সন্ধ্যায় বিসর্জনের মধ্য দিয়ে শেষ হলো কার্তিক পূজা

যথাযোগ্য মর্যাদা আর উৎসবমুখর পরিবেশে চাঁপাইনবাবগঞ্জে হিন্দুধর্মালম্বিদের কার্তিক পূজা অনুষ্ঠিত হয়েছে। কয়েকদিনের পূজা অর্চনা শেষে রবিবার সন্ধ্যার পর বিসর্জন এর মধ্যদিয়ে শেষ হয়েছে এ পূজা।
শহরের হুজরাপুর, গুড়িপাড়া, খালঘাট, শিবতলা, বারঘরিয়াসহ বেশ কয়েকটি মন্ডপে উঠেছিল কার্তিক। পূজা অর্চনা আর অন্যান্য ধর্মীয় আচার অনুষ্ঠানে ব্যস্ত সময় অতিবাহিত করেন সনাতন হিন্দু ধর্মালম্বিরা। পূজাকে ঘিরে আনন্দের কমতি ছিল না তাদের মধ্যে। নতুন পোশাক আর নানা ধরনের খাবারের আয়োজন করা হয়েছিল হিন্দু ধর্মালম্বিদের ঘরে ঘরে।
চাঁপাইনবাবগঞ্জ সদর উপজেলার রানীহাটী ইউনিয়নের বহরম তাঁতিপাড়ায় ২ টি মন্ডপে উঠেছিল কার্তিক পূজা। পূজা উপলক্ষে তাঁতিপাড়ায় বসেছিল মেলা। নানা বয়সি হিন্দুধর্মালম্বী মানুষ আনন্দ আর উৎসাহের মধ্যদিয়ে উদযাপন করেছে পূজা। তাঁতিপাড়া পূজা উদযাপন কমিটির সভাপতি চন্দ্র মহন ও সাধারণ সম্পাদক চন্ডি ভাষ্কর বলেন, প্রতিবছর আমরা এখানে মন্ডপে কার্তিক পূজার আয়োজন করি। পূজাকে ঘিরে আশপাশের এলাকায় হরেক রকম ভ্রাম্যমাণ দোকান বসে। তারা জানান, পূজাকে ঘিরে পুরো এলাকায় আনন্দ ছড়িয়ে পড়েছে সকলের মাঝে। সন্ধ্যার পরে প্রতিমা বিসর্জনের মধ্য দিয়ে শেষ হয় কার্তিক পূজা।
কার্তিকেয় বা কার্তিক হিন্দু যুদ্ধদেবতা। তিনি শিব ও দুর্গার সন্তান। কার্তিক বৈদিক দেবতা নন, তিনি পৌরাণিক দেবতা। প্রাচীন ভারতে সর্বত্র কার্তিক পূজা প্রচলিত ছিল। উত্তর ভারতে ইনি এক প্রাচীন দেবতা রূপে পরিগণিত হন। অন্যান্য হিন্দু দেবদেবীর মতো কার্তিকও একাধিক নামে অভিহিত হন।
যথা  কৃত্তিকাসুত, আম্বিকেয়, নমুচি, স্কন্দ, শিখিধ্বজ, অগ্নিজ, বাহুলেয়, ক্রৌঞ্চারতি, শরজ, তারকারি, শক্তিপাণি, বিশাখ, ষড়ানন, গুহ, ষান্মাতুর, কুমার, সৌরসেন, দেবসেনাপতি ইত্যাদি। বাংলায় কার্তিক সংক্রান্তির সাংবাৎসরিক কার্তিক পূজার আয়োজন করা হয়। পশ্চিমবঙ্গের হুগলি জেলার চুঁচুড়া-বাঁশবেড়িয়া কাটোয়া অঞ্চলের কার্তিক পূজা বিশেষ প্রসিদ্ধ। এছাড়া বাংলার গণিকা সমাজে কার্তিক পূজা বিশেষ জনপ্রিয়। দুর্গাপূজার সময়ও কার্তিকের পূজা করা হয়।

চাঁপাইনবাবগঞ্জ নিউজ/ নিজস্ব প্রতিবেদক/ ১৮-১১-১৮