চাঁপাইনবাবগঞ্জ-১❀ মাঠজুড়ে নৌকা ধানের শীষ ❀ অন্যদের দেখা নেই

আসন্ন একাদশ সংসদ নির্বাচন মাত্র এক সপ্তাহ বাকী। নির্বাচনকে কেন্দ্র করে দলীয় প্রার্থী ও সমর্থকদের ঘুম হারাম হয়ে গেছে। অবিরাম চলছে প্রচার অভিযান। ৪৩ চাঁপাইনবাবগঞ্জ-১ শিবগঞ্জ আসনটি উত্তরবঙ্গের অতিব গৃরুত্বপূন আসন। কারণ স্বাধীনতা উত্তরকালে এ আসনটি ছিল  জামায়াত বিএনপির দখলে। প্রথম বিদ্যুৎ প্রতিমন্ত্রী বিগ্রেডিয়ার মুক্তিযোদ্ধা এনামুল দলের লবিং-গ্রুপিংএর অবসান ঘটিয়ে ২০০৮সালে আসনটি আওয়ামীলীগের দখলে নিয়ে  আসেন। এ পর্যন্ত আসনটি দখলে থাকলেও ২০১৩-১৪ সালে জামায়াত বিএনপি আন্দোলনের সময় তাদের তান্ডবে আওয়ামীলীগ সমর্থকরা নেতাদের কাছে না পেয়ে অসহায় হয়ে পড়লে দলের অবস্থা নাজুক হয়ে পড়ে। ফলে প্রার্থী ও তার সমর্থকদের কিছুটা হিমশিম খেতে হচ্ছে বলে একাধিক সূত্রে জানা গেছে। তবে কেটে উঠার জন্য প্রাণ-পণ চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে।  এ আসনটি প্রার্থী ৪ জন থাকলেও মূলত লড়াই হবে মহাজোট প্রার্থী আওয়ামীলীগ সমর্থিত নৌকার প্রার্থী জেলা আওয়ামীলীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ডাক্তার সামিল উদ্দিন আহমেদ শিমুল ও ঐক্যজোট বিএনপি নেতা ধানের শীষের প্রার্থী অধ্যাপক শাহাজাহান আলি মিঞার  মধ্যে। পর পর  দুইবার আওয়ামীলীগের দখলে থাকা আসনটি ধরে রাখতে  আওয়ামী প্রার্থী ডাক্তার শিমুল তার সমর্থকদের নিয়ে মরিয়া হয়ে  উঠেছে। অবিরাম গণসংযোগ চালিয়ে যাচ্ছেন। জয়ের ব্যাপারে সুনিশ্চিত হতে তিনি  আওয়ামীলীগ সরকারের আমলের জঙ্গি, মাদক, সন্ত্রাস ও সাম্প্রদায়িকতা রোধের মাধ্যমে শিবগঞ্জকে শান্তির জনপদে পরিণত করা ও বিধবা, পরিত্যক্ত, বয়স্ক, প্রতিব›্ধী ভাতা, এতিম ও অসহায়দের পূর্নবাসন, রাস্তাঘাট নির্মানও সংস্কার,শিক্ষাক্ষেত্রে  শিক্ষার্থী ও শিক্ষকদের সুযোগ সুবিধা, বিদ্যুৎ উন্নয়ন ব্রীজ কালভাটসহ সব ধরণের যোগাযোগ ব্যবস্থা উন্নয়নসহ বিভিন্ন ধরনের উন্নয়নের চিত্র তুলে ধরে ভোটারদের মন জয় করার চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন। তাছাড়া তিনি দীর্ঘদিন যাবত উপজেলার প্রত্যান্ত অঞ্চলে ফ্রি চিকিৎসা প্রদান বিশেষ করে মহিলা ভোটারদের ক্ষেত্রে ব্যাপক সাড়া জাগিয়েছে বলে বিভিন্ন সূত্রে জানা গেছে। সবমিলিয়ে তিনি তার পাশের ব্যাপারে পুরা আশাবাদী।
অন্যদিকে শিবগঞ্জ আসনে পর পর ৬ বার নির্বাচিত ঐক্যজোটের পক্ষ থেকে বিএনপির চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার উপদেষ্টা বিএনপি নেতা  ধানের শীষের প্রার্থী অধ্যাপক শাহাজাহান আলি মিঞা আসনটি পুনরুদ্ধারে তার বিশাল বাহিনী নিয়ে মাঠ চুষে বেড়াচ্ছেন। প্রতিনিয়নতই তার পুরাতন ভোট  ব্যাংকগুলোতে গিয়ে গিয়ে বিএনপি ও জামায়াত সমর্থিত ভোটের নিকট সাক্ষাত করে পুরাতন ঐতিহ্য ফিরিয়ে আনতে চেষ্টার ত্রুটি নেই। গণসযোগের সময় তিনি তার আমলের শিবগঞ্জের বিভিন্ন ক্ষেত্রে  উন্নয়নের চিত্র তুলে ধরে ধরছেন এবং বর্তমান সরকারের আমলে  বিএনপির নেতা কর্মীদের উপর হামলা মামলা ও নির্যাতনের চিত্র তুলে ধরছেন এবং এখান থেকে বাঁচার জন্য একটাই পথ হলো সরকার পরিবর্তন। তাই তিনি তার দলীয় নেতাকর্মীদের নিয়ে জনগণকে বুঝাতে চেষ্টা করছেন যে বর্তমান সরকার বা আওয়ামীলীগ বিএনপির অস্তিত্ব বিলীন করতে বিভিন্ন ষড়যন্ত্রের মাধ্যমে আমাদের ভোট প্রচারে বাধা দিয়ে আসছে।
তবে তাদের অভিযোগ আওয়ামীলীগের পক্ষ থেকে অস্বীকার করেছেন। নির্বাচনী গণসংযোগে তিনি বেগম খালেদা জিয়ার দর্দূর্শার কথা তুলে ধরছেন। সংগে সংগে তিনি জনগনের সামনে বিভিন্ন প্রুতিশ্রুতি দিচ্ছেন। গণসংযোগে তিনি বলছেন যদি শিবগঞ্জ ধানের শীর্ষ প্রতীন নিয়ে আমি  জয় লাভ করতে পারি এবং  বিএনপি সরকার গঠন করতে পারে তবে  তার আমলের উন্নয়নের চিত্র তুলে ধারার সাথে সাথে শিবগঞ্জ উপজেলার ননএমপিভুক্ত শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, রাস্তাঘাট নির্মান,সংস্কার ও ব্রীজ কালভাট তৈরী, বেকার সমস্যর সমাধান ও শিবগঞ্জকে কৃষি  ও শিক্ষাবান্ধব হিসাবে গড়ে তুলতে সব ধরনের পদক্ষেপ গ্রহন করবো। ইনশাল্লাহ। তার  গণসংযোগ বিএনপি জামায়াত কর্মীদের সাড়া জাগানোর মধ্যে ভোটারদের  মন জয় করতে সক্ষম হয়েছেন এবং তিনি ও তার সমর্থকদের শতভাগ আশা বিপুল ভোটের ব্যাবধানে ধানের শীর্ষ নিয়ে জয় লাভ করবো  ইনশাল্লাহ।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক কয়েকজন বিনএনপির নেতা জানান, যদি নির্বাচন সুষ্ঠু হয় এবং ভোটার গন ভোট  দিতে পায় তবে বিএনপি নেতা শাহাজাহান মিঞ্রা বিপুর ভোটের ব্যাবধানে জয়ী হবে। কারণ হিসাবে তারা বলেন অতীতে যে কোন নির্বাচনে (শুধু ২০০৮ সাল ছাড়া) বিএনপি বিপুর ভোটের ব্যবধানে পাস করেছে। অতীতে আমাদের যে ভোট ব্যাংক ছিল তা এখনো বিদ্যামান রয়েছে। দলে কোন লবিংগ্রুপির নেই। তাছাড়া আমাদের কর্মীরা সবসময় কর্মঠই থাকে। তাদের আরো একটি জোরালা দাবী হলো শিবগঞ্জে জামায়াতের একটি বড় অংকের ভোট ব্যাংক আছে এবং শিবগঞ্জের  জামায়াত বিএনপির ওৎপ্রতভাবে জড়িত। তাই তাদের যে প্রায় ৬৫/৭০হাজার ভোট আছে তা ধানের শীর্ষের অনুকুলেই আসবে। সবমিলিয়ে আমারা আশাবাদী  শিবগঞ্জে আমাদের জয় সুনিশ্চিত।
অন্যদিকে আওয়ামীলীগের রাজনীতিতে একদিকে চলছে জোরালা গনসংযোগ ও প্রচার অভিযান। অন্যদিকে দলের লবিংএর জের এখনো কাটেনি। মনোনয়ন বঞ্চিতরা এখনো সবাই সরাসরি মাঠে না নামায় বিরোধীপক্ষ কিছুটা হলে সুযোগ নিচ্ছে। নৌকার প্রার্থীর লোকজন বলছে আমরা বিভিন্ন ইউনিয়নে ঘুরে যে চিত্র পাচ্ছি তাতে দিন দিন উন্নতি হচ্ছে। কর্মীরা চাঙ্গা হয়ে উঠছে। বিশেষ করে মহিলা আওয়ামীলীগ অত্যান্ত সক্রিয় হয়ে উঠেছে। বিপুল ভোটের ব্যবধানে পাসের ব্যাপারে তারা প্রায় সুনিশ্চিত বলে জানায় আওয়ামী লীগনেরা।

চাঁপাইনবাবগগঞ্জ নিউজ/ নিজস্ব প্রতিবেদক শিবগঞ্জ/ ২২-১২-১৮

,