চাঁপাইনবাবগঞ্জ ও দিনাজপুরে দু’টি বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণের প্রস্তাব অনুমোদ
চাঁপাইনবাবগঞ্জ ও দিনাজপুরে ৩৭৫ মেগাওয়াট ক্ষমতাসম্পন্ন দুটি বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণের প্রস্তাব অনুমোদন দিয়েছে সরকার। দিনাজপুরের বড়পুকুরিয়ায় হবে ২৭৫ মেগাওয়াট আর চাঁপাইনবাবগঞ্জের আমনুরায় হবে ১০০ মেগাওয়াটের বিদ্যুৎকেন্দ্র। বড়পুকুরিয়ায় হবে কয়লাভিত্তিক আর চাঁপাইনবাবগঞ্জে হবে হাইড্রোলিক ফার্নেস অয়েল (এইচএফও) ভিত্তিক। গতকাল রবিবার জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটির (একনেক) সভায় এ দুটিসহ মোট ১৩টি উন্নয়ন প্রকল্প অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। রাজধানীর শেরেবাংলা নগরে এনইসি সম্মেলন কক্ষে অনুষ্ঠিত একনেক সভায় সভাপতিত্ব করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
জানা গেছে, বিদ্যুৎ বিভাগের 'এক্সটেনশন অব বড়পুকুরিয়া কোল ফায়ার্ড থার্মাল পাওয়ার স্টেশন বাই ২৭৫ মেগাওয়াট' শীর্ষক প্রকল্পটির মাধ্যমে বিদ্যমান ২৫০ মেগাওয়াটের বড়পুকুরিয়া তাপ বিদ্যুৎকেন্দ্রে ২৭৫ মেগাওয়াটের আরো একটি ইউনিট স্থাপন করা হবে। প্রকল্পটি বাস্তবায়নে ব্যয় ধরা হয়েছে ২,৬৮৮ কোটি টাকা। এর মধ্যে চায়না ইন্ডাস্ট্রিয়াল অ্যান্ড কমার্শিয়াল ব্যাংকের কাছ থেকে ১,৮৩৬ কোটি টাকা বায়ার্স ক্রেডিট নেওয়া হচ্ছে। এ ছাড়া সরকারের তহবিল ৬৪৮ কোটি টাকা এবং বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ডের নিজস্ব তহবিল থেকে ২০৪ কোটি টাকা ব্যয় হবে। ২০১৭ সালের নভেম্বর নাগাদ প্রকল্পের কাজ শেষ করার কথা রয়েছে। অন্যদিকে চাঁপাইনবাবগঞ্জ সদরের আমনুরায় ১০০ মেগাওয়াট হাইড্রোলিক ফার্নেস অয়েলভিত্তিক বিদ্যুৎকেন্দ্র বাস্তবায়নে ব্যয় ধরা হয়েছে ১,১১৪ কোটি টাকা। প্রকল্পটিতে হংকং অ্যান্ড সাংহাই ব্যাংকিং করপোরেশন লিমিটেড (এইচএসবিসি) ৮৯৩ কোটি টাকার ঋণ সহায়তা দেবে। এ ছাড়া সরকারের নিজস্ব তহবিল থেকে ১৪৬ কোটি টাকা এবং পিডিবি থেকে ৭৫ কোটি টাকা জোগান দেওয়া হবে। এটি দুই বছর মেয়াদি প্রকল্প। জানা গেছে, বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণে বিদেশি যে দুটি ব্যাংক থেকে ঋণ নেওয়া হচ্ছে, তাতে সুদের হার ধরা হয়েছে ৪ শতাংশ। এ ছাড়া ম্যানেজমেন্ট ফি ধরা হয়েছে ১ শতাংশ। পাশাপাশি কমিটমেন্ট ফি ধরা হয়েছে দেড় শতাংশ। সব মিলিয়ে সুদের হার আসবে সাড়ে ৬ শতাংশ।
দুটি বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণে কেন এত উচ্চ সুদে ঋণ নেওয়া হচ্ছে জানতে চাইলে এক ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা কালের কণ্ঠকে বলেন, সরকার ধীরে ধীরে কয়লার দিকে যাচ্ছে। আগামী দিনগুলোতে কয়লা দিয়েই বিদ্যুৎ উৎপাদন করা হবে। এ জন্য ঝুঁকি নেওয়া হচ্ছে। তবে অর্থনৈতিক ও কয়লার বিষয়টির নিশ্চয়তা সাপেক্ষে এই দুটি প্রকল্প অনুমোদন দেওয়া হয়েছে বলে জানান তিনি। গতকালের একনেক সভায় খুলনায় প্রস্তাবিত রামপাল কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎকেন্দ্রের সংযোগ সড়ক নির্মাণের জন্য ৫৫ কোটি টাকার অন্য একটি প্রকল্প অনুমোদন দেওয়া হয়েছে।