চাঁপাইনবাবগঞ্জ পৌরসভার বটতলা হাট এলাকায় আদালতে বিচারারধীন একটি জমির উপর জোরপুর্বক পাকা ঘর নির্মাণ ও এ ঘটনায় বাধা দেয়ায় পৌরসভার মেয়রের লোকজনের বিরুদ্ধে মারধরের অভিযোগ এনে সাংবাদিক সম্মেলন করেছেন মনিরুল ইসলাম নামের পৌর এলাকার বালিগ্রাম নতুনপাড়ার বাসিন্দা। মঙ্গলবার দুপুরে চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলা প্রেসক্লাব মিলনায়তনে আয়োজিত সাংবাদিক সম্মেলনে এই অভিযোগ করেন। তবে পৌরসভার মেয়র মোখলেসুর রহমান মনিরুলকেই পৌরসভার যায়গা অবৈধভাবে দখল করে দোকানঘর নির্মাণকারী উল্লেখ করে জানান, প্রকৃত ঘটনা আড়াল করতে ভিত্তিহীন অভিযোগ করা হয়েছে।
সাংবাদিক সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে মনিরুল ইসলাম অভিযোগ করে বলেন, ‘চাঁপাইনবাবগঞ্জ পৌরসভার শংকরবাটি মৌজার আরএস ২৪৫৯ নম্বর দাগের শূণ্য দশমিক ২০ একর জমি পৈতৃক সুত্রে আমার। ওই জমিটি ভুলবশত আরএস রেকর্ডে সরকারের নামে হয়ে যায়। পরে লিগ্যাল ওয়ারিশ হিসেবে ২০১৮ সালে আদালতে রেকর্ড সংশোধনের মামলা করি। মামলাটি এখনও বিচারাধীন আছে। কিন্তু হঠাৎ করেই চাঁপাইনবাবগঞ্জ পৌরসভার মেয়র মোখলেসুর রহমান, পৌরসভার প্যালেন মেয়র সালেহ উদ্দীন ওই নালিশী জমিটুকু দখল করে পাঁকা দালান তুললে, জেলা প্রশাসক বরাবর অভিযোগ দায়ের করি।
তিনি অভিযোগ করে বলেন, ‘এই বিরোধের জের ধরে মেয়র মোখলেসুর রহমানের ভাই বাক্কারসহ ৬-৭ জনের একটি দল গত ২২ অক্টোবর দুপুর ১২ টার দিকে নিজেদের পৌরসভার লোক পরিচয় দিয়ে আমাকে মারধর করে। ওই দিনই চাঁপাইনবাবগঞ্জ সদর মডেল থানায় বাক্কারসহ ৫ জনের নাম উল্লেখ করে অভিযোগ দায়ের করি। কিন্তু থানা পুলিশ কোন পদক্ষেপ গ্রহণ করেনি।’
চাঁপাইনবাবগঞ্জ সদর মডেল থানার ওসি একেএম আলমগীর জাহান বলেন, ‘অভিযোগ পাওয়ার পর ঘটনাটির প্রাথমিকভাবে তদন্ত করা হয়েছে। আমলে নেওয়ার মতো এইটি কোন ঘটনা নয়।’
সাংবাদিক সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে ‘ ২২ অক্টোবর মোখলেসুর রহমান তার লোকজন নিয়ে এসে ৩ লাখ টাকা চাঁদা দাবি করেন’ উল্লেখ করা অংশটি নিয়ে সাংবাদিকরা জানতে চান যে, ওই দিন মোখলেসুর রহমান চাঁপাইনবাবগঞ্জেই ছিলেন না। তা হলে চাঁদা চাইলেন কিভাবে এ প্রসঙ্গে মনিরুল বলেন, সেদিন যারা এসেছিল তারা মোখলেসুর রহমানের লোক বলে পরিচয় দিয়েছিল। সেদিন মোখলেসুর রহমান আসেননি। আমি অশিক্ষিত মানুষ ওই দিনের ঘটনায় ভুল করে তার নাম লেখা হয়েছে। আমি এজন্য ক্ষমা চাচ্ছি’।
সাংবাদিক সম্মেলনে অভিযোগের ব্যাপারে চাঁপাইনবাবগঞ্জ পৌরসভার মেয়র মোখলেসুর রহমান গণমাধ্যমকে বলেন, ‘মনিরুলের অভিযোগ ভিত্তিহীন। বরং মনিরুল পৌরসভার যায়গা দখল করে অবৈধভাবে দোকান ঘর নির্মাণ করলে পৌরসভার দু’ কর্মচারী বাধা প্রদান করে এবং মুনিরুল ও তার লোকজন পৌরসভার দু’ কর্মচারীকে মারধর করে আহত করে। এঘটনায় পৌরসভার প্যানেল মেয়র সালেহ উদ্দীন বাদি হয়ে সদর থানায় অভিযোগ দায়ের করেন । প্রকৃত ঘটনা আড়াল করে আমাকে মিথ্যে অভিযোগে জড়ানো উদ্দেশ্য প্রণোদিত’।
চাঁপাইনবাবগঞ্জ নিউজ/ নিজস্ব প্রতিবেদক/ ২৫ অক্টোবর, ২০২২
সাংবাদিক সম্মেলনে চাঁপাইনবাবগঞ্জ পৌর মেয়রের লোকজনের বিরুদ্ধে মারধরের অভিযোগ ॥ মেয়র বললেন, প্রকৃত ঘটনা আড়াল করতে মিথ্যে তথ্য উপস্থাপন