আসামী ধরার অভিযানে পুলিশের উপর ককটেল হামলা ॥ গুলিবিদ্ধ হয়ে ধরা পড়লো আরিফ হত্যা মালার প্রধান আসামী (ভিডিওসহ)

চাঁপাইনবাবগঞ্জ শহরের ফুলকুড়ি ইসলামী একাডেমির পেছনে দুর্বৃত্তদের ধারালো অস্ত্রের কোপে নিহত শিবির কর্মী আরিফ হত্যা মামলার আসামী ধরতে গিয়ে শুক্রবার পুলিশের সঙ্গে শিবতলা এলাকায় শিবিরের সংঘর্ষ হয়েছে। এতে ককলেট হামলায় পুলিশের তিন সদস্য আহত ও হত্যা মালার প্রধান আসামী গুলিবিদ্ধ হয়েছে।
গুলিবিদ্ধ হয়ে পুলিশের হাতে ধরা পরা আসামীর নাম জীবন (১৮)। সে চাঁপাইনবাবগঞ্জ পৌর এলাকার শিবতলা নতুনপাড়ার কাউসার আলীর ছেলে।
চাঁপাইনবাবগঞ্জ সদর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) গোলাম মোর্তুজা জানান, বৃহস্পতিবার ফুলকুড়ি ইসলামি একাডেমির পেছনে নিহত আরিফুল ইসলালের হত্যাকারী শিবির কর্মীরা শিবতলা প্রাথমিক বিদ্যালয়ের গলিতে অবস্থান করছে এমন গোপন সংবাদের ভিত্তিতে পুলিশের একটি দল বেলা ১১টার দিকে অভিযান চালায়। এ সময় হত্যা মামলার আসামীরা পুলিশের উপস্থিতি টের পেয়ে পুলিশকে লক্ষ্য করে দু’টি ককটেল নিক্ষেপ করে। পুলিশও পাল্টা চার রাউন্ড শটগানের গুলি ছোড়ে। এতে মামলার প্রধান আসামী জীবন পায়ে গুলি বিদ্ধ হয়ে আহত হয়। তার ডান পায়ের নিচের অংশে গুলি লাগে। তাকে সদর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। আসামীদের ককটেল হামলায় পুলিশের এসআই মনির হোসেন ও কন্সটেবল রাশেদুজামান ও বাবুল আহত হয়। এ সময় অন্যান্য শিবির কর্মীরা পালিয়ে যায়।
ওসি জানান, নিহত আরিফের ভাই বৃহস্পতিবার রাতে ১৭ জনের নাম উল্লেখ করে এবং অজ্ঞাত আরো ১০/১২ জনকে আসামী করে একটি হত্যা মামলা দায়ের করে। এ মামলায় শিবির কর্মী রেহায়চার আদর্শপাড়ার দানেশ আলীর ছেলে জুয়েল (২৪) ও তার ভাই সোহেল রানা (২২) কে আটক করা হয়। এরপরই শিবতলায় অভিযান পরিচালনা করা করা হয়। তিনি জানান, শিবগতলা থেকে একটি তাজা ককটেলসহ গুলিবিদ্ধ জীবনকে গ্রেফতার করা হয়েছে।
গ্রেফতারকৃতরা শিবিরের সঙ্গে যুক্ত দাবি করে ওসি গোলাম মোর্তুজা বলেন, ‘ গ্রেফতার হওয়া তিনজনই শিবিরের স্বক্রিয় কর্মী।এদের মধ্যে জীবন শিবিরের কর্মী হিসেবে কাজ করার পাশাপাশি ভাড়াটিয়া সন্ত্রাসী হিসেবেও কাজ করে বলে প্রাথমিকভাবে জানা গেছে’।
মামলার এজাহারের বরাদ দিয়ে ওসি জানান, গ্রেফতারকৃতরা নিহত আরিফেরই সহযোগী। তাদের অভ্যন্তরিণ দ্বন্দের কারণেই আরিফকে হত্যা করা হয়েছে।
আরিফ শিবির থেকে নিস্ক্রিয় হয়ে যাওয়ায় জামায়াত শিবিরের জেলা ও থানা পর্যায়ের নেতারা ক্ষুব্ধ ছিল বলে আরিফের ভাই মাসুদ রানার বাদিত্বে দায়ের করা মামলার এজাহারে বলা রয়েছে বলে ওসি জানিয়েছেন।
এদিকে, রাতে চাঁপাইনবাবগঞ্জ শিবিরের প্রচার সম্পাদক শহিদুল ইসলামের পাঠানো এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে গুলিবিদ্ধ জীবনের সঙ্গে শিবিরের কোন সর্ম্পক নেই বলে জানানো হয়েছে। সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, ‘গ্রেফতারকৃত জীবন এর সাথে বাংলাদেশ ইসলামী ছাত্রশিবিরের কোন নুন্যতম সম্পর্ক নেই’। ওই সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে আরো বলা হয়, আরিফ হত্যাকে ভিন্ন খাতে প্রবাহিত করার জন্যই ছাত্রশিবিরকে জড়ানো হয়েছে।
উল্লেখ্য, চাঁপাইনবাবগঞ্জ পৌর এলাকার রেহায়চর হটাৎপাড়ার রমজান আলীর ছেলে ও চাঁপাইনবাবগঞ্জ সিটি কলেজের প্রথম বর্ষের ছাত্র শিবির কর্মী আরিফুল ইসলাম (১৮) কে বৃহস্পতিবার সকাল সাড়ে ৯টার দিকে মোবাইল ফোনে ডেকে নিয়ে শহরের জামায়াত শিবির অধ্যুষিত এলাকা হিসেবে পরিচিত ফুলকুড়ি ইসলামি একাডেমির পেছনে গলায়, হাতে ও পায়ে এলোপাতাড়ি কুপিয়ে হত্যা করা হয়।


চাঁপাইনবাবগঞ্জ নিউজ/ নিজস্ব প্রতিবেদক/ ১৩-০৩-১৫