জানুযারীতে বাল্যবিয়ে মুক্ত হতে যাচ্ছে শিবগঞ্জ

আগামী জানুয়ারী মাসেই শিবগঞ্জ উপজেলা বাল্য বিয়ে মুক্ত ঘোষণা হতে যাচ্ছে। চলতি বছরের জানুয়ারী মাস থেকে বাল্য বিয়ে রোধে উপজেলা প্রশাসনের ব্যাপক অভিযানের পর সাফল্য লাভ হওয়ায় এই ঘোষণা দেয়া হবে।
শিবগঞ্জ উপজেলা অফিস সূত্রে জানা গেছে গত ১০ মাসে  গোপন সংবাদের ভিত্তিতে উপজেলা নির্বাহী অফিসার সফিকুল ইসলামের  নেতৃত্বে পুলিশ প্রশাসনের সহযোগিতায় বিভিন্ন স্থানে  অভিযোন পরিচালনা করে ১শ ১৭ টি  বাল্য বিয়ে রোধ করা হয়েছে। ভ্রাম্যমাণ আদালতের মাধ্যমে ৩২টি মামলা দায়ের করা হয়েছে এবং  ৪০ জন অপরাধীকে বিভিন্ন মেয়াদে  কারাদন্ড দেয়া হয়েছে। একই সঙ্গে অভিযানে ৩৩ হাজার টাকা জরিমান আদায় করা হয়েছে। ওই সূত্র জানায়, গত ১৭ ফেব্রুয়ারি উপজেলার ৪টি ইউনিয়নে অভিযান চালিয়ে ৬টি বাল্য বিয়ে বন্ধ করা হয় এবং  ভ্রাম্যমাণ আদালতের মাধ্যমে বাল্য বিয়ে দেয়া ও সহযোগিতা করার দায়ে ৬ জনকে ৭দিন থেকে ১মাস পর্যন্ত কারাদন্ড দেয়া হয়। ১২ ফেব্রুয়ারি দূর্লভপুরের দামুদিয়াড় গ্রামে অভিযান চালিয়ে শিউলী খাতুনকে বাল্য বিয়ে  থেকে রক্ষা করা  হয়  এবং ভ্রাম্যমাণ আদালতের মাধ্যমে বরের মা সমিজা বেগম, কনের মা বেবী বেগম ও বর পলাশ, বরের চাচা সারওয়ারকে ১৫ দিন করে কারাদন্ড দেয়া হয়। গত ২০ ফেব্রুয়ারি উপজেলার ধাইনগর ইউনিয়নের গোসাইবাড়ি গ্রামে অভিযান চালিয়ে ৭ম শ্রেণীর এক শিক্ষার্থীকে বাল্য বিয়ে থেকে রক্ষা করা হয় এবং ভ্রাম্যমাণ আদালতের মাধ্যমে বরের মা বাবাকে ১৫ দিন করে কারাদন্ড দেয় হয়। ফেব্রুয়ারি মাসেই আরো একটি অভিযান চালিয়ে বাল্য বিয়ে দেয়ার অপরাধে ভ্রাম্যমাণ আদালতের মাধ্যমে ১১ জনকে বিভিন্ন মেয়াদে সাজা ও ২০ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়। ২০ ফেব্রুয়ারি কানসাটের অভিযান চালিয়ে ১৫ বছরের শিক্ষার্থীকে বাল্য বিয়ের হাত থেকে রক্ষা করা হয় এবং ভ্রাম্যমাণ আদালতের মাধ্যমে বর ও বরের দুলা ভাইকে ১৫ দিন  করে কারাদন্ড দেয়া হয়। গত ২২ ফেব্রুয়ারি ছত্রাজিতপুরের কাঠালিপাড়া গ্রামে ৯ম শ্রেণীর এক শিক্ষার্থীকে বাল্য বিয়ে থেকে রক্ষা করা হয় এবং ভ্রাম্যমাণ আদালতের মাধ্যমে কনের মা তাসলিমা বেগম ও চাচা সেমাজুলকে ১ মাস করে কারাদন্ড দেয়া হয়। ১৭ নভেম্বর চককীর্তি গ্রামের শিক্ষার্থী শাম্মীকে বাল্যবিয়ে থেকে রক্ষা করা হয় এবং কনের পিতা ও বর মুচলেকা দিয়ে ছাড়া পায়। এভাবেই সারা বছরই গোপন সংবাদে ভিত্তিতে অভিযান পরিচালনা করায় বাল্য বিয়ের ক্ষেত্রে একদিকে মানুষের মাঝে সচেতন সৃষ্টি হয়েছে অন্যদিকে বিভিন্ন মেয়াদে সাজা দেয়ায় মানুষের  মধ্যে আতঙ্ক বিরাজ করায় বর্তমানে বাল্য বিয়ে বহুলাংশে কমে গেছে।
এব্যাপারে শিবগগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী অফিসার শফিকুল ইসলাম বলেন, ‘বাল্য বিয়ে ক্ষেত্রে শিবগঞ্জের নেতিবাচক ধারণা থাকায় উপজেলায় যোগদান করার পরপরই আমার সংকল্প ছিল আমি শিবগঞ্জকে বাল্যবিয়ে মুক্ত করবো। তবে এত অল্প সময়ের  মধ্যে বাল্য বিয়ে বন্ধ হবে এটা আশা করতে পারিনি। তবে বিভিন্ন এলাকার বিশেষ করে শিক্ষার্থী তরুন তরুনীর দের সহযোগিতা ও আগ্রহের ফলে বাল্য বিয়ে প্রায় বন্ধ হয়ে গেছে’।  তিনি জানান, আগামী জানুয়ারী মাসের প্রথম দিকে আনুষ্ঠানিভাবে শিবগঞ্জ উপজেলাকে বাল্যবিয়ে মুক্ত ঘোষনা করা হবে।

চাঁপাইনবাবগঞ্জ নিউজ/ নিজস্ব প্রতিবেদক/ ০৭-১২-১৭

,