আপিল শুনানীর শুরুতেই চাঁপাইনবাবগঞ্জের নবাব > সেখানেও নবাব বাতিল > বৈধ হলেন যাঁরা

একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে মনোনয়নপত্র বাতিলের বিরুদ্ধে প্রার্থিতা ফিরে পেতে নির্বাচন কমিশনের আপিলের শুনানি বৃহস্পতিবার সকাল থেকে শুরু হয়েছে।
সকাল সাড়ে ১০টা থেকে মনোনয়নপত্র বাতিলের বিরুদ্ধে প্রার্থিতা ফিরে পেতে নির্বাচন কমিশনের আপিলের শুনানি শুরু হয়। প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) কে এম নুরুল হুদার নেতৃত্বাধীন কমিশন রাজধানীর আগারগাঁওয়ের নির্বাচন কমিশন ভবনের দশম তলায় স্থাপিত এজলাসে আপিল শুনানি শুরু হয়।
অনলাইন নিউজ পোর্টাল এনটিভিবিডি ডটকম -এর খবরে বলা হয়েছে, চাঁপাইনবাবগঞ্জ-১ আসনের নবাব মো. শামছুল হুদার আপিল শুনানি দিয়ে শুরু হয়। আপিলেও তাঁর মনোনয়নপত্র বাতিল করে নির্বাচন কমিশন। এরপর দুই নম্বরেই ছিল বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার বগুড়া-৭ আসনে দলের মনোনীত বিকল্প প্রার্থী মোরশেদ মিল্টনের আপিলের শুনানি। শুনানি শেষে তাঁর মনোনয়নপত্র বৈধ ঘোষণা করা হয়। এ সময় ঢাকা-২০ আসনের তমিজ উদ্দিনও প্রার্থিতা ফিরে পান।
কিশোরগঞ্জ-২ আসনে বিএনপির মনোনীত প্রার্থী মো. আখতারুজ্জামান রঞ্জন ও পটুয়াখালী-৩ আসনে মো. গোলাম মাওলা রনির মনোনয়নপত্র বৈধ ঘোষণা করা হয়েছে। সাবেক সংসদ সদস্য রনি সদ্যই আওয়ামী লীগ ছেড়ে বিএনপির মনোনয়নপত্র নেন। ঝিনাইদহ-২ আসনে মো. আবদুল মজিদ ও ঢাকা-১ আসনে খন্দকার আবু আশফাকের মনোনয়নপত্র বৈধ ঘোষণা করা হয়েছে।
মনোনয়নপত্র বৈধ হয়েছে জামালপুর-৪ আসনে মো. ফরিদুল কবির তালুকদার (শামীম) ও পটুয়াখালী-৩ আসনে মোহাম্মদ শাহজাহানের। প্রার্থিতা ফিরে পেয়েছেন পটুয়াখালী-১ আসনের মো. সুমন সন্যামতও।
মাদারীপুর-১ আসনের জহিরুল ইসলাম মিন্টু এবং সিলেট-৩ আসনের আবদুল কাইয়ুম চৌধুরীও আপিল করে ভোটের ময়দানে লড়াইয়ের যোগ্য হয়েছেন। একই সঙ্গে প্রার্থিতা ফিরে পেয়েছেন জয়পুরহাট-১-এর মো. ফজলুর রহমান ও মানিকগঞ্জ-২ আসনে মো. আবিদুর রহমান খান, গাজীপুর-২ আসনে মো. জয়নাল আবেদিন, ব্রাহ্মণবাড়িয়া-৬ আসনে জেসমিন নূর বেবী, রংপুর-৪ আসনে মোস্তফা সেলিম ও খুলনা-৬ আসনে এস এম শফিকুল আলম, সিরাজগঞ্জ-৩ আসনে মো. আইনাল হক।
আপিল করে ভোটের লড়াইয়ে ফিরতে পেরেছেন হবিগঞ্জ-১ আসনের জোবায়ের আহমেদ, ময়মনসিংহ-৭ আসনের মো. জয়নাল আবেদিন, ব্রাহ্মণবাড়িয়া-৩ আসনের আবদুল্লাহ আল হেলাল ও ময়মনসিংহ-২ আসনের মোহাম্মদ আবুবকর ছিদ্দিক।
৫০টি আপিলের শুনানি শেষে দুপুর ১২টার দিকে নির্বাচন কমিশন ১৫ মিনিটের বিরতিতে যায়। পরে আবার আপিলের শুনানি শুরু হয়।
এরপর আপিল করে প্রার্থিতা ফিরে পান শেরপুর-২ আসনের এ কে এম মুখলেছুর রহমান, হবিগঞ্জ-৪ মৌলানা মুহাম্মদ ছোলাইমান খান রব্বানী, নাটোর-৪ মো. আলাউদ্দিন মৃধা, বরিশাল-২ মো. আনিচুজ্জামান, কুড়িগ্রাম-৪ মো. ইউনুছ আলী, ঢাকা-৫ সেলিম ভুঁইয়া, কুমিল্লা-৩ কে এম মুজিবুল হক, মানিকগঞ্জ-১ মো. তোজাম্মেল হক, সিলেট-৫ ফয়জুল মুনির চৌধুরী, ময়মনসিংহ-৩ আহাম্মদ তায়েবুর রহমান, ঝিনাইদহ-৪ আবদুল মান্নান, ব্রাহ্মণবাড়িয়া-৫ মো. মামুনুর রশিদ, ব্রাহ্মণবাড়িয়া-৩ সৈয়দ আনোয়ার আহম্মদ লিটন, ঢাকা-১৪ মো. জাকির হোসেন, পঞ্চগড়-২ ফরহাদ হোসেন, মানিকগঞ্জ-৩ মো. আতাউর রহমান, ময়মনসিংহ-৮ এম এ বাশার, ঢাকা-১৪ সৈয়দ আবুবকর সিদ্দিক, কুড়িগ্রাম-৩ আবদুল খালেক, কুড়িগ্রাম-৪ মো. মাহফুজার রহমান, চট্টগ্রাম-৯ নুরুল আমিন, ব্রাহ্মণবাড়িয়া-১ মো. মুখলেছুর রহমান ও লক্ষ্মীপুর-১ আসনে মো. মাহাবুব আলম।
আপিল করে প্রার্থিতা ফিরে পেয়েছেন রংপুর-১ আসনে মো. আসাদুজ্জামান, গাইবান্ধা-৩ আসনে মো. আবু জাফর, কুড়িগ্রাম-৪ আসনে শাহ আলম, গাইবান্ধা-৩ আসনে মো. রফিকুল ইসলাম, গাইবান্ধা-৫ আসনে মো. নাজিমুল ইসলাম, যশোর-৬ আসনে সাইদুজ্জামান, নড়াইল -২ আসনে শওকত আলী, সিরাজগঞ্জ-৫ আসনে আবদুল্লাহ আল মামুন, নাটোর-৪ আসনে মো. আ. আজিজ, সিরাজগঞ্জ-৬ আসনে এম এ মুহিত, সিরাজগঞ্জ-৪ আসনে আবদুর রহমান, সিরাজগঞ্জ-৫ আসনে মেজর (অব.) মনজুর কাদের, বগুড়া-৫ আসনে আবদুর রউফ মন্ডল, সিরাজগঞ্জ-৬ আসনের হাবিবুর রহমান, বগুড়া-২ আসনে শফিকুল ইসলাম, বগুড়া-৬ আসনে মোহাম্মদ ফয়সাল, রাজশাহী-১ আসনে মো. আমিনুল হক, গাইবান্ধা-৪ আসনে রহিম সরকার, চট্টগ্রাম-৮ আসনে এরশাদ উল্লাহ, চট্টগ্রাম-১০ আসনে আনিছুর রহমান, চট্টগ্রাম-১৬ আসনে মো. জহিরুল ইসলাম, কুমিল্লা-৫ আসনে মো. শাহ আলম, কুড়িগ্রাম- ৩ আসনে আবদুল খালেক।
নির্বাচন কমিশনের পুনঃতফসিল অনুযায়ী ৩০ ডিসেম্বর ভোট গ্রহণ অনুষ্ঠিত হবে। গত ২৯ নভেম্বর ছিল মনোনয়নপত্র দাখিলের শেষ দিন। এরপর গত রোববার মনোনয়নপত্র বাছাই করা হয়। এদিন নির্বাচনে ৩০০ সংসদীয় আসনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করার জন্য জমা দেওয়া তিন হাজার ৬৫ মনোনয়নপত্রের মধ্যে ৭৮৬টি বাতিল করেছেন রিটার্নিং কর্মকর্তারা। যাদের মধ্যে বিএনপি, জাতীয় পার্টিসহ বিভিন্ন দলের অনেক হেভিওয়েট প্রার্থীও রয়েছেন।
গত সোমবার থেকে বুধবার পর্যন্ত আপিল গ্রহণ করে নির্বাচন কমিশন। তিন দিনে ৫৪৩ জন আপিল করেছেন। প্রথম দিনে ৮৪, দ্বিতীয় দিনে ২৩৭ ও তৃতীয় দিনে ২২২টি আবেদন নির্বাচন কমিশনে (ইসি) জমা পড়ে।
বৃহস্পতিবার ১ থেকে ১৬০ পর্যন্ত ক্রমিক নম্বরের আবেদন শুনানি হয়। শুক্রবার ১৬১ থেকে ৩১০ পর্যন্ত এবং শনিবার ৩১১ ক্রমিক নম্বর থেকে ৫৪৩ পর্যন্ত আবেদনের আপিল শুনানি গ্রহণ করবে কমিশন।
প্রতিটি আবেদনের আপিল শুনানি শেষে সঙ্গে সঙ্গেই রায় জানিয়ে দেওয়া হচ্ছে। সংক্ষুব্ধ ব্যক্তি যদি উচ্চ আদালতে কমিশনের রায়ের বিরুদ্ধে আপিল করতে চান, তাহলে তাঁকে রায়ের নকল কপি দিয়ে দেওয়া হবে।

চাঁপাইনবাবগঞ্জ নিউজ/ তথ্য সূত্র এনটিভিবিডি ডটকম/ ০৬-১২-১৮