নিহতদের বাড়িতে শোকের মাতম> বাবার মৃত্যুর ১০ দিন পর চলে গেলেন ছেলেও
‘১০দিন আগেই মারা গেছেন বাবা। সড়ক দুর্ঘটনায় মারা গেলে আমার ভাইও। আমাদের মাথার ওপরের ছাদ রইলো না।’ কথাগুলো বলে মূর্ছা যাচ্ছিলেন নাসিমের ছোট বোন সায়েমা খাতুন।
রোববার দিবাগত রাতে রাজশাহী নগরের খড়খড়ি বাজার এলাকার দুই বাস ও এক ট্রাকের ত্রিমুখী সংঘর্ষে জামায়াতের তিন কর্মী নিহত ও প্রায় ৫০ জন আহত হয়েছেন। নিহতদের মধ্যে ছিলেন চাঁপাইনবাবগঞ্জ সদর উপজেলার রানিহাটি ইউনিয়নের ঘোড়াপাখিয়া গ্রামের মৃত বিল্লাত আলীর একমাত্র ছেলে নাসিম আলী। বাকি আরও দুজনের বাড়িও একই এলাকাতে।
নিহত নাসিমের ছোট বোন সায়েমা বলেন, ‘গত ১০ দিন আগে বাবা অনুস্থ হয়ে মারা গেছেন। বাবার মৃত্যুর ১০ দিন পর সড়ক দুর্ঘটনায় ভাই মারা গেল। পরিবারটিকে দেখাশোনার মতো কেউ থাকল না।’ তাদের পরিবারের জন্য পূর্নবাসনের ব্যবস্থা করা হয় এমন দাবিও অন্তবর্তী সরকারের কাছে জানান তিনি।
এদিকে সোমবার দুপুরে চাঁপাইনবাবগঞ্জ সদর উপজেলার রানিহাটি ইউনিয়নের ঘোড়াপাখিয় গ্রামে গিয়ে দেখা যায় নিহত ৩ জনের বাড়িতে চলছে শোকের মাতম। বাড়ির পাশে আত্মীয়- স্বজন ও প্রতিবেশীরা দাঁড়িয়ে আছে। পাশে রয়েছে খাটিয়া। তারা ধুয়া মুছা করছেন। এ সময় নিহতের পরিবারের সদস্যদের সান্তনা দিচ্ছেন স্বজনারা।
একই গ্রামের তিনজন ব্যক্তি ভয়াবহ সড়ক দুর্ঘটনায় নিহতের ঘটনায় গোটা গ্রামে নেমে এসেছে শোকের ছায়া। নিহতদের বাড়িতে চলছে আহাজারি, হৃদয়বিদারক দৃশ্যে ভারী হয়ে উঠেছে এলাকার বাতাস।
প্রত্যক্ষদর্শী ও সংশ্লিষ্টরা জানান, জামায়াতে ইসলামীর উদ্যোগে রানীহাটি ইউনিয়নের শিক্ষা সফরের অংশ হিসেবে দুটি বাসে করে দলের নেতা-কর্মীরা প্রয়াত জামায়াত নেতা দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদীর কবর জিয়ারতসহ বাগেরহাটের ষাট গম্বুজ মসজিদ, পদ্মা সেতু যাচ্ছিলেন। এসময় রাজশাহী নগরের খড়খড়ি এলাকায় বিপরীত দিক থেকে আসা একটি ট্রাকের সঙ্গে সংঘর্ষ হলে একটি বাস রাস্তার পাশের খাদে পড়ে যায়। আর অপর বাস ও ট্রাক সড়কের ওপরে মুখোমুখি অবস্থায় ছিল।
এদিকে বহরম ঘোড়াপাখিয়া গোরস্থানে বিকালে নামাজে জানাজা শেষে তাদের সেখাইেন দাফন করা হয়।
চাঁপাইনবাবগঞ্জ নিউজ / নিজস্ব প্রতিবেদক / ০৭ এপ্রিল ২০২৫