১২ বছরেও এমপিওভুক্ত হয়নি শিবগঞ্জের পুখুরিয়া মহিলা কলেজ

দীর্ঘ ১২ বছর পার হলেও এমপিওভুক্ত হয়নি চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলার শিবগঞ্জের পুখুরিয়া মহিলা কলেজ। দীর্ঘ বার বছর ধরে বেতন-ভাতা না পেয়ে মানবেতর জীবন-যাপন করছেন এই কলেজের শিক্ষক-কর্মচারীরা। এঅবস্থা চলতে থাকলে একদিন হয়তো বন্ধ হয়ে যাবে এই কলেজটি। বঞ্চিত হবে অবহেলিত জনপদের শিক্ষার্থীরা। সরকারের উন্নয়নে দুর্গম চরাঞ্চলের মানুষ আশার আলো দেখছে, কিন্তু ১২ বছর ধরে প্রতিষ্ঠিত হওয়া কলেজটি ২৫জন শিক্ষক-কর্মচারীদের দৈন্য দশায় দিশেহারা এলাকার অভিভাবকরা। স্থানীয় ও কলেজ সুত্রে জানা গেছে, চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলার শিবগঞ্জের পুখুরিয়ায় ২০০২ সালে এই মহিলা কলেজটি স্থাপিত হয়। অত্র প্রতিষ্ঠানে পড়াশোনা করে দেশের বিভিন্ন কলেজ বিশ্ববিদ্যালয়ে অধ্যায়ন করছেন অনেক শিক্ষার্থী। এর পর ২০০৫ সালে শিক্ষা মন্ত্রণালয় ও রাজশাহী শিক্ষা বোর্ড হতে একাডেমিক স্বীকৃতি লাভ করে। এই কলেজটি প্রতিষ্ঠাকাল থেকে শিক্ষার্থীদের উন্নতমানে পাঠ দান দিয়ে ফলাফলের শীর্ষ স্থান লাভ করে উপজেলাবাসির দৃষ্টি আকর্ষন করে। উন্নতমানের পাঠদান দিয়ে ভাল ফলাফলের ধারাবাহিকতায় ২০১২, ২০১৩ ও ২০১৪ সালে শিবগঞ্জ উপজেলার ১৯টি কলেজ-মাদ্রাসার মধ্য থেকে শীর্ষ স্থানে রয়েছে। কলেজটি সরজমিনে পরিদর্শন করে দেখা গেছে, এবার এইচ.এস.সি পরীক্ষায় অংশ নিবে ২’শ ৯৪জন শিক্ষার্থী। তাদের সুষ্ঠু ও নির্বিঘেœ পরীক্ষায় অংশ নেয়ার জন্য সপ্তাহে তিনদিন মডেল সেস্ট পরীক্ষা নিচ্ছে কলেজের শিক্ষকগন। আর যাদের শিক্ষায় শিক্ষিত হয়ে মাধ্যমিকের গন্ডি পেরিয়েছে শত শত শিক্ষার্থী, তাদেরই হয়নি এখন পর্যন্ত কোন বেতন-ভাতার সু-ব্যবস্থা। আর বেতন-ভাতা না পাওয়ায় মানবেতর জীবনযাপন করতে হচ্ছে কলেজটির ২৫জন শিক্ষক-কর্মচারিকে। এতে শিক্ষক-কর্মচারিদের পরিবারের সদস্যরাও কষ্ট পাচ্ছে অর্থাভাবে। এমনকি সংসার চালাতে হিমসীম খেয়ে মহান শিক্ষকতা পেশায় নিয়োজিত থাকার পরও ক্লাস নেওয়ার পাশাপাশি কৃষিসহ বিভিন্ন কাজ করে জিবীকা নির্বাহ করতে হচ্ছে। এবিষয়ে কলেজের ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি ও চাঁপাইনবাবগঞ্জ-১ আসনের সংসদ সদস্য গোলাম রাব্বানী জানান, পুখুরিয়া মহিলা কলেজটি দীর্ঘ ১২ বছরে এমপিও হয়নি। এমপিও না হওয়ায় অত্র কলেজের ২৫জন শিক্ষক-কর্মচারি বেতন না পাওয়া মানবেতর জীবন-যাপন করছে। তারপরেও অত্র কলেজের অধ্যানয়রত শিক্ষার্থীদের পাঠদান বহাল রেখেছে। তাদের অক্লান্ত পরিশ্রম দেখে আমি মর্মাহত। আমি চাই এই কলেজটি এমপিও হোক। তাই, আমি এই কলেজটি এমপিও করার ব্যাপারে জাতীয় সংসদে প্রস্তাব করেছি। যতদ্রুত সম্ভব এ কলেজটি এমপিওভুক্ত হবে। তিনি আরো বলেন, সরকার শিবগঞ্জের কোন কোন শিক্ষা প্রতিষ্ঠান অর্থাৎ কলেজ-মাদ্রাসা যদি এমপিও করেন তাহলে আগে পুখুরিয়া মহিলা কলেজটি এমপিও হবে। এটি আমার দৃঢ় প্রত্যাশা। কারণ, আমার জন্ম পুখুরিয়ার মাটিতে। আমি আমার প্রচেষ্টায় এই কলেজটি এমপিওকরণ করবো ইনশাল্লাহ। উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার মীর মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, উপজেলার যেসব শিক্ষা প্রতিষ্ঠান এমপিও হয়েছে তা দুই বছর আগে। এরপর আর কোন স্কুল-কলেজ-মাদ্রাসা এমপিও হয়নি। তাছাড়া এমপিও বিষয়ে উপজেলার শিক্ষা অফিসের তেমন কোন হাত নেই। তবে, জেলা শিক্ষা অফিস যদি উপজেলা শিক্ষা অফিসকে কোন শিক্ষা প্রতিষ্ঠান এমপিও জন্য তদন্ত করার নিদের্শ দেয় তাহলে উপজেলা শিক্ষা অফিস তা তদন্ত সাপেক্ষে একটি প্রতিবেদন দিয়ে থাকে।

চাঁপাইনবাবগঞ্জ নিউজ/ নিজস্ব প্রতিবেদক/ ০৯-০৩-১৫