ভোরের কালবৈশাখী ঝড়ে আম ও ধানের ক্ষতি

সোমবার ভোরে হটাৎ শুরু হওয়া কালবৈশাখী ঝড়ে চাঁপাইনবাবগঞ্জ সদর শিবগঞ্জ ও ভোলাহাট উপজেলার গাছের আম ফসলী জমির ধান আর গরীব মানুষের ঘরবাড়ির ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। তীব্র গতি সম্পন্ন এই ঝড় চলতি মৌসুমে দ্বিতীয়। এর আগে গেল শনিবার বিকেলের পর প্রচন্ড বেগে কালবৈশাখী ঝড় বয়ে গেছিল চাঁপাইনবাবগঞ্জজুড়ে।
ভোর ৬টার দিকে শুরু হয় কালবৈশাখী ঝড় সর্ম্পকে সাধারণ মানুষ জানিয়েছেন মুর্হৃতেই বিকট শব্দে প্রবল বেগের ঝড় দেখে মানুষ আত্মংকিত হয়ে পড়েন। ঝড়ের সঙ্গে সঙ্গে শিলাসহ বৃষ্টি শুরু হয়। চাঁপাইনবাবগঞ্জ শহরের ফুড অফিস মোড় সংলগ্ন একটি নিম গাছসহ কয়েকটি এলাকায় আম গাছ ঝড়ে উপড়ে পড়েছে বলে খবর পাওয়া গেছে। ঝড়ে জেলা সদরে আম ও ধানের বেশ ক্ষতি হয়েছে।
এদিকে আমাদের ভোলাহাট প্রতিবেদক জানান ঝড়সহ শিলাবৃষ্টিতে পাকা ধান, আম ও বাড়ী-ঘরের ব্যাপক য়তি হয়েছে। উপজেলার জামবাড়ীয়া ও আলালপুর এলাকায় প্রায় ৭৫ শতাংশ য়তি হয়েছে বলে জানা গেছে। জামবাড়ীয়া ইউপি চেয়ারম্যান মুশফিকুল ইসলাম তারা জানান, সকালের শিলাবৃষ্টি ও কাল বৈশাখী ঝড়ে পাকা ধান ও আমের ৭৫ শতাংশ য়তি হয়েছে জামবাড়ীয়া ইউনিয়নে। এছাড়া ৫০শতাংশ কাঁচা বাড়ী-ঘর নষ্ট হয়ে গেছে। এদিকে উপজেলা চেয়ারম্যান আনোয়ারুল ইসলাম জানান, আলালপুর এলাকায় প্রায় ৬০ শতাংশ পাকা ধান ও আমের তি হয়েছে। তবে বাড়ী-ঘরের তেমন য়তি হয়নি।
ওই এলাকার চাষী জামিল উদ্দিন জানান, তাদের ১০ বিঘা জমিতে বোরো ধান কাটার মত হয়েছিল। কিন্ত প্রলয়ংকারী শিলাবৃষ্টি ও কাল বৈশাখী ঝড়ের কারণে আর্থিক ক্ষতির মুখে পড়তে হয়েছে। আম ব্যবসায়ী ইসমাইল হোসেন জানান, তার আম বাগানে গিয়ে তিনি হতাশ হয়ে পড়েছেন। একদিনের শিলাবৃষ্টিতে তাকে পথে বসিয়ে দিয়েছে। তার আমের ব্যাপক তি হয়েছে।
এ ব্যাপারে উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা আশরাফুল ইসলামের সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি জানান, উপসহকারী কৃষি কর্মকর্তাদের মাধ্যমে ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ নিরূপণ করা হচ্ছে সেই সঙ্গে কৃষকদের পরামর্শ দেয়া হচ্ছে।
আমাদের শিবগঞ্জ প্রতিবেদক জানান সকালের ২ ঘন্টাব্যাপি বৈশাখী ঝড় ও শিলাবৃষ্টির তান্ডবে শিবগঞ্জ উপজেলায় ধান ও আমের ব্যাপক তি হয়েছে। এ ঝড় ও শিলা বৃষ্টিতে  উপজেলার  শিবগঞ্জ পৌরসভা, দাইপুকুরিয়া,মোবারকপুর সোনামসজিদ, মনাকষা, শ্যামপুর, দূর্লভপুর, শাহাবাজপুর, ধাইনগর, নয়ালাভাঙ্গাসহ বিভিন্ন এলাকায় একদিকে ব্যাপক হারে আম ঝরে পড়েছে  এবং অন্যদিকে কৃষকদের েেতর পাঁকা ধান  নষ্ট হয়ে গেছে।
শিলা বৃষ্টিতে নষ্ট হয়ে যাওয়া ধানের য় তি সম্পর্কে জানতে চাইলে দাইপুকুরিয়া ইউনিয়নের সাদ্দাম হোসেন নামে এক চাষি জানান, ঝড়ের কারণে তার জমির ধান নষ্ট হয়ে গেছে। ঋণের টাকায় ধান আবাদ করে তিনি এখন সর্বশান্ত হয়েছেন।
এদিকে শিবগঞ্জের কানসাট, মোবারকপুর, চককীর্তি ইউনিয়নের উপর দিয়ে বয়ে যাওয়া কালবৈশাখীর তান্ডবে অনেক  টিনের ঘর –বাড়ি ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে, কোথাও কোথাও উপড়ে পড়েছে আম গাছ, গাছ হতে ঝড়ে পড়েছে প্রচুর আম।

৪ নং মোবারকপুর ইউনিয়নের টিকরী গ্রামের রফিকুল ইসলাম নামের একজন আম চাষীর কাছে আমের তি সম্পর্কে জানতে চাইলে তিনি জানান, আজকের ঝড়ে তার বাগানের ৬০ টি গাছের অধিকাংশেরই আম ঝড়ে পড়েছ।
চককীর্ত ইউনিয়নের আম চাষী মনিরুল ইসলাম বলেন, ‘এ বছর আমের বাম্পার ফলন আশা করছিলাম। কিন্তু কয়েকদফা শিলা বৃষ্টি ও ঝড়ের কারণে  আশা ভেঙ্গে গেছে’। শিবগঞ্জ পৌরসভাধীন মরদানা এলাকার রুবেলসহ অন্যান্য আম চাষীরা জানান তারা চরম আর্থিক ক্ষতির মুখে পড়েছেন।
এ ব্যাপারে শিবগঞ্জ উপজেলা কৃষি অফিসার আমিনুজ্জামান জানান, দাইপুুকুরিয়া ইউনিয়নের কামালপুর ও দৌলতবাড়ি এলাকায় শিলাবৃষ্টি ও ঝড় হওয়ায় ৩ শ হেক্টর জমির ধান নষ্ট হয়েছে এবং ওই এলাকার ৫% আম নষ্ট হয়েছে। উপজেলার অন্যান্য স্থানে তেমন কোন তি হয়নি।

চাঁপাইনবাবগঞ্জ নিউজ/ নিজস্ব প্রতিবেদক/ ৩০-০৪-১৮

, ,