পেট্রোল বোমা মেরে মানুষ হত্যাকারীদের আইনে সোপার্দ না করা পর্যন্ত যৌথ অপারেশন চলবে-বিজিবি মহাপরিচালক

বর্ডার গার্ড বাংলাদেশে (বিজিবি)’র মহাপরিচালক মেজর জেনারেল আজিজ আহমেদ বলেছেন, গত জানুয়ারি মাস থেকে দেশে যে একটি অস্বস্থিকর পরিস্থিতি সৃষ্টির পায়তারা করা হচ্ছিল। যেভাবে বাসের উপর, ট্রাকের উপর পেট্রোল বোমা মেরে জানমালের ক্ষতি করা হচ্ছিল।  সেই পরিস্থিতিতে বেসামরিক প্রশাসন ও আইন শৃংখলা রক্ষা বাহিনীর সঙ্গে বিজিবি একযোগে জনগনের জানমালের নিরাপত্তার জন্য নিরলসভাবে কাজ করেছে। তিনি বুধবার সন্ধ্যায় চাঁপাইনবাবগঞ্জে বিজিবি’র ৯ ব্যাটালিয়নের স্থানীয় গণমাধ্যম কর্মীদের সঙ্গে মতবিনিময়কালে এ কথা বলেন।  
তিনি বলেন, অস্থিতিশীল পরিস্থিতি সৃষ্টির ঘটনাগুলি যদি আমার জেলা ভিত্তিক চিন্তা করি তার মধ্যে চাঁপাইনবাবগঞ্জে অন্যান্য জেলার তুলনায় বেশি ঘটেছে। তিনি বলেন, দেশে বহু আগে থেকেই হরতাল-অবরোধের কার্যকারিতা নষ্ট হয়ে গেছে। তবুও ক’দিন আগে গণমাধ্যমের মাধ্যমে জানতে পারলাম দেশে আর কোন অবরোধ নেই।  তিনি দাবি করেন, বর্তমানে দেশের অবস্থা অনেকটাই স্বাভাবিক।
তিনি বলেন, যেসব দুস্কৃতকারীরা এবং সন্ত্রাসীরা বাসে, ট্রাকে পেট্রোল বোমা দিয়ে মানুষ হত্যা করেছে। পেট্রোল বোমা মেরে যারা মানুষের জীবনটাকে বরবাদ করে দিয়েছে। পেট্রোল বোমায় দগ্ধ হয়ে মানুষ অসহনীয় যন্ত্রণায় ছটপট করছে। এ সমস্ত কাজে যারা জড়িত ছিল তাদের তালিকা তৈরী হয়েছে। আমাদের জানা আছে কারা এই সব করেছে। ওই সব সন্ত্রাসীদের ধরে আইনের কাছে সোপার্দ করা হবে। তাদের আইনের কাজে সোপার্দ না করা পর্যন্ত দেশে যৌথ বাহিনীর অপারেশন অব্যাহত থাকবে এবং যতদিন বেসামরিক প্রশাসন এই অপারেশনে বিজিবি’র সহযোগিতা চাইবে ততদিন বিজিবি সহযোগিতা করে যাবে। 
তিনি বলেন, এ সমস্ত নৃশংস কাজ যারা করেছে আমার মতে তাদের কোন দলীয় পরিচয় হতে পারেনা। তাদের কর্মকান্ড বলে দেল, তারা সন্ত্রাসী। আর কোন সন্ত্রাসী কোন দলের হতে পারেনা। সন্ত্রাসী সন্ত্রাসীই। সন্ত্রাসীদের কোনভাবে ছাড় দেয়া যাবেনা। সন্ত্রাসীদের লিস্ট ধরে ধরে আইনে সোপার্দ করা হবে। তবে, এ অভিযানে কোন নিরাপরাধ ব্যক্তি যাতে হয়রানী না হয় সে ব্যাপারে বিজিবিকে নিদের্শনা দেয়া রয়েছে। 
সীমান্ত হত্যা প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘কোন হত্যায় কাম্য নায়। অবৈধভাবে সীমান্ত অতিক্রম করে ভারতের অভ্যন্তরে প্রবেশের ফলে দূর্ঘটনা গুলি সংঘটিত হয়েছে। সীমান্ত হত্যার ব্যাপারে আমরা কড়া প্রতিবাদ করছি। এ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ভারত হতে গরু কম আসলে আমাদের কৃষকরা তাদের গরুর ন্যায্য মূল্য পাবে। এতে করে আমাদের দেশে গরু ফার্ম এর ব্যবসায়ীরা লাভবান হবে এবং ফার্ম ব্যবসায় উৎসাহী হবে। তিনি সীমান্তের জনসাধারণকে সীমান্ত অতিক্রম না করার জন্য অনুরোধ জানান। 
ফেন্সিডিল কারখানা/গোডাউন প্রসংগে। ভারতের অভ্যন্তরে ফেন্সিডিল কারখানার বিষয়ে সাংবাদিকরা মহাপরিচালকের নিকট জানতে চাইলে মহাপরিচালক মহোদয় বলেন আমরা বিভিন্ন সম্মেলনের সময় ফেন্সিডিল গোডাউনের তালিকা বিএসএফ এর নিকট হস্তান্তর করি। সে তালিকা মোতাবেক কিছু কিছু গোডাউন তারা ধ্বংস করেছে। গোডাউন গুলি মূলত অস্থায়ীভাবে তৈরী করা হয়ে থাকে। ফলে এক স্থানে তৈরী করা গোডাউন ভেঙ্গে ফেলা হলেও অন্য স্থানে পুনরায় গোডাউন তৈরী করা হয়ে থাকে। 
মতবিনিময় সভায় অন্যান্যের মাঝে উপস্থিত ছিলেন, রিজিওনাল কমান্ডার রংপুর ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মাহফুজুর রহমান, রাজশাহী সেক্টর কমান্ডার কর্ণেল ফেরদাউসুল সাহাব, ৯’বিজিবি ব্যাটালিয়নের অধিনায়ক লে. কর্ণেল আবু জাফর শেখ মোহাম্মদ বজলুল হক পিএসসি সহ উর্ধতন কর্মকর্তাগন। 
চাঁপাইনবাবগঞ্জ নিউজ/ নিজস্ব প্রতিবেদক/ ১৫-০৪-১৫