নানা কর্মসুচির মধ্যদিয়ে বীরশ্রেষ্ঠ জাহাঙ্গীরের ৪৬ তম শাহাদাত বার্ষিকী পালিত

নানা কর্মসুচির মধ্যদিয়ে বৃহস্পতিবার চাঁপাইনবাবগঞ্জে বীরশ্রেষ্ঠ শহীদ ক্যাপ্টেন মহিউদ্দীন জাহাঙ্গীরের ৪৬তম শাহাদৎ বার্ষিকী পালিত হয়েছে।
সকালে বীরশ্রেষ্ঠের সমাধিস্থল চাঁপাইনবাবগঞ্জের সোনামসজিদ প্রাঙ্গণে সমাধিতে পুষ্পার্ঘ অর্পণ শেষে কোরআন খানী, ফাতেহা পাঠ ও দোয়া মাহফিল অনুষ্ঠিত হয়। এ সময় উপস্থিত ছিলেন সংসদ সদস্য গোলাম রাব্বানী, জেলা প্রশাসক মাহমুদুল হাসান, পুলিশ সুপার টিএম মোজাহিদুল ইসলাম, অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) এরশাদ হোসেন খান, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মাহবুব আলম খান, শিবগঞ্জ পৌরসভার মেয়র কারিবুল হক রাজিন জেলা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি ও সদর উপজেলা পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান রুহুল আমিন, সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আলমগীর হোসেন, শিবগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী অফিসার শফিকুল ইসলাম, সহকারী কমিশনার (ভূমি)  বরমান হোসেন, জেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ন সাধারণ সম্পাদক ডা. সামিল উদ্দিন আহমেদ শিমুল, জেলা মুক্তিযোদ্ধা সাবেক কমান্ডার সিরাজুল হক, শিবগঞ্জ উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা সাবেক কমান্ডার বজলার রশিদ সোনু, উপজেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক শামসুর রহমান বাবু, শিবগঞ্জ থানার ওসি হাবিবুল ইসলাম হাবিব, মুক্তিযোদ্ধাসহ বিভিন্ন রাজনৈতিক ও সামাজিক সংগঠনের নেতৃবৃন্দ। এরআগে ভোরে শহরের রেহায়চরস্থ বীরশ্রেষ্ঠে শহীদিস্থলের স্মৃতিস্তম্ভে প্রশাসন, মুক্তিযোদ্ধা সংসদসহ নানান শ্রেণীর পেশার মানুষ শ্রদ্ধার্ঘ অর্পণ করেন।
উল্লেখ্য, বাঙলা মায়ের দামাল সন্তান বীরশ্রেষ্ঠ শহীদ ক্যাপ্টেন মহিউদ্দীন জাহাঙ্গীরের নেতৃত্বে ১৯৭১ সালের ১৪ চাঁপাইনবাবগঞ্জ শহরের মহানন্দা তীরবর্তী গ্রাম রেহায়চর এলাকায় সম্মুখ যুদ্ধে কপালে গুলিবিদ্ধ হয়ে শাহাদাত বরণ করেন। পরের দিন তাকে ঐতিহাসিক সোনামসজিদ প্রাঙ্গনে সমাহিত করা হয়।
উল্লেখ্য, বাঙলা মায়ের দামাল সন্তান বীরশ্রেষ্ঠ শহীদ ক্যাপ্টেন মহিউদ্দীন জাহাঙ্গীরের নেতৃত্বে ১৯৭১ সালের এই দিনে চাঁপাইনবাবগঞ্জ শহরের পার্শ্বে মহানন্দা নদীর তীরবর্তী গ্রাম রেহায়চর এলাকায় সংগঠিত হয় এক রক্তয়ী যুদ্ধ। পাকহানাদার বাহিনীর সাথে সুম্মুখযুদ্ধে ধ্বংস করে দেয় শত্রু বাহিনীর ১৮টি ট্রেঞ্চ ও ২০ থেকে ২২ টি বাংকার। শত্রুমুক্ত হয় চাঁপাইনবাবগঞ্জ।
১৩ ডিসেম্বর বীরশ্রেষ্ঠ জাহাঙ্গীর শহর মুক্ত করতে কয়েকটি নৌকায় মুক্তিযোদ্ধাদের নিয়ে রেহায়চর এলাকায় যুদ্ধের প্রস্তুতি নেন। সম্মুখযুদ্ধে একের পর এক পরাস্ত করতে থাকেন শত্রু বাহিনীকে। ১৪ ডিসেম্বর রাতের আধার কেটে সকালে সূর্য ওঠার আগেই নির্ভিক মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডার জাহাঙ্গীর সহযোদ্ধাদের নিয়ে বীরদর্পে এগিয়ে চলেন এবং ধ্বংস করে দেন শত্রু বাহিনীর ১৮টি ট্রেঞ্চ ও ২০ থেকে ২২ টি বাংকার। জাহাঙ্গীরের দুসাহসিক ও দুরন্ত আক্রমণে শত্রু বাহিনী তাদের আস্তানা ছেড়ে পালিয়ে যেতে বাধ্য হয়। রেহায়চর ঘাটের কাছেই শত্রু বাহিনীর সর্বশেষ বাংকারটি দখল করতে অত্যন্ত সাহসিকতার সঙ্গে এগোতে থাকার সময় হটাৎ শত্রু বাহিনীর একটি গুলি এসে লাগে বীরশ্রেষ্ঠ জাহাঙ্গীরের কপালে। লুটিয়ে পড়েন মাটিতে বাংলার এই বীর সন্তান এবং সেখানেই শাহাদাত বরণ করেন। পরের দিন শহীদ ক্যাপ্টেন জাহাঙ্গীরকে দাফন করা হয় হযরত শাহ নেয়ামত উল্লাহ (রহঃ)-এর পুণ্যভূমি বাংলার পুরাতন রাজধানী গৌড়ের ঐতিহাসিক সোনামসজিদ চত্বরে।

চাঁপাইনবাবগঞ্জ নিউজ/ নিজস্ব প্রতিবেদক/ ১৪-১২-১৭

,