চাঁপাইনবাবগঞ্জে শ্রমিক কল্যাণ ফেডারেশনের দি-বার্ষিক সম্মেলন অনুষ্ঠিত
চাঁপাইনবাবগঞ্জে শ্রমিক কল্যাণ ফেডারেশনের দি-বার্ষিক সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়েছে।
রবিবার সকালে চাঁপাইনবাবগঞ্জ শহরের শাহ্ নেয়ামতুল্লাহ কলেজ অডিটোরিয়ামে এই সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়।
জেলা শ্রমিক কল্যাণ ফেডারেশনের সভাপতি অধ্যাপক মোজাম্মেল হকের সভাপতিত্বে ও সাধারণ সম্পাদক প্রফেসর মুনিমুল হকের সঞ্চালনায় সম্মেলনে বক্তব্য রাখেন, বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর নায়েবে আমীর ও সাবেক এমপি অধ্যাপক মুজিবুর রহমান, জামায়াতে ইসলামি ঢাকা দক্ষিণের আমির ও শ্রমিক কল্যাণ ফেডরেশনের কেন্দ্রীয় কমিটির উপদেষ্টা নূরুল ইসলাম বুলবুল,চাঁপাইনবাবগঞ্জ শ্রমিক কল্যাণ ফেডারেশনের জেলা উপদেষ্টা ও সাবেক এমপি অধ্যাপক লতিফুর রহমান, বাংলাদেশ শ্রমিক কল্যাণ ফেডারেশনের কেন্দ্রীয় সহ-সভাপতি মুজিবুর রহমান ভুইঁয়া, কেন্দ্রীয় উপদেষ্টা রফিকুল ইসলাম, মো: নজরুল ইসলাম, রাজশাহী মহানগরের প্রধান উপদেষ্টা ড. কেরামত আলী, রাজশাহী অঞ্চলের সহকারি পরিচালক মাও. আব্দুস সবুর।
সম্মেলনের প্রধান অতিথি জামায়াতে ইসলামীর নায়েবে আমীর ও সাবেক এমপি অধ্যাপক মুজিবুর রহমান বলেন, ১৯৭১ সালে দেশ স্বাধীন হলেও মানুষ স্বাধীনতা পায়নি। সেজন্যই মানুষ স্বাধীনদেশেও বারবার আন্দোলন সংগ্রাম করতে হয়েছে। ২০২৪ সালে ছাত্র-জনতার আন্দোলনে মানুষের স্বাধীনতা পেয়েছে। তবে এই স্বাধীনতার চূড়ান্ত সুফল আসবে ইসলামী রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা হলে।
জাতীয় সংসদ এমন এক জায়গা সেখানে যে আইন দিবেন, সেই আইনই চালু হবে উল্লেখ করে জাতীয় সংসদ ধর্ম নিরপেক্ষতার আইন দিয়ে চলেছে, জাতীয়তাবাদ দিয়ে চলেছে, মানুষের তৈরি মতবাদে চলেছে। এসবের পরও কি দেশের মানুষ শান্তি বা অধিকার পেয়েছে প্রশ্ন রেখে তিনি বলেন, মানুষের তৈরি আইনে সমাজ বা রাষ্ট্রে শান্তি প্রতিষ্ঠা হয় না এবং হবেও না। শান্তি প্রতিষ্ঠার জন্য আল্লাহর আইনে পরিবার, সমাজ, রাষ্ট্র তথা সংসদ চলতে হবে।
তিনি আরো বলেন, জাহান্নাম থেকে বেঁচে জান্নাতে যাওয়ার জন্য কাজ করতে হবে। কাজ সৃষ্টির জন্য শ্রমিক দরকার। শ্রমিক ছাড়া দেশ, রাষ্ট্র, জেলা, উপজেলা সকল কিছুই অচল। ছাত্র আন্দোলনের এই বিপ্লবের পাশাপাশি আমাদের আরেকটি বিপ্লবের জন্য আমাদের লড়তে হবে সেটা হলো ইসলাম কায়েম করতে হবে।
সম্মেলনে প্রধান বক্তা জামায়াতে ইসলামি ঢাকা দক্ষিণের আমির ও শ্রমিক কল্যাণ ফেডরেশনের কেন্দ্রীয় কমিটির উপদেষ্টা নূরুল ইসলাম বুলবুল বলেন, বাংলাদেশের সব চেয়ে গুরুত্বপূর্ণ খাত হচ্ছে গার্মেন্টস খাত। এদেশের শ্রমিকদের এক শ্রেণীর মালিক সব চেয়ে গুরুত্বপূর্ণ খাত গার্মেন্টস খাতে উত্তজনা তৈরি করে গার্মেনন্টস গুলোকে বন্ধ করে দেয়ার মাধ্যমে প্রতিবেশী রাষ্ট্রকে সুযোগ করে দেয়ার জন্য শ্রমিকদের কাজে লাগাই।
তিনি বলেন, শ্রমিক সভ্যতা বিনির্মানের হাতিয়ার এবং দেশের উন্নয়ন ও অগ্রগতির চালিকাশক্তি, শ্রমিকদের শরীরে ঘাম, রক্ত এবং প্রচেষ্টার মাধ্যমে সভ্যতা গড়ে উঠেছে। কিন্তু দুর্ভাগ্যজনক হলেও সত্য বাংলাদেশে সবচেয়ে অবহেলিত জনগোষ্ঠীর নাম শ্রমিক। যে সরকার যখন ক্ষমতায় এসেছে তারা শ্রমিকদের মিথ্যা আশ্বাস দিয়েছে, শ্রমিকদের অধিকার নিয়ে তারা ছিনিমিনি খেলেছে। শুধু ছিনিমিনি খেলেনি, শ্রমিক- মালিকদের মধ্যে তারা সংঘাত সৃষ্টি করেছে। তারা রাজনৈতিক ফায়দা হাসিলের জন্য
শ্রমিকদের দাবার গুটি হিসেবে ব্যবহার করেছে।
শ্রমিকদের সমস্যা সমাধানে প্রয়োজনীয় সব ধরনের পদক্ষেপ গ্রহণ করা হবে উল্লেখ করে এই নেতা আরও বলেন, চাঁপাইনবাবগঞ্জে আমরা শ্রমিকদের প্রশিক্ষণের জন্য শ্রমিক ইনষ্টিটিউট গড়ে তুলতে চাই। প্রয়োজন হলে আমরা অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের সাথে বসবো।
পরে চাঁপাইনবাবগঞ্জ শ্রমিক কল্যাণ ফেডারেশন জেলা শাখা, সদর উপজেলা ও পৌরসভা শাখার কমিটি ঘোষণা করা হয়।
চাঁপাইনবাবগঞ্জ নিউজ / নিজস্ব প্রতিবেদক / ১৫ ডিসেম্বর ২০২৪