মাদকসেবীর পক্ষ নিতে গিয়ে জনতার হাতে অবরুদ্ধ হলো দারোগা মনির

চাঁপাইনবাবগঞ্জ পৌর এলাকার উপ-রাজারামপুরে রিংপাট ব্যবসার আড়ালে মাদক সিন্ডিকেটের অন্যতম হোতা হযরত আলীর পড়্গ নিয়ে স'ানীয় তিন গ্রামবাসীকে মারধর করলেন চাঁপাইনবাবগঞ্জ সদর থানার উপ-পরিদর্শক মনিরম্নল ইসলাম মনির। শুক্রবার রাতে হযরতের মাতলামীর প্রতিবাদ করতে গিয়ে পুলিশী নির্যাতনের শিকার হন তারা। এক পর্যায়ে পুলিশী আচরণে ড়্গুব্ধ হয়ে এলাকাবাসী প্রায় ১ ঘন্টা অবরম্নদ্ধ করে রাখে এসআই মনিরকে। পরে অতিরিক্ত পুলিশ ঘটনাস'লে গিয়ে মনিরকে উদ্ধার করে।
উপ-রাজারামপুরের মোজাম্মেল হক, নজরম্নল ইসলাম, হোদাসহ প্রত্যড়্গদর্শীরা জানিয়েছে, শুক্রবার রাতে হযরত আলী মদ পান করে মাতাল হওয়ার পর মদের বোতল হাতে নিয়েই উপ রাজারামপুর মোড়ে মাতলামী করছিল। এসময় মোড়ের চায়ের দোকানদার শহীদুল ইসলাম মাতলামীর প্রতিবাদ করলে সে অকথ্যভাষায় গালিগালাজ শুরম্ন করে। এক পর্যায়ে তার চায়ের দোকানে হামলা চালিয়ে চুলা ভাঙ্গচুর করে। প্রত্যড়্গদর্শীরা জানায়, চুলা ভাঙ্গচুর করার পর দেখে নেয়ার হুমকী দেয়ার পর পুলিশকে ফোন করে। এর পরপরই ঘটনাস'লে উপসি'ত হন এসআই মনিরের নেতৃত্বে একদল পুলিশ। তারা জানায়, পুলিশ চায়ের দোকানে এসেই কোন না শুনেই শহীদুলকে মারাধর শুরম্ন করে। এ ঘটনার প্রতিবাদ করতে গেলে মনির দারোগার মারধরের শিকার হন উপ-রাজারামপুর গ্রামের আব্দুর রহিম (৪০) ও মুক্তার হোসেন (৩৮)। উপ রাজরামপুরের নজরম্নল ইসলাম বলেন, ‘ পুলিশ যখন সাধারণ মানুষকে মারধর করছিল। তখন হযরত আলী মদের বোতল হাতে নিয়ে তার পাশেই দাড়িয়ে ছিল’। তিন গ্রামবাসীকে পুলিশের মারধরের খবর গ্রামে ছড়িয়ে পড়লে তারা ড়্গুব্ধ হয়ে উঠে এবং তারা গ্রাম থেকে মোড়ে এসে রাত পৌনে ৮টা থেকে সাড়ে ৮টা পর্যনত্ম এসআই মনিরকে অবরম্নদ্ধ করে রাখে। এক পর্যায়ে গ্রামবাসীর মধ্যে উত্তেজনাও ছড়িয়ে পড়ে।
পুলিশ জানায়, খবর পেয়ে চাঁপাইনবাবগঞ্জ সদর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) জসিম উদ্দীন পুলিশ নিয়ে ঘটনাস'লে গিয়ে এলাকাবাসীকে শানত্ম করার পর এসআই মনিরকে উদ্ধার করে নিয়ে আসে।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছিুক উপ-রাজারামপুরের কয়েকজন সাধারণ মানুষ বলেন, ‘ এক সময়ের রাজমিস্ত্রি হযরত মাটি কেনা বেচার ব্যবসাসহ অসাধু উপায়ে হটাৎকরে প্রচুর টাকার মালিক হয়ে যায়। তার অন্যান্য ভাইয়েরা এখনও শ্রমিক হিসেবে কাজ করে। এলাকায় রিংপাট ব্যবসার আড়ালে রিংপাট কারখানায় একটি ঘর করে অসামাজিক কার্যকলাপের আখড়া গড়ে তোলে হযরত আলী’। তারা অভিযোগ করে বলেন, ‘ওই ঘরে নিয়মিত মদের আসরসহ অন্যান্য অসামাজিক কার্যকলাপ চলতো। অল্প সময়ে পুলিশের সঙ্গে সখ্যতা গড়ে তুলে সে এলাকায় পুলিশের ‘দালালী’ও করতো। এসআই মনিরসহ অন্যান্য পুলিশও মাঝেমধ্যেই আসতো হযরতের রিংপাট কারখানার ঘরে’।
হরিপুর গ্রামের নাহিদুল ইসলাম নাহিদ বলেন, ‘ রিংপাট কারখানাটি দেখতে দেখতে অপরাধ কর্মকা-ের আখড়ায় পরিণত হয়েছিল। এর জন্য গ্রামবাসী অতিষ্ঠ হয়ে উঠেছিল’।
এ ব্যাপারে এসআই মনিরের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি মারধরের অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, ‘ শহীদুলের দোকানে গাজা বিক্রি হচ্ছে এমন সংবাদের ভিত্তিতে পুলিশ অভিযান চালায়। সেখানে কাউকে মারধর করা হয়নি। সামান্য কথা কাটাকাটি হয়েছে’। হযরতের সঙ্গে সখ্যতা প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘ হযরত একটি মামলার বাদি হওয়ার কারণে মাত্র দু’বার তার কারখানায় গিয়েছিলাম’।
সদর থানার ওসি জাসিম উদ্দীন বলেন, ‘ অভিযানে গিয়ে স'ানীয় লোকজনের সঙ্গে মনিরের কথা কাটাকাটি হয় এবং উত্তেজনা সৃষ্টি হয়। খবর পেয়ে আমি ঘটনাস'লে গিয়ে মানুষজনের সঙ্গে কথা বলে পরিসি'তি নিয়ন্ত্রণে আনি’।
এদিকে, এসআই মনিরকে উদ্ধারের পর রাতেই সদর থানা পুলিশ পৃথক অভিযান চালিয়ে হযরতকে আটক করে। তাকে সদর হাসপাতালে ভর্তি করার পর পরীড়্গায় মদের আলমত পাওয়া যাওয়ায় ভ্রাম্যমাণ আদালতে সোপার্দ করা হয়। আদালতের বিচারক নির্বাহী ম্যাজিষ্ট্রেট আব্দুলস্নাহ আল মামুন হযরতকে ৬ মাসের কারাদ- দিয়ে জেল হাজতে পাঠান।

,