‘সোয়াইন ফ্লু’ > আধাখেচড়া প্রস্তুতি > সোনামসজিদ বন্দরে স্বাস্থ্য পরীক্ষা শুধুই ‘জিজ্ঞাসাবাদ’ দিয়ে

প্রতিবেশী দেশ ভারতে সোয়াইন ফ্লু ছড়িয়ে পড়ার প্রেক্ষিতে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের নির্দেশ অনুযায়ী চাঁপাইনবাবগঞ্জের সোনামসজিদ স্থল বন্দরে গেল রোববার থেকে মেডিক্যাল টিম কাজ শুরু করেছে। মন্ত্রাণালয়ের নির্দেশের প্রায় ৪ দিন পর বন্দরে মেডিক্যাল টিম কাজ শুরু করলেও ভারত থেকে আসা মানুষদের স্বাস্থ্য পরীক্ষা করা হচ্ছে শুধু মাত্র জিজ্ঞাসাবাদের মধ্য দিয়ে। সোয়াইন ফ্লু পরীক্ষার যথাযথ মেডিক্যাল ইকুইপমেন্ট ছাড়াই কাজ করছে তিন সদস্যের মেডিক্যাল টিম। 
চাঁপাইনবাবগঞ্জ সিভিল সার্জন অফিস সূত্র জানিয়েছে, স্বাস্থ্য মন্ত্রণালযের নির্দেশের পর গেল বৃহস্পতিবার চাঁপাইনবাবগঞ্জ সিভিল সার্জন অফিস সোনামসজিদ স্থল বন্দরে ১ জন চিকিৎসক, ১ জন স্বাস্থ্য সহকারী ও ১ জন পিয়নের সমন্বয়ে ৩ সদস্যের মেডিক্যাল টিম গঠনের জন্য শিবগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কর্মকর্তাকে নির্দেশ দেয়া হয়। সিভিল সার্জন অফিসের এই নির্দেশনাই বাস্তবায়ন হতে সময় লাগে ৩ দিন। মেডিক্যাল টিম গঠন করা হয় রোববার। এরই মধ্যে সোনামসজিদ স্থল বন্দর দিয়ে ভারত থেকে প্রায় আড়াই শ জন মানুষ বাংলাদেশে ঢোকে কোন রকমের স্থাস্থ্য পরীক্ষা ছাড়াই। 
সোমসজিদ স্থল বন্দরের সহকারি কমিশনার নুরুল বাশির জানান, সোনামসজিদ স্থল বন্দর দিয়ে গত শুক্রবার ভারতে গেছেন ১ শ ১৫ জন, এসেছেন ৮৮ জন, শনিবার গেছেন ৭১ জন, এসেছেন ৭৬ জন, রোববার গেছেন ৪৮ জন, এসেছেন ৭৫ জন, সোমবার গেছেন ৯০ জন, এসেছেন ৫৫ জন।
বন্দর ও স্বাস্থ্য বিভাগ সূত্র জানিয়েছে, সোনামসজিদ স্থল বন্দরের ইমিগ্রেশন পয়েন্টে রোববার থেকে কাজ করা মেডিক্যাল টিমকে দায়িত্ব পালন করতে দেখা গেছে দায়সারাভাবে। মেডিক্যাল টিমের কাছে সোয়াইন ফ্লু পরীক্ষার যথাযথ যন্ত্রাংশই নেই। সোয়াইন ফ্লু পরীক্ষার অন্যতম যন্ত্রাংশ ‘থার্মাল স্ক্যানার’ সরবরাহ হয়নি। তাই শুধু জিজ্ঞাসাবাদের মধ্যেই সীমাবদ্ধ আছে ‘সোয়াইন ফ্লু’ সংক্রান্ত স্বাস্থ্য পরীক্ষা। 
এ ব্যাপারে শিবগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কর্মকর্তা আব্দুর রহমানের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, ‘ রোববার থেকে আমরা কাজ শুরু করেছি। সিভিল সার্জন অফিসের নির্দেশনা আমাদেও হাতে এসে পৌছলে যেহেতু চিকিৎসকার স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে কাজ করেন। তাই চিকিৎসকদের মধ্যে সমন্বয় করে টিম গঠনে একটু বিলম্ব হয়েছে’। তিনি বলেন, ‘মেডিক্যাল টিম গঠন করে কাজ শুরুর নির্দেশনা আসলেও সোয়াইন ফ্লু পরীক্ষার কোন উপকরণ আসেনি’। 
সোনামসজিদ স্থল বন্দরে মেডিক্যাল টিমে কাজ করা চিকিৎসক তৌফিক ই এলাহী জানান, রোববার ভারত থেকে আসা মানুষদের মধ্যে ৪০ জনের ‘স্বাস্থ্য পরীক্ষা’ করা হয়েছে। তিনি বলেন, ‘ মুলত ভারত থেকে আসা ওই সব মানুষদের জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়েছে জ্বর, সর্দি, কাশি আছে কিনা। ওই ৪০ জনের এমন উপসর্গ পাওয়া যায়নি। সোমবার মেডিক্যাল টিমের প্রধান হিসেবে কাজ করেছেন ডা. রেজাউর রহমান। তিনি বলেন, বিকেল পর্যান্ত প্রায় ৪৫ জনকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়েছে। তবে, আজও (সোমবারও) তেমন উপস্বর্গের কোন রোগী পাওয়া যায়নি। তিনি বলেন, ‘কোন রোগী স্বাস্থ্য নিয়ে সন্দেহ হলে তাকে ডিজিটাল থার্মোমিটার ও টর্চ লাইট দিয়ে পরীক্ষা করা হচ্ছে’।  
চাঁপাইনবাবগঞ্জের সিভিল সার্জন ডা. আলাউদ্দীনের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, আমরা গেল বৃহস্পতিবার মেডিক্যাল টিম গঠনের নির্দেশ দিয়েছি। একটু দেরীতে হলেও কাজ শুরু হয়েছে। এখন পর্যন্ত তেমন রোগীর সন্ধান মেলেনি। তেমন রোগী পাওয়া গেলে চাঁপাইনবাবগঞ্জ সদর হাসপাতালে খোলা আইসুলেশন ওয়ার্ডে ভর্তি করার নির্দেশ দেয়া আছে। তিনি বলেন, সদর হাসপতালে আপাতত ২ বেডের ওই ইউনিট খোলা হয়েছে। পরে সেটিকে ৪ বেডে উন্নিত করা হবে। অন্য হাসপাতালে এমন ইউনিট খোলা হয়েছে কিনা এমন প্রশ্নের জবানে তিনি জানান, শুধুমাত্র সদর হাসাপাতালেই ব্যবস্থা রাখা হয়েছে।
‘আমাদের পর্যাপ্ত প্রস্তুতি রয়েছে, ‘সোয়াইন ফ্লু’ প্রতিরোধে কোন সমস্যা হবে না’ বলে তিনি মন্তব্য করেন। 


চাঁপাইনবাবগঞ্জ নিউজ/ নিজস্ব প্রতিবেদক/ ০২-০৩-১৫