শিবগঞ্জের পাঁকা ফেরিঘাটে নৌকায় পার না হলেও দিতে হচ্ছে টোল
চাঁপাইনবাবগঞ্জের শিবগঞ্জ উপজেলার পাঁকা পদ্মা ফেরিঘাটে সরকারি নিয়মনীতির তোয়াক্কা না করে সাধারণ মানুষকে জিম্মি করে অতিরিক্ত টোল আদায়ের অভিযোগ করা হয়েছে। বুধবার সকালে চাঁপাইনবাবগঞ্জ প্রেসকাবে পাঁকা ইউনিয়নবাসীর ব্যানারে আয়োজিত এক সংবাদিক সম্মেলনে এ অভিযোগ করা হয়।
পাঁকা এলাকাবাসীর পক্ষে সাংবাদিক সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন, মামুন অর রশিদ। সাংবাদিক সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে বলা হয়, শিবগঞ্জের পদ্মা নদী তীরবর্তী চরাঞ্চলের পাঁকা ইউনিয়নের শত শত মানুষ ফেরিঘাট দিয়ে যাতায়াত করেন। নদীঘাটে টোল আদায়ের চার্ট টাঙ্গানো না থাকায় সরকার নির্ধারিত টোলের চেয়ে অনেক বেশি টাকা আদায় করা হচ্ছে। ট্রাক্টরসহ ফসল মারা (কর্তন) মেশিন পদ্মানদী পার হতে গেলে ১০,০০০/= টাকা থেকে ১২,০০০/= টাকা জোর করে আদায় করা হয়। একইভাবে গরীব ফেরিওয়ালাদের কাছ থেকে ভাংড়ি মালামাল প্রতি নৌকায় পার হতে ১২,০০০/= টাকা অবৈধভাবে জোরপুর্বক আদায় করা হয়। হালচাষ করা ট্রাক্টর থেকে ৪,৫০০/= টাকা, কাপড়ের বান্ডিল থেকে ৫০০/= টাকা, একটি সোলার থেকে ১৫০/= টাকা, একটি টিউবয়েল থেকে ১০০/= টাকা, এক কার্টুন ঔষুধ যার ওজন ১০ কেজি তা থেকে ১০০০/= টাকা, ৫০ কেজির প্রতি বস্তা সার থেকে ৩০/= টাকা, তেলের জারকিন যার ওজন ৭০ লিটার তা থেকে ৬০/= টাকা, এক বান ঢেউ টিন ৫০/= টাকা, প্রতিটি ডাব ২/= টাকা হরে আদায় করা হয়। এরবাইরে আসবাবপত্র যেমন খাট, চেয়ার, টেবিল, আলনা, আলমিরাসহ অন্যান্য মালামাল পার পথে অন্যায়ভাবে জোরপুর্বক অতিরিক্ত টাকা আদায় করা হয়।
সাংবাদিক সম্মেলনে অভিযোগ করা হয়, অবৈধ টাকা উত্তেলন বন্ধে জেলা প্রশাসক, উপজেলা চেয়ারম্যান. উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাসহ অন্যান্যদের কাছে অভিযোগ দেয়া হলেও কোন পদক্ষেপ গ্রহণ করা হয়নি। বরং অবৈধ টোল আদায়ের বিরুদ্ধে গত ১ মার্চ প্রতিবাদ জানাতে গিয়ে সংসদ সদস্য ডা. সামিল উদ্দীন আহম্মেদ শিমুলের লোকজনের হামলার শিকার হয়েছেন এলাকাবাসী।
অভিযোগের ব্যাপারে জামাল উদ্দীন জামাল মেম্বারের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, ‘ আমরা অনেক টাকা দিয়ে ভরা নদীর ঘাট কিনেছি। এখন নদীর পানি শুকিয়ে ঘাট দূরে সরে গেছে। আমরা টোল আদায় করতে গেলে তারা বলছে, যেহেতু নৌকায় পার হচিছনা পায়ে হেটে যাতায়াত করছি তাই টাকা দেবোনা।
শিবগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সাকিব আল রাব্বী বলেন ‘ সমস্যাটি নিয়ে গত ১ মার্চ তারিখে ইজারাদার ও এলাকাবাসী আমার অফিসে বসে তারাই একটা সমঝোতা করেছেন। টোলের চার্ট টাঙ্গানো আছে। আমরা উদ্যোগ নিয়েছি এখন থেকে চার্ট টাঙ্গানোও থাকবে এবং শ্লিপও থাকবে। যা আগামী ৩০ চৈত্র তারিখ থেকে কার্যকর হবে’।
অভিযোগের ব্যাপারে সংসদ সদস্য ডা. সামিল উদ্দীন আহম্মেদ শিমুলের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, ‘ ইজারা দেয়ার সঙ্গে আমার কোন সম্পর্ক নেই। ইজারা দিয়েছে উপজেলা পরিষদ। আমার কোন আত্মীয় স্বজনকেও ইজারা দেয়া হয়নি। রাজনৈতিক উদ্দেশ্য হাসিলের জন্য আমার নাম ব্যবহার করা হচ্ছে’।
চাঁপাইনবাবগঞ্জ নিউজ/ নিজস্ব প্রতিবেদক/ ০৩-০৩-২১