বৃষ্টিতে আম চাষীর কপালে চিন্তার ভাঁজ

চাঁপাইনবাবগঞ্জে এ বছর আমের ব্যাপক মুকুল আসলেও গত দুইদিনের বৃষ্টিতে দুশ্চিন্তায় পড়েছেন চাষীরা। চাষীরা বলছেন- বৃষ্টি ও মেঘলা আবহাওয়ার কারণে উল্লেখযোগ্য পরিমান মুকুল নষ্ট হয়ে গেছে। যা, আম উৎপাদনে নেতিবাচন প্রভাব ফেলবে। তবে কৃষি বিভাগ বলছে, বৃষ্টিতে মুকুলের যে ক্ষতি হয়েছে, বৃষ্টিশেষে ঝলমলে রোদ হলে ক্ষতি কাটিয়ে উঠা যাবে।
বৃহস্পতিবার আম চাষীদের সঙ্গে কথা বলে জানাগেছে, মৌসুমের শুরু অর্থাৎ মাঘের শেষ ও ফাল্গুনের প্রথম সপ্তাহে আবাহাওয়া অনুকূলে থাকায় এবার আমের গাছে গাছে ব্যাপক মুকুল এসেছে। কৃষি বিভাগের তথ্য অনুযায়ী ৮৫ শতাংশেরও বেশি গাছ মুকুলিত হয়েছে এ বছর। কিন্তু পরপর দুইদিন থেমে থেমে বৃষ্টি আর টানা মেঘলা আবহাওয়ায় কপালে চিন্তার ভাঁজ ফেলেছে আম চাষীদের।
দুইদিনের বৃষ্টিতে যে অনেক মুকুল ঝরে গেছে, তা গাছ তলায় গেলেই বোঝা যায়। পুরো বাগান জুড়ে ছড়িয়ে আছে মুকুল। চাষীরা বলছেন, এই সময়ে বৃষ্টি বা মেঘলা আবহাওয়া মুকুলের জন্য অত্যন্ত ক্ষতিকর। সদর উপজেলার মাঝপাড়ার আম ব্যবসায়ী আব্দুর রহমান ও সাদেকুল ইসলামসহ আরো কয়েকজন জানান, দুইদিনের বৃষ্টিতে মুকুল ঝুরে গেছে। পাশাপাশি মুকুলে পানি জমে থাকায় এবং তাপমাত্রা কম থাকায় ওই মুকুলে গুটি আসবে না। আবহাওয়া খারপের জন্য হাতাশায় আছি আমরা। এখন পরিচর্যা করেও কোনো লাভ হবে না।
চাঁপাইনবাবগঞ্জ কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক মোঃ মঞ্জুরুল হুদা জানান, বুধবার ও বৃহস্পতিবার ৪৫ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়েছে চাঁপাইনবাবগঞ্জে। বৃষ্টি এবং মেঘলা আবহাওয়ার কারণে কিছু মুকুলের ক্ষতি হবে। কোনো কোনো এলাকায় ছত্রাক বা হপার পোকার আক্রমনও দেখা দিতে পারে। তবে বৃষ্টি শেষে রোদ থাকলে আর কিছু পরিচর্যা করলে আমের ফলনে কোনো প্রভাব পড়বে না। তিনি বলেন, বৃষ্টি হওয়ায় আমের মুকুলটা ভেজা আছে। এখন একটু মেঘলা আবহাওয়া, এতে আমের হপার ও অ্যানথ্রাক্সনোজ সমস্যা দেখা দিবে। তবে যদি রোদ পেয়ে যায়, আমের মুকুল পাতা শুকিয়ে যায় তবে ছত্রাক ও হপার পোকার আক্রমন তেমন হবে না। যে সব মুকুল থেকে এরইমধ্যে গুটি হয়ে গেছে, সেগুলোর কোন সমস্যা হবে না। যে মুকুলগুলো দুইদিন, তিনদিন বা সাতদিন পরে ফুটবে সেগুলোও কোনো ক্ষতি হবে না। তবে বৃষ্টি দিনগুলোতে যে মুকুল থেকে গুটি হতো সেগুলো বাধাগ্রস্থ হতে পারে।
এ বছর চাঁপাইনবাবগঞ্জে আম বাগান রয়েছে, ৩১ হাজার ৮২০ হেক্টর জমিতে।

চাঁপাইনবাবগঞ্জ নিউজ/ নিজস্ব প্রতিবেদক/ ২৮-০২-১৯