টিসিবি’র পণ্য > ডিলার থাকলেও মাল নেই

আসন্ন রমজান ও ঈদুল ফিতরকে সামনে রেখে ট্রেডিং করপোরেশন অব বাংলাদেশ (টিসিবি)-র পণ্য গেল রবিবার থেকে সারাদেশে বিক্রি শুরু হলেও চাঁপাইনবাবগঞ্জে শুরু হয়নি। চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলায় ২৫ জন ডিলার নিয়োগ থাকলেও নানা জটিলতায় তারা পণ্য তুলছেননা। ফলে ক্রেতা সাধারণ টিসিবি’র পণ্য কেনা সুবিধা থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন। তবে ডিলার জানিয়েছেন, জেলায় টিসিবি’র অফিস না থাকাসহ রাজশাহী থেকে পণ্য এনে বিক্রি করতে গিয়ে লাভ না হওয়ায় ডিলারদের তেমন উৎসাহ নেই টিসিবি পণ্য বিক্রিতে।
টিসিবি সূত্র জানিয়েছে, রমজান ও ঈদুল ফিতরকে সামনে রেখে বিভিন্ন পণ্য সাধারণের মাঝে স্বল্পমূল্যে বিক্রির উদ্দেশ্যে অন্যান্য বছরের মত এবারও টিসিবি’র পণ্য বিক্রি শুরু হয়। এবছর টিসিবি নির্ধারিত পণ্যমূল্য ধরা হয়েছে প্রতি কেজি চিনি ৫৫ টাকা, মাঝারি সাইজের মশুর ডাল প্রতিকেজি ৫৫ টাকা, সয়াবিন তেল প্রতি লিটার ৮৫ টাকা, ছোলা প্রতিকেজি ৭০টাকা এবং খেজুর প্রতি কেজি ১২০ টাকা। একজন ভোক্তা প্রতি সর্বোচ্চ ৪ কেজি চিনি, ৪ কেজি মসুর ডাল, ৫ লিটার সয়াবিন তেল, ৫ কেজি ছোলা ও এক কেজি খেজুর কিনতে পারবেন। প্রতিদিন প্রতি ট্রাকে বিক্রির জন্য ট্রাকপ্রতি বরাদ্দ ৩০০-৪০০ কেজি চিনি, সমপরিমাণ মসুর ডাল, সয়াবিন তেল ও ছোলা এবং ৩০-৫০ কেজি খেজুর।
চাঁপাইনবাবগঞ্জ সদর, শিবগঞ্জ, নাচোল, গোমস্তাপুর ও ভোলাহাট উপজেলায় টিসিবি, আঞ্চলিক কার্যালয়, রাজশাহীর অধীন ২৫জন ডিলার রয়েছেন। টিসিবি’র নিযুক্ত ডিলাররা জানিয়েছেন, টিসিবি’র নির্ধারিত মূল্য চাঁপাইনবাবগঞ্জের বাজারের মূল্যর প্রায় কাছাকাছি। টিসিবি’র পণ্য নিয়ে এসে তেমন লাভ হয়না। নাচোল উপজেলার মেসার্স খাঁন স্টোরে স্বত্বাধিকারী পৌর মেয়র আব্দুর রশিদ খান ঝালু জানান, খোলাবাজারের চেয়ে টিসিবির পণ্যমূল্য বেশি এবং রাজশাহী থেকে পণ্য আনতে খরচও হয় বেশি ফলে লোকসান হয়। একারণে তেমন আগ্রহ নেই। শিবগঞ্জ উপজেলার মেসার্স সোহাগ এন্টার প্রাইজের দায়িত্বপ্রাপ্ত প্রাপ্ত ব্যক্তি সাইফুল ইসলামসহ আরো কয়েকজন একই ধরণের কথা বলেছেন।
সদর উপজেলার বারঘরিয়া বাজারের ডিলার মেসার্স রবি ট্রেডার্সের সত্বাধিকারী এনামুল হক বলেন-টিসিবির পণ্য রাজশাহী থেকে পণ্য আনতে পরিবহন ব্যয় বেড়ে যায়। লাভ চলে যায় পরিবহন খরচেই। তিনি বলেন, আমরা ডিলাররা চাঁপাইনবাবগঞ্জে টিসিবি অফিস নিয়ে আসার জন্য জেলা প্রশাসককে অনুরোধ করেছি। এমনকি জামানতও ফেরৎ চেয়েছি।
টিসিবি, আঞ্চলিক কার্যালয়, রাজশাহীর সুপারভাইজার জামাল হোসেন জানান, চাঁপাইনবাবগঞ্জসহ সংশ্লিষ্ট সকল ডিলারকে পণ্য উত্তোলন করে ট্রাকে করে বিক্রির জন্য বলা হয়েছে। কিন্তু চাঁপাইনবাবগঞ্জের কোনো ডিলার এখনও পণ্য উত্তোলন করেন নি।
এদিকে ব্যবসায়ীদের অভিযোগের প্রেক্ষিতে চাঁপাইনবাবগঞ্জের কয়েকটি বাজারে সোমবার খোজ নিয়ে জানাগেছে, মসুর মোটা ৬০, মসুর চিকন ৮০-১০০ টা ; খোলা তেল ৯০, বোতল লিটার ১০০টা; প্যাকেট চিনি ৬০; খোলা চিনি ৫৪ টা; খেজুর ১৮০-২০০টা; দেশি ছোলা ৭৫-৮০,আমদানি কৃত ছোলা ৬০টা দরে বিক্রি হচ্ছে। 
এব্যাপারে চাঁপাইনবাবগঞ্জের ভারপ্রাপ্ত জেলা প্রশাসক এরশাদ হোসেন খান বলেন-ডিলররা টিসিবির পণ্যগুলো উত্তোলন করেছেন কি না তা জানার জন্য তাদেরকে চিঠি দেওয়া হচ্ছে।
চাঁপাইনবাবগঞ্জ নিউজ/ নিজস্ব প্রতিবেদক/ ০৮-০৫-১৮