শিবগঞ্জে বীর মুক্তিযোদ্ধাকে লাঞ্ছিত করার ঘটনায় আওয়ামী লীগ নেতার বিচারের দাবিতে সাংবাদিক সম্মেলন


চাঁপাইনবাবগঞ্জের শিবগঞ্জ উপজেলায় মহান বিজয় দিবসে উপজেলা প্রশাসন আয়োজিত বীর মুক্তিযোদ্ধা সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে বীর মুক্তিযোদ্ধা বজলুর রশিদ সনুকে লাঞ্ছিত করার অভিযোগ এনে শিবগঞ্জ উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আতিকুল ইসলাম টুটুল খানের বিচারের দাবিতে সাংবাদিক সম্মেলন করেছেন মুক্তিযোদ্ধারা। বৃহস্পতিবার বিকেলে চাঁপাইনবাবগঞ্জ সাধারণ পাঠাগার মিলনায়তনে জেলার সর্বস্তরের বীর মুক্তিযোদ্ধার ব্যানারে আয়োজিত সাংবাদিক সম্মেলনে এই দাবি জানানো হয়।
সাংবাদিক সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন, শিবগঞ্জ উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা সংসদের উপজেলা কমান্ডার বজলুর রশিদ সনু। লিখিত বক্তব্যে তিনি অভিযোগ করে বলেন, ‘মুক্তিযুদ্ধ চলাকালে ৭ নম্বর সেক্টরের অধিন আমি জীবনবাজি রেখে মুক্তিযুদ্ধে অংশ নিয়ে বিজয় অর্জন করেছি। আজ যখন আমার নেত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে দেশে সুশাসন প্রতিষ্ঠা হচ্ছে। মুক্তিযোদ্ধাদের জাতির শ্রেষ্ঠ সন্তানের মর্যাদা দেয়া হয়েছে তখন শিবগঞ্জ উপজেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক কমিটিতে স্বাধীনতা বিরোধী, লুটেরা ও ষড়যন্ত্রকারীদের পদ দিয়ে মুক্তিযুদ্ধের চেতনাকে নসাৎ করা করা হচ্ছে’।
তিনি অভিযোগ করেন, বিজয়ের দিনে বীর মুক্তিযোদ্ধাদের অনুষ্ঠানে জাসদ থেকে আসা বর্তমান শিবগঞ্জ উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আতিকুল ইসলাম টুটুল খান প্রকাশ্যে আমার সঙ্গে দুর্ব্যবহার করে আমার মাইকে কেড়ে নিয়ে আমাকে লাঞ্ছিত করে।
তিনি বলেন, ‘‘ আমাকে লাঞ্ছিত করার পর আমার বিরুদ্ধে টুটুল খান সাংবাদিক সম্মেলন করে মিথ্যে অভিযোগ আনেন যে, ‘আমি (বজলুর রশিদ সনু) শেখ হাসিনা সর্ম্পকে কটুক্তি করেছি’। এটি সম্পুর্ণ মিথ্যে অভিযোগ। আমি বঙ্গবন্ধু, শেখ হাসিনা, নৌকা সর্ম্পকে কোন কটুক্তিমূলক বক্তব্য দেয়নি। যা আমার ওই দিনের বক্তব্যের ভিডিও কিপ দেখলেই পাওয়া যাবে’’।
সাংবাদিক সম্মেলনে বীর মুক্তিযোদ্ধা বজলুর রশিদ সনু আতিকুল ইসলাম টুটুল খানের বিচার চেয়ে ওই ঘটনার প্রশাসনিক তদন্ত দাবি করেন।
সাংবাদিক সম্মেলনে অন্যান্যের মাঝে উপস্থিত ছিলেন, চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলা মুক্তিযোদ্ধা সংসদের সাবেক ডেপুটি কমান্ডার আলফাজ উদ্দীন, চাঁপাইনবাবগঞ্জ সদর উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা সংসদের সাবেক কমান্ডার খাইরুল ইসলাম, বীর মুক্তিযোদ্ধা ( গেরিলা) সাইফুল হক, বীর মুক্তিযোদ্ধা নুরুল হক, ইসাহাক আলী, নুরুল হক, কানসাট ইউনিয়ন মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডার আবুল হোসেনসহ বেশ কয়েকজন বীর মুক্তিযোদ্ধা।
শেখ হাসিনার সিদ্ধান্ত অমান্য করে দুর্লভপুর ইউনিয়নে বিদ্রোহী প্রার্থী হয়েছেন কেন সাংবাদিকদের এমন প্রশ্নের জবাবে বজলুর রশিদ সনু বলেন, ‘ নৌকার প্রতি সম্মান আমার রয়েছে। আমি দুর্লভপুর ইউনিয়নের দু’ দুবারের চেয়ারম্যান। জনগনের চাহিদা ও দাবির প্রেক্ষিতে আমি স্বতন্ত্র প্রার্থী হয়ে নির্বাচনে অংশ নিয়েছি’। তিনি অভিযোগ করেন নির্বাচনে অংশ নেয়ার আক্রশ থেকেই আমাকে টুটুল খান লাঞ্ছিত করেছে এবং আমাকে মাতাল বলে সামাজিকভাবে হেয় প্রতিপন্ন করেছে।
এব্যাপারে আতিকুল ইসলাম টুটুল খানের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, ‘ বজলুর রশিদ সনু বহুমাত্রিক লোক। বিজয় দিবসের অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী ও দলীয় নির্বাচন নিয়ে বাজে মন্তব্য করায় তার বক্তব্য বন্ধ করে দেয়া হয়েছে’।

চাঁপাইনবাবগঞ্জ নিউজ/ নিজস্ব প্রতিবেদক/ ২৩ ডিসেম্বর, ২০২১