বিএনপি’র নিরবতা বিস্ময়কর > দ্যা রিপোর্টকে দেয়া সাক্ষাৎকারে গোলাম আযম পুত্র

১৯৭১ সালে মানবতাবিরোধী অপরাধের দায়ে ৯০ বছরের সাজাপ্রাপ্ত জামায়াতে ইসলামীর সাবেক আমির গোলাম আযমের মৃত্যুতে বিএনপির শোক না জানানো ও জানাজায় শরিক না হওয়াকে স্বাভাবিকভাবে দেখছেন না তার চতুর্থ ছেলে আব্দুল্লাহিল আমান আযমী। দ্য রিপোর্টকে বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে আমান আযমী বলেন, ‘শুধু আমার কাছে নয়, আমার বাবার মৃত্যুতে বিএনপির নীরব ভূমিকা সবার কাছেই বিস্ময়কর মনে হয়েছে।’
তিনি আরও বলেন, এই মুহূর্তে আমি রাজনীতি নিয়ে ভাবছি না। আমি শিক্ষা নিয়েই কাজ করতে চাই।
আব্দুল্লাহিল আমান আযমী একটি অনলাইনে প্রকাশিত নিউজ তার ফেসবুক একাউন্ট থেকে শেয়ার করেছিলেন বুধবার। ‘তারেকের নির্দেশে আযমের জানাযা বর্জন করল বিএনপি’ শিরোনামের প্রতিবেদনটি শেয়ার করে আমান আযমী তার ফেসবুক স্ট্যাটাসে লেখেন, ‘অধ্যাপক গোলাম আযমের মৃত্যুর পর পুরো বিশ্ব শোক করলেও বিএনপির নীরবতায় পুরো জাতি হতাশ। আমি জানি না কেন!’
তিনি আরও লেখেন, “আমার এটা বলতে কোনো দ্বিধা নেই যে, জামায়াতের সমর্থন ছাড়া বিএনপি কখনোই সরকার গঠন করতে পারত না। দুঃখের বিষয়, এই দলের প্রতিষ্ঠাতা আমির এবং আমৃত্যু আধ্যাত্মিক গুরুর মৃত্যুতে তাদের নীরবতা ছিল একেবারেই অপ্রত্যাশিত ও অগ্রহণযোগ্য!”
বিএনপি নেতাদের উদ্দেশে আযমী লেখেন, ‘জামায়াতের সমর্থন ছাড়া তারা ফের ক্ষমতায় যেতে পারবে না—এটা মাথায় রাখলে বিএনপি ভালো করবে। এটা আমার প্রকাশ্য চ্যালেঞ্জ।’
ফেসবুকে নিজের দেওয়া স্ট্যাটাসের ব্যাখ্যায় আব্দুল্লাহিল আমান আযমী বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় একান্ত সাক্ষাৎকারে দ্য রিপোর্টকে বলেন, ‘প্রথমত কথা হলো আমি কোনো রাজনৈতিক দলের লোক নই, আমি কোনো রাজনীতি করি না। সুতরাং এটি কোনো রাজনৈতিক বক্তব্য নয়। গত এক সপ্তাহ থেকে বিভিন্ন মানুষের কাছে প্রশ্নের সম্মুখীন হয়েছি বিএনপি কোনো শোক বার্তা দিয়েছে কিনা, বিএনপির কেউ জানাজায় এসেছে কিনা, আমাদের বাড়িতে কেউ সমবেদনা জানাতে এসেছে কিনা। এ সব সাধারণ মানুষের জিজ্ঞাসা। যারা আমাকে এ সব প্রশ্ন করছে আমি তাদের পাল্টা প্রশ্ন করছি—আপনাদের কাছে কী ব্যাপারটা স্বাভাবিক মনে হয় যে, অধ্যাপক গোলাম আযমের মতো নেতা—যিনি বিশ্বব্যাপী সম্মানিত, তার জন্য বিশ্বব্যাপী হাজারো জায়গায় জানাজা হয়েছে। এমন একটা মানুষের ইন্তেকালে বিএনপি একদম নিঃশব্দ, নিষ্ক্রিয়-আপনাদের কাছে কী স্বাভাবিক মনে হয়? আমার কাছে এটা অস্বাভাবিক মনে হয়েছে। সাধারণ, সচেতন নাগরিক হিসেবে ওই মতামত প্রকাশ করেছি। এর মধ্যে তারেক রহমানের বিষয়ে একটা কথা ছিল। আমি বিশ্বাস করতে চাই না তিনি এটা বলেছেন। আসলে এটা আমি মিডিয়াতে নাও বলতে পারতাম। আমি বলেছি যে, তাদের (বিএনপির) এ নীরবতা বিস্ময়কর। এটা শুধু আমার কাছে নয়, সবার কাছেই বিস্ময়কর। আমি স্ট্যাটাসে আরও একটি বিষয় বলেছি—এটা সবাই জানে যে, ১৯৯১ সালে বিএনপি জামায়াতের সমর্থন নিয়ে সরকার গঠন করেছে। আওয়ামী লীগ তো দু’টা মন্ত্রীত্ব ও ৭টা মহিলা এমপির পদ দিতে চেয়েছিল। কিন্তু জামায়াত আওয়ামী লীগের এ প্রস্তাবে রাজি না হয়ে বিএনপিকে সমর্থন দিয়েছে, তারা মাত্র দুইটা মহিলা এমপি দিয়েছিল। জামায়াতের জন্য তো ওটা (আওয়ামী লীগের প্রস্তাব) লাভবান প্রস্তাব ছিল। জামায়াত তাদের দলীয় লাভ দেখেনি, সঙ্কীর্ণতার মধ্যে আবদ্ধ থাকেনি। দেশের স্বার্থে বিএনপিকে সমর্থন দিয়েছে জামায়াত। ২০০১ সালের নির্বাচনে জামায়াত-বিএনপি এক থাকার কারণেই বিজয়ী হওয়া (সরকার গঠন) সম্ভব হয়েছে। ৯৬-এর ইলেকশনে বিএনপি-জামায়াত পৃথকভাবে ইলেকশন করেছে বিএনপির অবস্থান কিন্তু ভালো হয়নি।’
২০০৮ সালের নির্বাচনে তো বিএনপি-জামায়াত এক থাকা সত্ত্বেও বিজয়ী হতে পারেনি?—এমন প্রশ্নের জবাবে গোলাম আযমপুত্র বলেন, ‘ওই নির্বাচনটা নিয়ে অনেক প্রশ্ন আছে। সময়ই বলে দিবে ওইটার গ্রহণযোগ্যতা কতটুকু। আমার বাবার প্রস্তাবনা অনুযায়ী গঠিত কেয়ারটেকার সরকার ছিল না ওইটা।’
‘আপনার বাবার (গোলাম আযম) মৃত্যুতে বিএনপি শোক জানায়নি আবার সর্বশেষ আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল জামায়াতের আমির মতিউর রহমান নিজামীকে মৃত্যুদণ্ড দেওয়ার পরেও কোনো প্রতিক্রিয়া জানায়নি। এতে জোটের সম্পর্কে অবনতি ঘটবে কিনা?’—এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘জিনিসটা আমার কাছে পরিষ্কার নয় যে, এ ঘটনা জোটে কতটুকু প্রভাব ফেলবে। কারণ জোটের সম্পর্কের ধরন কী আমার কাছে এখনো পরিষ্কার না।’
আযমী বলেন, আমি জামায়াত করি না, আমার সঙ্গে জামায়াতের কোনো সম্পর্ক নেই। আমি এখন পর্যন্ত জামায়াতের ফরম ফিলাপ করিনি। আমি ওনাদের (জামায়াত নেতাদের) ছোটবেলা থেকে দেখেছি। বাবার এখানে ওনারা আসতেন, এ জন্য তাদের সঙ্গে দেখা সাক্ষাৎ হয়েছে। আমার বাবার বিষয়ে আইনগতভাবে ওনারা যথেষ্ট সহযোগিতা করেছেন, জানাজা, দাফন-কাফনে সহযোগিতা করেছেন। এ জন্য পারস্পরিক সম্পর্ক-পরিচিতি আছে। কিন্তু আবারও বলছি আমার সঙ্গে জামায়াতের কোনো সম্পর্ক নেই। আমি এই মুহূর্তে রাজনীতি করার চিন্তা করছি না।’

ভবিষ্যতে রাজনীতি করবেন কিনা?— এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘সেটা ভবিষ্যতে চিন্তা করে দেখব। আমার কাছে দেশের মূল সমস্যা রাজনীতি নয়। রাজনীতি ইমিডিয়েট একটা সমস্যা হতে পারে। আমার কাছে মূল সমস্যা মনে হচ্ছে দেশের শিক্ষা ব্যবস্থা। বর্তমান শিক্ষা ব্যবস্থা দেশপ্রেমিক নাগরিক গড়ে তুলছে না। আর এ জন্যই আজকে আমাদের এত অপসংস্কৃতি, এ জন্যই আজকে আমাদের এ অসুস্থ রাজনীতি। এটাকে আমূল পরিবর্তন করতে হলে আমাদের শিক্ষিত দেশপ্রেমিক গড়ে তুলতে হবে। একজন শিক্ষিত সুনাগরিক দেশপ্রেমিক মানুষ হিসেবে গড়ে তুলতে কাজ করছি। আর আমি এটা নিয়েই কাজ করছি। সেনাবাহিনীর সর্বশেষ দশ বছর আমি বিভিন্ন ক্যান্টনমেন্ট স্কুল কলেজের সঙ্গে জড়িত ছিলাম। তখনই দেশের শিক্ষা ব্যবস্থার সঙ্গে কাজ করার সুযোগ হয়েছে। ৩০ বছর সামরিক জীবনে আমি দেশ সেবায় কাজ করেছি এবং সিদ্ধান্ত নিয়েছি- যতদিন আল্লাহ হায়াত (জীবন) দিয়েছে শিক্ষা নিয়ে কাজ করব।’
তিনি বলেন, ‘আমি ঢাকা শহরের বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের আড়াই হাজারের মতো শিক্ষককে প্রশিক্ষণ দিয়েছি। আমি মনে করি, যে মোমবাতিতে আলো নাই সে মোমবাতি দিয়ে একশটা মোমবাতিতে আলো জ্বালানো সম্ভব নয়। সুতরাং শিক্ষকরাই হলেন আলোকিত জাতি গড়ার মূল চাবিকাঠি, তাই তাদের প্রশিক্ষণ দিয়েছি। জুলাই মাসে নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি দিয়েছি যে, আমি নিজে একটি স্কুল করব। স্কুলের শিক্ষকদের আমি নিজে প্রশিক্ষণ দেব।’
আলাপচারিতায় আমান আযমী বলেন, ‘আগামী ২০১৫ সালে আমার একটি স্কুলের যাত্রা শুরু হচ্ছে। স্কুলটির নাম হবে ভিশন স্কলারস একাডেমি। প্রথম শ্রেণী থেকে চতুর্থ শ্রেণী পর্যন্ত প্রাথমিকভাবে শিক্ষা কার্যক্রম শুরু হবে। ইংলিশ মিডিয়াম নয়, দেশের প্রচলিত শিক্ষা কারিকুলাম অনুযায়ী ইংলিশ ভার্সনে শিক্ষা দেওয়া হবে শিক্ষার্থীদের। এ জন্য দক্ষ একটি টিম তৈরির চেষ্টা করছি।’
তিনি বলেন, ‘এ জন্য আমি ২৫ বছরের পরিকল্পনা নিয়ে কাজ করছি। যা ২০১১ সাল থেকে শুরু হয়েছে। আমি মনে করি দেশকে আলোকিত করতে হলে শিক্ষার কোনো বিকল্প নাই। বর্তমান অপসংঙ্কৃতির রাজনীতিতে ঢুকে মনে হয় বেশি কিছু করতে পারব না। আমি দেশকে ভালোবাসি, দেশের উন্নয়ন চাই—মঙ্গল চাই। আমি চিন্তা করে দেখেছি, যদি শিক্ষাক্ষেত্রে কাজ করে সুনাগরিক গড়ে তুলতে পারি তাহলে তারাই উন্নত দেশ ও জাতি উপহার দেবে।’
‘আপনার বাবা জামায়াতের আমির ছিলেন, আপনাকে যদি বর্তমান দলের শীর্ষ নেতারা রাজনীতি করার আহ্বান জানান তাহলে কী করবেন?’— এমন প্রশ্নের উত্তরে আমান আযমী বলেন, ‘রাজনীতি করতে তারা আহ্বান করেনি তা কিন্তু আমি বলিনি। বলেছি আমি এখন রাজনীতি করার চিন্তা করছি না।’
জানাজা ও দাফন-কাফনে সহযোগিতার ব্যাপারে সরকারকে ধন্যবাদ দেওয়া প্রসঙ্গে আমান আযমী বলেন, ‘সরকার আমার বাবার উপর কত অন্যায় করেছে সেটা তো ভিন্ন কথা। কিন্তু এই যে দেশের ইতিহাসে স্মরণকালের বড় জানাজা অনুষ্ঠিত হলো, এতে যদি প্রশাসন, কারা কর্তৃপক্ষ সহযোগিতা না করত তাহলে কী সুষ্ঠুভাবে সবকিছু করা সম্ভব হতো? হতো না। যেহেতু প্রশাসন সরকারেরই অংশ, তাই আমি সরকারকে ধন্যবাদ দিয়েছি। কিন্তু প্রধানমন্ত্রীকে ধন্যবাদ জানাইনি।’
দেশের বাইরে থাকা ভাইদের দেশে আসতে না পারা প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘তারা বাংলাদেশী বংশোদ্ভুত বৃটিশ নাগরিক। নিয়ম অনুযায়ী তাদের ভিসা লাগে না, তবে পাসপোর্টে একটা সিল লাগে। কিন্তু বাংলাদেশ দূতাবাসের সংশ্লিষ্টরা তাদের পাসপোর্টে এ সিল দেয়নি। এ ব্যাপারে কোনো সদুত্তরও দেয়নি তারা।’
আব্দুল্লাহিল আমান আযমী গোলাম আযমের ৬ ছেলের মধ্যে চতুর্থ। সেনাবাহিনীর ব্রিগেডিয়ার জেনারেলের পদ থেকে ২০০৯ সালের ২৩ জুন আযমীকে বরখাস্ত করা হয়। আমান আযমী ছাড়া বাকিরা সবাই দেশের বাইরে থাকেন।
মানবতাবিরোধী অপরাধে ৯০ বছরের কারাভোগ অবস্থায় বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ে চিকিৎসা চলাকালীন গত ২৩ অক্টোবর মারা যান গোলাম আযম। ২৫ অক্টোবর বায়তুল মোকাররম জাতীয় মসজিদে জানাজার পর গোলাম আযমকে মগবাজারের কাজী অফিস লেনের পারিবারিক কবরস্থানে দাফন করা হয়।

চাঁপাইনবাবগঞ্জ নিউজ/ সৌজন্যে ঃ দ্যা রিপোর্ট২৪ ডটকম/ ৩১-১০-২০১৪
১৯৭১ সালে মানবতাবিরোধী অপরাধের দায়ে ৯০ বছরের সাজাপ্রাপ্ত জামায়াতে ইসলামীর সাবেক আমির গোলাম আযমের মৃত্যুতে বিএনপির শোক না জানানো ও জানাজায় শরিক না হওয়াকে স্বাভাবিকভাবে দেখছেন না তার চতুর্থ ছেলে আব্দুল্লাহিল আমান আযমী। দ্য রিপোর্টকে বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে আমান আযমী বলেন, ‘শুধু আমার কাছে নয়, আমার বাবার মৃত্যুতে বিএনপির নীরব ভূমিকা সবার কাছেই বিস্ময়কর মনে হয়েছে।’
তিনি আরও বলেন, এই মুহূর্তে আমি রাজনীতি নিয়ে ভাবছি না। আমি শিক্ষা নিয়েই কাজ করতে চাই।
আব্দুল্লাহিল আমান আযমী একটি অনলাইনে প্রকাশিত নিউজ তার ফেসবুক একাউন্ট থেকে শেয়ার করেছিলেন বুধবার। ‘তারেকের নির্দেশে আযমের জানাযা বর্জন করল বিএনপি’ শিরোনামের প্রতিবেদনটি শেয়ার করে আমান আযমী তার ফেসবুক স্ট্যাটাসে লেখেন, ‘অধ্যাপক গোলাম আযমের মৃত্যুর পর পুরো বিশ্ব শোক করলেও বিএনপির নীরবতায় পুরো জাতি হতাশ। আমি জানি না কেন!’
তিনি আরও লেখেন, “আমার এটা বলতে কোনো দ্বিধা নেই যে, জামায়াতের সমর্থন ছাড়া বিএনপি কখনোই সরকার গঠন করতে পারত না। দুঃখের বিষয়, এই দলের প্রতিষ্ঠাতা আমির এবং আমৃত্যু আধ্যাত্মিক গুরুর মৃত্যুতে তাদের নীরবতা ছিল একেবারেই অপ্রত্যাশিত ও অগ্রহণযোগ্য!”
বিএনপি নেতাদের উদ্দেশে আযমী লেখেন, ‘জামায়াতের সমর্থন ছাড়া তারা ফের ক্ষমতায় যেতে পারবে না—এটা মাথায় রাখলে বিএনপি ভালো করবে। এটা আমার প্রকাশ্য চ্যালেঞ্জ।’
ফেসবুকে নিজের দেওয়া স্ট্যাটাসের ব্যাখ্যায় আব্দুল্লাহিল আমান আযমী বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় একান্ত সাক্ষাৎকারে দ্য রিপোর্টকে বলেন, ‘প্রথমত কথা হলো আমি কোনো রাজনৈতিক দলের লোক নই, আমি কোনো রাজনীতি করি না। সুতরাং এটি কোনো রাজনৈতিক বক্তব্য নয়। গত এক সপ্তাহ থেকে বিভিন্ন মানুষের কাছে প্রশ্নের সম্মুখীন হয়েছি বিএনপি কোনো শোক বার্তা দিয়েছে কিনা, বিএনপির কেউ জানাজায় এসেছে কিনা, আমাদের বাড়িতে কেউ সমবেদনা জানাতে এসেছে কিনা। এ সব সাধারণ মানুষের জিজ্ঞাসা। যারা আমাকে এ সব প্রশ্ন করছে আমি তাদের পাল্টা প্রশ্ন করছি—আপনাদের কাছে কী ব্যাপারটা স্বাভাবিক মনে হয় যে, অধ্যাপক গোলাম আযমের মতো নেতা—যিনি বিশ্বব্যাপী সম্মানিত, তার জন্য বিশ্বব্যাপী হাজারো জায়গায় জানাজা হয়েছে। এমন একটা মানুষের ইন্তেকালে বিএনপি একদম নিঃশব্দ, নিষ্ক্রিয়-আপনাদের কাছে কী স্বাভাবিক মনে হয়? আমার কাছে এটা অস্বাভাবিক মনে হয়েছে। সাধারণ, সচেতন নাগরিক হিসেবে ওই মতামত প্রকাশ করেছি। এর মধ্যে তারেক রহমানের বিষয়ে একটা কথা ছিল। আমি বিশ্বাস করতে চাই না তিনি এটা বলেছেন। আসলে এটা আমি মিডিয়াতে নাও বলতে পারতাম। আমি বলেছি যে, তাদের (বিএনপির) এ নীরবতা বিস্ময়কর। এটা শুধু আমার কাছে নয়, সবার কাছেই বিস্ময়কর। আমি স্ট্যাটাসে আরও একটি বিষয় বলেছি—এটা সবাই জানে যে, ১৯৯১ সালে বিএনপি জামায়াতের সমর্থন নিয়ে সরকার গঠন করেছে। আওয়ামী লীগ তো দু’টা মন্ত্রীত্ব ও ৭টা মহিলা এমপির পদ দিতে চেয়েছিল। কিন্তু জামায়াত আওয়ামী লীগের এ প্রস্তাবে রাজি না হয়ে বিএনপিকে সমর্থন দিয়েছে, তারা মাত্র দুইটা মহিলা এমপি দিয়েছিল। জামায়াতের জন্য তো ওটা (আওয়ামী লীগের প্রস্তাব) লাভবান প্রস্তাব ছিল। জামায়াত তাদের দলীয় লাভ দেখেনি, সঙ্কীর্ণতার মধ্যে আবদ্ধ থাকেনি। দেশের স্বার্থে বিএনপিকে সমর্থন দিয়েছে জামায়াত। ২০০১ সালের নির্বাচনে জামায়াত-বিএনপি এক থাকার কারণেই বিজয়ী হওয়া (সরকার গঠন) সম্ভব হয়েছে। ৯৬-এর ইলেকশনে বিএনপি-জামায়াত পৃথকভাবে ইলেকশন করেছে বিএনপির অবস্থান কিন্তু ভালো হয়নি।’
- See more at: http://www.thereport24.com/article/66473/index.html#sthash.T2xc6qyS.dpuf