্ষতি হয়নি। আমের যে ক্ষতি হয়েছে তাতেও তাদের উৎপাদনের লক্ষমাত্রায় প্রভাব ফেলবেনা। এবার ব্যাপক পরিমাণ আম আসায় কাঙখিত উৎপাদন পাওয়া যাবে।
এদিকে, রোববার সকাল থেকে বিভিন্ন এলাকায় ঝড়ে বিদ্ধস্থ বাড়িঘর ও স্থাপনা মেরামত করতে সাধারণ মানুষকে ব্যস্ত সময় পার করতে দেখা গেছে।
আগেই জানানো হয়েছে, শনিবার বিকেল পৌনে ৫টার দিকে হটাৎকরে ঝড় শুরু হয়। বিমান চলাচলের মত শব্দ করে হটাৎ শুরু হওয়া ঝড় আঘাত হানে একের পর এক জনপদে। এতে চাঁঁপাইনবাবগঞ্জ শহরের পোল্লাডাঙ্গা, আজাইপুর, শিবতলা, বটতলাহাট, রাজারামপুর, হরিপুর, দারিয়াপুর, হরিপুর এলাকাসহ বিভিন্ন এলাকার বহু আমগাছসহ অন্যান্য গাছপালা উপড়ে পড়ে। স্থানীয় সূত্রগুলো জানিয়েছে, শিবগঞ্জের পাকা, সদররের নারায়ণপুর, মহারাজপুর, বারোঘরিয়া হয়ে চাঁপাইনবাবগঞ্জ শহরের উপর দিয়ে বয়ে যায় কালবৈশাখী ঝড়টি।
চাঁপাইনবাবগঞ্জ শহরের বেশ কয়েকজন নাগরিকের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, গেল একযুগের মধ্যে এমন গতিবেগের ঝড় তারা দেখেনি। এদিকে, চাঁপাইনবাবগঞ্জে আবহাওয়া অফিস না থাকায় ঝড়ের গতি সর্ম্পকে কোন তথ্য পাওযা যায়নি। তবে কৃষি বিভাগের একজন কর্মকর্তা জানিয়েছেন, ঝড়ের গতি ঘন্টা ৭০ থেকে ৮০ কিলোমিটার বেগে ছিল বলে তার ধারণা। তিনি জানান, ঝড়ে গতি ৬০ কিলোমিটারের নিচে থাকলে ডালপালা ভাঙ্গবেনা। যেহেতু প্রচুর ডালাপালা ভেঙ্গেছে এবং গাছাপালা উপড়ে পড়েছে সেহেত গতি ছিল ব্যাপক।

চাঁপাইনবাগঞ্জ নিউজ/ নিজস্ব প্রতিবেদক/ ০৫-০৪-১৫