সাবেক এমপি গোলাম রাব্বানীর বিরুদ্ধে মামলা পিবিআইকে তদন্তের নির্দেশ




চাঁপাইনবাবগঞ্জের শিবগঞ্জে কলেজশিক্ষার্থী মতিউর রহমান (২২) নামে এক ব্যক্তিকে অপহরণ করে হত্যা অভিযোগে চাঁপাইনবাবগঞ্জ-১ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য ও কানসাট বিদ্যুৎ আন্দোলনের নেতা গোলাম রাব্বানীসহ ২৭ জনের বিরুদ্ধে মামলা আমলে নিয়ে পিবিআইকে তদন্তের নির্দেশ দিয়েছেন আদালত।

সোমবার দুপুরে নিহত মতিউরের ভাই শিবগঞ্জের বাজিতপুর গ্রামের বাসিন্দা মো. জেম আলী (৩৬) বাদী হয়ে শিবগঞ্জ আমলি আদালতে হত্যা মামলার আবেদন করেন।
মামলাটি আমলে নিয়ে পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশনকে (পিবিআই) তদন্তের আদেশ দিয়েছেন আদালতের বিচারক সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট মো. তৌহিদুজ্জামান। 
মামলায় র‍্যাব-৫ চাঁপাইনবাবগঞ্জের কোম্পানির তৎকালীন অধিনয়াক মেজর কামরুজ্জামান পাভেল, উপপরিদর্শক (এসআই) মো. বিসারত আলী, গোলাম রাব্বানীর ভাই কানসাট ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি ও ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) সাবেক চেয়ারম্যান বেনাউল ইসলাম, গোলাম রাব্বানীর ছেলে ইমতিয়াজ আহমেদসহ ২৭ জনের নাম উল্লেখ করে এবং অজ্ঞাত আরও অনেকেই আসামি করা হয়েছে।

এসব তথ্য নিশ্চিত করে বাদীর আইনজীবী গোলাম কবীর জানান, আদালত আগামী বছরের ৭ জানুয়ারি  মামলার পরবর্তী শুনানীর দিন ধার্য করেছেন। এ সময়ের মধ্যে তদন্ত প্রতিবেদন জমা দেয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে পিবিআইকে।

মামলার আরজিতে উল্লেখ করা হয়েছে, ২০১৫ সালের ১৫ জানুয়ারি বিকেলে মতিউর রহমান, মো. শ্যামল ও মো. হযরত আলীসহ পাঁচজনকে বাজিতপুরের একটি বেগুনখেত থেকে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরা ধরে নিয়ে যান। শিবগঞ্জ থানায় খোঁজ নিলে জানানো হয়, তাঁদের মধ্যে শ্যামল ও হযরতকে সন্ধ্যা থানায় সোপর্দ করা হয় এবং মতিউরসহ তিনজনকে র‍্যাবের গাড়িতে করে নিয়ে যাওয়া হয়। পরদিন সকাল সাতটায় শিবগঞ্জ থানার এসআই মাহবুবুর রহমান বাদীর এক মামাকে মুঠোফোনে বলেন, ‘তোমার ভাগনের লাশ শিবগঞ্জ থানায় আছে।’
তাৎক্ষণিকভাবে বাদী ও তাঁর ভাই মো. আলিম ও মো. হালিম থানায় গিয়ে লাশ শনাক্ত করেন এবং দেখতে পান, লাশের বুকে ও পাঁজরে ৮-৯টি গুলির চিহ্ন ও বাঁ হাত ভাঙা। শরীরে বিভিন্ন স্থানে আঘাতের চিহ্ন ছিল। 
এ ব্যাপারে এসআই মাহবুবুরকে জিজ্ঞাসা করা হলে তিনি বলেন, ‘ভোররাতে র্যাব তোমার ভাইয়ের লাশ দিয়ে গেছে। এর বেশি কিছু জানি না।’ ওই সন্ধ্যায় লাশ হস্তান্তর করা হয়। বাড়ি নিয়ে গিয়ে এলাকার গোরস্তানে লাশ দাফন করা হয়।
বাদী জেম আলী বলেন, ‘আমার ভাই নিহত মতিউর রহমান কানসাট সোলাইমান আলী ডিগ্রি কলেজের স্নাতক দ্বিতীয় বর্ষের ছাত্র ছিল। আমাদের পরিবার বিএনপির সমর্থকমাত্র। কেউ কোনো কমিটির সদস্য ছিল না। এত দিন স্বৈরাচারী আওয়ামী লীগ সরকার ক্ষমতায় থাকায় মামলা করতে পারিনি। দণ্ডবিধির ৩৬৪/৩০২/৩৪ ধারার সঙ্গে নির্যাতন ও হেফাজতে মৃত্যু (নিবারণ) আইনের ১৫-এর উপধারা (২)-এ মামলা করা হয়েছে।’

চাঁপাইনবাবগঞ্জ নিউজ / নিজস্ব প্রতিবেদক / ০৭ অক্টোবর ২০২৪