শহরের সাত ভবনের নিচে ঝুঁকির সঙ্গে বসবাস

চাঁপাইনবাবগঞ্জ পৌর এলাকার ৭টি ঝুঁকিপূর্ন ভবন নিয়ে বেকায়দায় পড়েছে পৌরসভা কর্তৃপক্ষ। দীর্ঘদিন আগে এসব ভবনগুলোকে পরিত্যক্ত ঘোষনা করা হলেও তা অপসারণ করছেনা ভবন মালিকরা। এতে করে ওই ভবনগুলোতে চরম ঝুঁকি নিয়ে বসবাস করছেন ব্যবসায়ীসহ সাধারণ মানুষ।
সংশ্লিষ্টরা জানিয়েছে, ২০১৩ সালে ঢাকার সাভারে আলোচিত রানা প¬াজা ধ্বসের পর চাঁপাইনবাবগঞ্জ পৌর এলাকার ৭টি ভবনকে ঝুঁকিপূর্ন হিসেবে চিন্থিত করে পৌরসভা। এরপর এসব ভবনকে পরিত্যাক্ত ঘোষনা করে তা ভেঙ্গে ফেলতে ভবন মালিকদের নির্দেশ দেয় পৌর কর্তৃপক্ষ। এমনকি কয়েকটি ভবনে ঝঁকিপূর্ন ভবনের সাইনবোর্ড টাঙ্গিয়ে দেয়া হয়। কিন্তু প্রায় ২ বছর অতিবাহিত হতে চললেও ঘুম ভাঙ্গেনি ভবন মালিকদের। এখন পর্যন্ত একটি ভবনও ভেঙ্গে ফেলেনি ভবন মালিকরা।
এমন একটি ঝুঁকিপূর্ন ভবন হলো পুরাতন বাজারের মসজিদ সংলগ্ন এলাকায়। প্রায় ২ বছর আগে পৌর কর্তৃপক্ষ ভবনটিকে পরিত্যাক্ত ঘোষনা করে সাইনবোর্ড টাঙ্গিয়ে দেয়। এর পর দফায় দফায় ভবনটিকে ভেঙ্গে ফেলতে মালিককে তাগাদা দেয়া হলেও তা বাস্তাবায়িত হয়নি। এই ভবনের নীচে অন্তত ৫/৬ টি দোকান রয়েছে। চরম ঝুঁকি নিয়ে এখানে ব্যবসা পরিচালনা করছেন ব্যবসায়ীরা। এই ভবনের নীচতলার ব্যবসায়ী এমরান হোসেন জানান, ভবনের ইট-সুরকি খুলে পড়ায় তারা মারাত্মক আতঙ্কের মধ্যে দিন কাটাচ্ছেন। বিষয়টি নিয়ে ভবনের মালিক সাইদুর রহমান নজরুলের সঙ্গে একাধিকবার কথা বলেও কোন ফল পাননি। বরং ভবন থেকে উচ্ছেদের জন্য উল্টো তাদের
বিরুদ্ধেই আদালতে মামলা করেছেন ভবন মালিক। আরেক ব্যবসায়ী শহিদুল ইসলাম বলেন নতুন ভবন নির্মানের জন্য প্রায় ১০ বছর আগে চাঁপাইনবাবগঞ্জ চেম্বার অব কমার্স এন্ড ইন্ডাষ্ট্রির মাধ্যমে ভবনের মালিক সাইদুর রহমান নজরুলকে টাকা দিয়েছেন তারা। কিন্তুএখন পর্যন্ত ভবনটি ভেঙ্গে নতুন করে নির্মানের কোন উদ্যোগ নিচ্ছেননা তিনি। এতে করে প্রতিদিন জীবনের ঝুঁকি নিয়ে ব্যবসা করছেন তারা। একই ভবনের ব্যবসায়ী মনিরুল ইসলাম জানান, পৌর আইনের কোন তোয়াক্কায় করছেনা ভবন মালিক। বার বার সার সঙ্গে কথা বলেও কোন ফল পাওয়া যাচ্ছেনা। বিষয়টি নিয়ে চাঁপাইনবাবগঞ্জ পৌরসভার সহকারী প্রকৌশলী রোকনুজ্জামানের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি জানান, সদর ঘাটের ওই ভবনটিকে অনেক আগেই পরিত্যাক্ত ঘোষনা করা হয়েছে। কিন্তু ওই ভবনের ভাড়াটিয়াদের সঙ্গে মালিকের মামলা থাকায় ভবনটি ভাঙ্গা যাচ্ছেনা।
চাঁপাইনবাবগঞ্জ পৌরসভার মেয়র মাওলানা আবদুল মতিন জানান, ঝুঁকিপূর্ন ভবনগুলো ভেঙ্গে ফেলার বিষয়ে ইতোমধ্যেই স্থানীয় প্রশাসনকে জানানো হয়েছে। আইনী জটিলতা কাটিয়ে যত দ্রুত সম্ভব ঝুঁকি পূর্ণ ভবনগুলোকে ভেঙ্গে ফেলা হবে বলে জানান তিনি।

চাঁপাইনবাবগঞ্জ নিউজ/ মেহেদি হাসান, নিজস্ব প্রতিবেদক/ ১২-০৪-১৫