ঔষুধের আলমিরাতে তালা দিয়ে চলেছে ধর্মঘট বিপাকে রোগিরা

কমিউনিটি হেলথ কেয়ার প্রোভাইডার বা সিএইচসিপিদের আন্দোলনের কারণে কার্যতঃ চিকিৎসাসেবা বন্ধ হয়ে গেছে চাঁপাইনবাবগঞ্জে ১৪৭ টি কমিউনিটি ক্লিনিকে। জেলার কয়েকটি কমিউনিটি ক্লিনিক সিএইচসিপি’র সহায়তাকারীরা খুললেও বেশিরভাগর ক্লিনিক শনিবার থেকেই তালাবন্ধ। এতে চিকিৎসা নিতে এতে ফিরে যাচ্ছেন রোগিরা। এ নিয়ে চরম বিপাকে পড়েছেন গ্রামের মানুষ। ক্লিনিকগুলোর ঔষুধের আলমিরাতেও তালা দিয়ে চলেছে ধর্মঘট।
মঙ্গলবার নাচোল উপজেলার লক্ষীপুর কমিউনিটি ক্লিনিকে গিয়ে দেখা যায়, সিএইচসিপি না আসলেও তার সহকারি ক্লিনিক খুলে বসে আছেন। তিনি জানান, চিকিৎসা দেয়ার ক্ষমতা তার নাই। তিনি শুধু স্বাস্থ্য শিক্ষা দিতে পারেন। মঙ্গলবার আতাহার কমিউনিটি ক্লিনিকে চিকিৎসা নিতে আসা সারাবান তহুরা দেখেন ক্লিনিক তালাবন্ধ। তিনি জানান, এই ক্লিনিকে নিয়মিত আসেন তিনি। কিন্তু জানতেন না এখন কিনিক বন্ধ। প্রায় আধা কিলোমিটার দূরের চাঁন্দলাই গ্রাম থেকে পাঁয়ে হেঁটেই এসেছেন তিনি। কিন্তু চিকিৎসা না পেয়ে আবারো ফিরে যেতে হচ্ছে।
বেলা ১২টার দিকে নাচোল উপজেলার লক্ষ্মীপুর কমিউনিটি ক্লিনিকে গিয়ে দেখা যায় দরজা খোলা থাকলেও নেই কোনো রোগির উপস্থিতি। একজন সহকারী ক্লিনিকের বাইরে বসে আছেন। চিকিৎসা নিতে আসা লক্ষ্মীপুর গ্রামের আসনারা খাতুন বলেন, হারা গরিব মানুষ। হাতের কাছে এই ক্লিনিকে ডাক্তার দেখাতুন, ওষুধ পাইতুন। কিন্তু এখন সব বন্ধ। ডাক্তার দেখাতে না পারলে হারা কোথায় যাব?
কমিউনিটি হেলথ কেয়ার প্রোভাইডার-সিএইচসিপিদের আন্দোলনের কারণে কার্যতঃ বন্ধ হয়ে গেছে চাঁপাইনবাবগঞ্জের ১৪৭টি কমিউনিটি ক্লিনিকের চিকিৎসা সেবা। সংশ্লিষ্ট সূত্রগুলো জানিয়েছে, জেলার হাতে গোনা কয়েকটি বাদে সব ক্লিনিকই বন্ধ রয়েছে। কয়েকটি ক্লিনিক সিএইচসিপি’র সহকারীরা খুলছেন। তবে তাদের চিকিৎসা দেয়ার কোনো এখতিয়ার নেই। চাকরি জাতীয়করণের দাবিতে এক মাসেরও বেশি সময় ধরে আন্দোলন করছেন সিএইচসিপিরা। মানববন্ধন, অবস্থান কর্মসূচি ও সাময়িক কর্মবিরতি পালন করেছেন তারা। তবে গত শনিবার থেকে শুরু করেছেন লাগারতার ধর্মঘট। এতে ভেঙ্গে পড়েছে গ্রামের চিকিৎসাসেবা।
সিএইচসিপি অ্যাসোসিয়েশন, চাঁপাইনবাবগঞ্জ শাখার সাধারণ সম্পাদক জাহিদুল ইসলাম জানান, সারাদেশের মতো চাঁপাইনবাবগঞ্জের কমিউনিটি কিনিকগুলোতে ধর্মঘট পালন করছেন তারা। জেলা কর্মরত সব সিএইচসিপি বর্তমানে ঢাকায় অবস্থান করছেন। বুধবার প্রেসকাবের সামনে অবস্থান কর্মসূচিতে থাকবেন তারা। তিনি জানান, চাকরি জাতীয়করণের আশ্বাস তারা বারবারই পেয়েছেন কিন্তু সেটা কার্যকর হয়নি। এবার চাকরি জাতীয়করণ না হওয়া পর্যন্ত আন্দোলন চালিয়ে যাবেন। চাকরি জাতীয়করণ না হওয়া পর্যন্ত কমিউনিটি কিনিকে তারা ফিরবেন বলেও জানান।

চাঁপাইনবাবগঞ্জ নিউজ/ নিজস্ব প্রতিবেদক/ ৩০-০১-১৮