চাঁপাইনবাবগঞ্জে ৩২টি বাচ্চাসহ পুকুর পাড়ে রাসেল ভাইপার



একটি দুটি নয়, প্রায় ৩২টি বাচ্চাসহ বিষধর একটি রাসেল ভাইপার সাপের দেখা মিলেছে।  সোমবার চাঁপাইনবাবগঞ্জ সদর উপজেলার বালিয়াডাঙ্গা ইউনিয়নের বালুগ্রাম এলাকার একটি পুকুরের পাড়ের কুঁড়েঘরের নিচ এই ৩৩ সাপ দেখা যায়।  পরে পুকুর মালিক ও স্থানীয়রা প্রায় ঘন্টাব্যাপী এই ৩৩টি সাপকে মেরে পুকুরের পাশে একটি গর্ত করে পুঁতে দেয়। 

এদিকে সাপগুলো রাসেল ভাইপার প্রজাতির তা নিশ্চিত করেছেন, বন অধিদপ্তরের বণ্যপ্রাণী ব্যবস্থাপনা ও প্রকৃতি সংরক্ষণ বিভাগের বন্যপ্রাণী ও জীববৈচিত্র্য সংরক্ষণ কর্মকর্তা তন্ময় আচার্য্য। 
স্থানীয় বাসিন্দা, প্রত্যক্ষদর্শী, পুকুর মালিক, ও বণ্যপ্রাণী সংরক্ষণ কর্মকর্তা সূত্রে জানা যায়, বিরল প্রজাতির রাসেল ভাইপার সাপই এখন দেশের সবচেয়ে বিষধর। সকালে মুক্তার হোসেন পুকুর দেখতে আসলে প্রথমে একটি সাপ দেখতে পায়। পরে পুকুর বিভিন্ন সরঞ্জামের স্তুপের নিচ থেকে একে একে ৩২টি বাচ্চাসহ রাসেল ভাইপার সাপ দেখতে পাওয়া যায়। এসময় স্থানীয়রা সবগুলো সাপ মেরে ফেলে। 
পুকুর মালিক মো. মুক্তার হোসেন বলেন, গত ৮ বছর ধরে এই পুকুর চাষাবাদ করি। কিন্তু এর আগে কখনও এই জাতের সাপ দেখতে পায়নি। আজকে সকালে হঠাৎ এতোগুলো সাপ একসাথে দেখতে পেয়ে ভীত হয়ে যায়। পরে স্থানীয় বাসিন্দাদের সহযোগিতা নিয়ে প্রায় এক ঘন্টা ধরে সবগুলো সাপ মেরে ফেলা হয়েছে। এরপর নিরাপত্তার সুবিধায় মাটির নিচে গর্ত করে পুতে ফেলা হয়েছে। 



স্থানীয় বাসিন্দা আবু সাইদ বলেন,  পুকুরের ধারে এসে দেখি, রাসেল ভাইপার সাপ। অদ্ভুত ব্যাপার, একসাথে ৩২টি বাচ্চা এর আগে কখনও দেখেনি।
বন অধিদপ্তরের বণ্যপ্রাণী ব্যবস্থাপনা ও প্রকৃতি সংরক্ষণ বিভাগের বন্যপ্রাণী ও জীববৈচিত্র্য সংরক্ষণ কর্মকর্তা তন্ময় আচার্য্য বলেন, সাধারণত সাপ ডিম থেকে বাচ্চা ফোটায়। কিন্তু এক্ষেত্রে ব্যতিক্রম রাসেল ভাইপার সাপ। দেশের সবশেষে বিষধর এই সাপটি সরাসরি বাচ্চা জন্ম দেয়। সর্বোচ্চ ৪০টি পর্যন্ত বাচ্চা দিতে পারে এই সাপটি। 
তিনি আরও বলেন, এই সাপ আক্রমণের শিকার না হলে কাউকে আঘাত করে না। তবে এই সাপে কামড়ালে আক্রান্ত ব্যক্তি সময় খুব কম পান। গত কয়েক বছর থেকে দেশের রাজশাহী ও এর আশেপাশের বিভিন্ন জেলা, রাজবাড়ি, ফদিরপুর জেলার পদ্মা নদীর অববাহিকা এবং বরেন্দ্র এলাকায় উঁচু-নিচু জমিতে এই সাপটির সবচেয়ে বেশি বেশি দেখা মিলছে। এসব সাপ পদ্মা নদীতে বর্ষার সময়ে ভারত থেকে পদ্মা নদী হয়ে চলে আসছে। 
সিভিল সার্জন ডা. এসএম মাহমুদুর রশিদ বলেন, যেসব এলাকায় সাপের কামড়ের আশঙ্কা আছে, সে সমস্ত এলাকায় মানুষকে সচেতন হয়ে চলাফেরা করতে হবে। পাশাপাশি সাপে কামড়ালে ওঝা বা ঝাঁড় ফুক নয় বরং দ্রুত নিকটস্থ হাসপাতালে যোগাযোগের জন্য মানুষকে সচেতন করে তোলা উচিত। তবে রাসেল ভাইপার সাপ অধিক বিষধর হওয়ায় আক্রান্ত ব্যক্তি সময় খুবই কম পায়। তাই যত দ্রুত সম্ভব হাসপাতালে নিয়ে আসতে হবে। অন্যান্য সাপের মতোই রাসেল ভাইপার সাপে কামড়ালেও একই চিকিৎসা দেয়া হয় বলে জানান তিনি। 

চাঁপাইনবাবগঞ্জ নিউজ / নিজস্ব প্রতিবেদক / ২ মে,২০২৩