চাঁপাইনবাবগঞ্জে মাদক মামলার ১২ বছর পলাতক আসামিসহ ৭ জন আটক


চাঁপাইনবাবগঞ্জে মাদক মামলায় ১২ বছর পালিয়ে থাকা ওয়ারেন্টভুক্ত আসামি আজহার আলী আপেল (৪১) তার ৬ সহযোগিসহ গাঁজা ও ইয়াবা নিয়ে র‌্যাবের হাতে আটক হয়েছে। আটককৃতরা হলো- শিবগঞ্জ উপজেলার জালমাছমারী এলাকার ও রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের শরীর চর্চা অনুষদের সাবেক পরিচালক মৃত আবেদ আলীর ছেলে আজহার আলী আপেল (৪১), আতাহার আলীর ছেলে ও আপেলের ভাতিজা সাদমান শাকিব আলী (২০), দৌলতপুর উপরটোলা গ্রামের মৃত আবু বক্কর সিদ্দিকের ছেলে আসিফ আলী নিশান (২৬), উজিরপুর ডাকাতপাড়া গ্রামের মজিবুর রহমানের ছেলে মো. জাহির (৩৫), সেলিমাবাগ গ্রামের মৃত ধনা মমিনের ছেলে রানাউল হক (৩১), দৌলতপুর মহাজনপাড়ার মৃত সিরাজুল ইসলামের ছেলে মাসুদ রানা ইয়াসিন (৪২), তার ছেলে শাহরিয়ার নাজিম জয় (২২)।
শুক্রবার বেলা ১১টার দিকে চাঁপাইনবাবগঞ্জ র‌্যাব ক্যাম্পে আয়োজিত প্রেসব্রিফিংয়ে এই তথ্য জানান, কোম্পানী কমান্ডার মেজর সানরিয়া চৌধুরী।
তিনি সাংবাদিকদের জানান, মাদক মামলায় ১২ বছর পালিয়ে থাকা ওয়ারেন্টভুক্ত আসামি আজহার আলী আপেলের স্ত্রী তাজনুভা তাজরিন অভির অভিযোগের ভিত্তিতে আপেলসহ তার মাদক সরবরাহকারী আসিফ আলী নিশান ও আপেলের আমেরিকা প্রবাসী ভাইয়ের ছেলে সাদমান শাকিব আলীকে শিবগঞ্জে থেকেজ আটক করে র‌্যাব। পরে তাদের দেয়া তথ্যে, শিবগঞ্জের বিভিন্ন এলাকা থেকে শুক্রবার সকালে আরও ৪ মাদক ব্যবসায়ীকে আটক করা হয়েছে। তাদের কাছ থেকে বিপুল পরিমান ইয়াবা, ৪টি বিভিন্ন ব্যাংকের এটিএম কার্ড ও জাল টাকা জব্দ করা হয়।
এরপর বেরিয়ে আসে আপেলের ভয়াবহ মাদকের কাহিনী।
র‌্যাব-৫, সিপিসি-১ চাঁপাইনবাবগঞ্জ ক্যাম্পের কোম্পানি কমান্ডার মেজর সানারিয়া চৌধুরী আরও বলেন, সাবেক শিকের ছেলে আপেলের কাছ থেকে ৪টি বিভিন্ন ব্যাংকের এটিএম কার্ড জব্দ করা হয়েছে। এইচএসসি পাশ করার পরই ২০০০ সালে বাড়ির অসম্মতিতে প্রেম করে বিয়ে করে আপেল। মাদকাসক্তির কারনে বিচ্ছেদ ঘটে তাদের। মাদক মামলা থেকে বাঁচতে বিদেশে পালিয়ে যায় আপেল। পরে ২০১৫ সালে দেশে ফিরে আরো একজনকে বিয়ে করে এবং ৬ মাসের মধ্যে বিচ্ছেদ হয়।  ২০১৭ সালে আপেল হিরোইনে আসক্ত হয়ে পড়েন। পরে ২০১৮ ঢাকায় একটি পুর্নবাসন কেন্দ্রে ভর্তি করা হলেও সেখান থেকে পালিয়ে যায়। ২০১৯ সালে তাজনুভা তাজরিন অভিকে বিয়ে করে। বিয়ের ২ মাসের মধ্যেই তাদের বিচ্ছেদ ঘটে। রাজশাহীর বোয়ালিয়া থানায় নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে মামলা করেন অভি। এছাড়াও ২০১০ সালের একটি মাদক মামলায় ওয়ারেন্টভুক্ত পলাতক আসামী আপেল।
এদিকে সংবাদ সম্মেলনে আপেলের সাবেক স্ত্রী তাসনুভা তাজরিন অভি বলেন, তাকে (আপেল) কে বিয়ে করে অনেক বড় ভুল করেছি। সে আমার সকল গহনা বিক্রি করে মাদক সেবন করতো। আমাকে নানাভাবে শারীরিক ও মানসিক নির্যাতন করতো। এমনকি আমার পেটে থাকা সন্তানকেও হত্যা করেছে। আমি এর নায্য বিচার চাই।
এবিষয়ে শিবগঞ্জ থানায় মামলা দায়ের প্রক্রিয়াধীন রয়েছে বলে জানায় র‌্যাব।

চাঁপাইনবাবগঞ্জ নিউজ/ নিজস্ব প্রতিবেদক/ ০৭ জানুয়ারি, ২০২২