স্বজনদের নির্মমতায় রেলস্টেশনে শতবর্ষীর বৃদ্ধার ঠাই
চাঁপাইনবাবগঞ্জের গোমস্তাপুর উপজেলার রহনপুর রেলওয়ে স্টেশনে শতবর্ষী এক বৃদ্ধ মাকে মৃত্যুর মুখে রেখে দিয়ে পালিয়েছে পাষন্ড স্বজনরা। কনকনে ঠান্ডায় টানা ১৪ দিন প্লাটফর্মে থাকার পর রবিবার রাতে ওই বৃদ্ধ মাকে উদ্ধার করে নেয়া হয়েছে হাসপাতালে। সেখানে সে এখন মৃত্যুর সঙ্গে পাঞ্জা লড়ছেন।
গোমস্তাপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে সোমবার সকালে গিয়ে দেখা গেছে, বয়স তাঁর ৮০, ৯০ কিংবা একশোর্দ্ধ। মুখজুড়ে বালিরেখাগুলো ষ্পষ্ট বয়সের এমন ছাপই জানান দেয়। হাসপাতালের বিছানায় কখনও অচেতন, আবার কখনও চেতন এই বৃদ্ধ মায়ের চোখের ভাষা জানান দেয়, একসময় পরিবারে কতই না অনন্য অবদান রেখেছিলেন। হয়তো সেদিন এই মমতাময়ী মা জানতো না, একদিন সে সে পরিবারের বোঝা হয়ে উঠবেন। তেমনটাই হয়েছে, চাঁপাইনবাবগঞ্জের গোমস্তাপুর উপজেলার কোন এক এলাকার অজ্ঞাত এই মায়ের সঙ্গে। বরেন্দ্র অঞ্চলের বাণিজ্যিক এলাকা রহনপুর রেলওয়ে স্টেশনে প্রায় ১৫ দিন আগে তাঁকে ফেলে গেছিল তাঁর স্বজনরা।
রহনপুর রেলওয়ে স্টেশন এলাকার ক্ষুদ্র ব্যবসায়ী সিরাজুল ইসলাম বলেন, ‘ ওই দিন আমি স্টেশনেই ছিলাম, দেখলাম কয়েকজন ভ্যানে করে মহিলাটিকে নিয়ে এসে স্টেশনে রেখে দিলো। জিজ্ঞাস করলাম কি ব্যাপার তো তারা কোন কথা বলল না, টান দিয়ে ভ্যান নিয়ে চলে গেল। পরে আমি মেয়েটাকে উঠিয়ে বিশাল স্টেশনের তেঁতুল গাছের পাশের পরিত্যক্ত ছাউনির নিচে এনে রাখলাম’। তিনি বলেন, ‘ কিছু খড় ও পুরোনো কম্বল দিয়ে তাকে বিছানা করে রেখেছিলাম। সাধ্যমত সেবাযত্ন করেছিলাম’।
চলমান শৈত্য প্রবাহে কনকনে ঠান্ডায় অসহনীয় যন্ত্রণা আর মৃত্যুর মুখে পড়ে থাকা বয়স্ক মায়ের খবর স্থানীয় প্রশাসনের কাছে গেলে রোববার রাতে তাঁকে উদ্ধার করে নেয়া হয় গোমস্তাপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে। রাতভর চিকিৎসায় কিছুটা সুস্থ্য হলেও শংকামুক্ত নন বলে জানিয়েছেন চিকিৎসকরা।
গোমস্তাপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের চিকিৎসক সালাউদ্দীন বলেন, ‘রবিবার রাত ১০টার দিকে তাঁকে আমরা গ্রহণ করি। তখন তাঁর প্রচণ্ড খারাপ অবস্থা ছিল। ভাইটাল সাইনগুলো বিপি, প্লাস এইগুলো খুবই কম ছিল। আমরা তাঁকে চিকিৎসা দিচ্ছি। সোমবার সকালে তার অবস্থার উন্নতি হয়েছে। তবে, তাঁর কনসাস লেভেলটা স্বাভাবিক পর্যায়ে নেই’।
অমানবিক এই ঘটনার খবর পেয়ে বৃদ্ধা মায়ের পাশে এখন এগিয়ে এসেছেন অনেকেই। উপজেলা প্রশাসন, ও পুলিশ প্রশাসনের পাশাপাশি রহনপুর পৌরসভাও দ্বায়িত্ব নিয়েছেন চিকিৎসাসহ অনান্য বিষয়ে। রহনপুর পৌরসভার মেয়ে তারেক আহমেদ বলেন, ‘ ঘটনাটি খুবই অমানবিক। যতদিন ওই মায়ের পরিচয় নিশ্চিত হওয়া যাচ্ছে ততদিন শুধু মেয়র হিসেবে নয়, একজন সন্তান হিসেবে তাঁর পাশে থাকবো’।
রহনপুর পৌরসভার পক্ষ থেকে মালতি বেগম নামের এক মহিলাকে ওই মাকে দেখাশুনার জন্য নিয়োজিত করা হয়েছে। হাসপাতালে সেই স্বার্বক্ষণিক দেখাশুনা করছেন। তিনি বলেন, ‘ মাঝে মধ্যে বৃদ্ধার যখন চেতনা ফিরে পাচ্ছেন তখন একরাশ ঘৃণা প্রকাশ করছেন স্বজনদের প্রতি। হাত দিয়ে ইশারা করে দূরে সরে যেতে বলছেন’।
এদিকে, শতবর্ষী এই বৃদ্ধার উপর এমন নির্দয় আচরণে স্থানীয়রা চরম ক্ষোভ জানিয়ে পরিবারকে খুঁজে বের করে শাস্তিও দাবি করেছেন।
চাঁপাইনবাবগঞ্জ নিউজ/ নিজস্ব প্রতিবেদক/ ১৩-০১-২০
গোমস্তাপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে সোমবার সকালে গিয়ে দেখা গেছে, বয়স তাঁর ৮০, ৯০ কিংবা একশোর্দ্ধ। মুখজুড়ে বালিরেখাগুলো ষ্পষ্ট বয়সের এমন ছাপই জানান দেয়। হাসপাতালের বিছানায় কখনও অচেতন, আবার কখনও চেতন এই বৃদ্ধ মায়ের চোখের ভাষা জানান দেয়, একসময় পরিবারে কতই না অনন্য অবদান রেখেছিলেন। হয়তো সেদিন এই মমতাময়ী মা জানতো না, একদিন সে সে পরিবারের বোঝা হয়ে উঠবেন। তেমনটাই হয়েছে, চাঁপাইনবাবগঞ্জের গোমস্তাপুর উপজেলার কোন এক এলাকার অজ্ঞাত এই মায়ের সঙ্গে। বরেন্দ্র অঞ্চলের বাণিজ্যিক এলাকা রহনপুর রেলওয়ে স্টেশনে প্রায় ১৫ দিন আগে তাঁকে ফেলে গেছিল তাঁর স্বজনরা।
রহনপুর রেলওয়ে স্টেশন এলাকার ক্ষুদ্র ব্যবসায়ী সিরাজুল ইসলাম বলেন, ‘ ওই দিন আমি স্টেশনেই ছিলাম, দেখলাম কয়েকজন ভ্যানে করে মহিলাটিকে নিয়ে এসে স্টেশনে রেখে দিলো। জিজ্ঞাস করলাম কি ব্যাপার তো তারা কোন কথা বলল না, টান দিয়ে ভ্যান নিয়ে চলে গেল। পরে আমি মেয়েটাকে উঠিয়ে বিশাল স্টেশনের তেঁতুল গাছের পাশের পরিত্যক্ত ছাউনির নিচে এনে রাখলাম’। তিনি বলেন, ‘ কিছু খড় ও পুরোনো কম্বল দিয়ে তাকে বিছানা করে রেখেছিলাম। সাধ্যমত সেবাযত্ন করেছিলাম’।
চলমান শৈত্য প্রবাহে কনকনে ঠান্ডায় অসহনীয় যন্ত্রণা আর মৃত্যুর মুখে পড়ে থাকা বয়স্ক মায়ের খবর স্থানীয় প্রশাসনের কাছে গেলে রোববার রাতে তাঁকে উদ্ধার করে নেয়া হয় গোমস্তাপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে। রাতভর চিকিৎসায় কিছুটা সুস্থ্য হলেও শংকামুক্ত নন বলে জানিয়েছেন চিকিৎসকরা।
গোমস্তাপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের চিকিৎসক সালাউদ্দীন বলেন, ‘রবিবার রাত ১০টার দিকে তাঁকে আমরা গ্রহণ করি। তখন তাঁর প্রচণ্ড খারাপ অবস্থা ছিল। ভাইটাল সাইনগুলো বিপি, প্লাস এইগুলো খুবই কম ছিল। আমরা তাঁকে চিকিৎসা দিচ্ছি। সোমবার সকালে তার অবস্থার উন্নতি হয়েছে। তবে, তাঁর কনসাস লেভেলটা স্বাভাবিক পর্যায়ে নেই’।
অমানবিক এই ঘটনার খবর পেয়ে বৃদ্ধা মায়ের পাশে এখন এগিয়ে এসেছেন অনেকেই। উপজেলা প্রশাসন, ও পুলিশ প্রশাসনের পাশাপাশি রহনপুর পৌরসভাও দ্বায়িত্ব নিয়েছেন চিকিৎসাসহ অনান্য বিষয়ে। রহনপুর পৌরসভার মেয়ে তারেক আহমেদ বলেন, ‘ ঘটনাটি খুবই অমানবিক। যতদিন ওই মায়ের পরিচয় নিশ্চিত হওয়া যাচ্ছে ততদিন শুধু মেয়র হিসেবে নয়, একজন সন্তান হিসেবে তাঁর পাশে থাকবো’।
রহনপুর পৌরসভার পক্ষ থেকে মালতি বেগম নামের এক মহিলাকে ওই মাকে দেখাশুনার জন্য নিয়োজিত করা হয়েছে। হাসপাতালে সেই স্বার্বক্ষণিক দেখাশুনা করছেন। তিনি বলেন, ‘ মাঝে মধ্যে বৃদ্ধার যখন চেতনা ফিরে পাচ্ছেন তখন একরাশ ঘৃণা প্রকাশ করছেন স্বজনদের প্রতি। হাত দিয়ে ইশারা করে দূরে সরে যেতে বলছেন’।
এদিকে, শতবর্ষী এই বৃদ্ধার উপর এমন নির্দয় আচরণে স্থানীয়রা চরম ক্ষোভ জানিয়ে পরিবারকে খুঁজে বের করে শাস্তিও দাবি করেছেন।
চাঁপাইনবাবগঞ্জ নিউজ/ নিজস্ব প্রতিবেদক/ ১৩-০১-২০