হরিমোহন সরকারি উচ্ছ বিদ্যালয়ে বিশ্বকবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের জন্মবার্ষিকী পালিত

বিশ্বকবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের ১৫৬তম জন্মবার্ষিকী উপলক্ষে হরিমোহন সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়ের উদ্যোগে আলোচনা সভা, রচনা ও আবৃত্তি প্রতিযোগিতার আয়োজন করা হয়। সোমবার সকাল ১০ টায় বিদ্যালয়ের হলরুমে বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আব্দুল লতিফের সভাপতিত্বে রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর সম্পর্কে বক্তব্য রাখেন সহকারী প্রধান শিক্ষক মঈনুল হক, সহকারী শিক্ষক ও কলাম লেখক আজমাল হোসেন মামুন, সহকারী শিক্ষক আব্দুর রহমান, সহকারী শিক্ষক লোকমান হেকিম প্রমুখ।
বক্তারা বলেন, রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর অজ¯্র কবিতা, গান, ছোট গল্প, নাটক, উপন্যাস, প্রবন্ধ, পত্র সাহিত্য, অনুবাদ ও ভাষা সাহিত্যসহ সর্বক্ষেত্রে অবদান রেখে আমাদের বাংলা সাহিত্যকে সমৃদ্ধ করেছে। ‘গীতাঞ্জলি’ প্রকাশের জন্য ১৯১৩ সালে নোবেল বিজয়ের মাধ্যমে বাংলা ভাষাকে বিশ্বের দরবারে প্রতিষ্ঠিত করেন। ‘যদি তোর ডাক শুনে কেউ না আসে তবে একলা চলরে’ গানটি সাধারণ মানুষকে মহৎ কাজের প্রতি উদ্বুদ্ধ করে, জীবনকে করে তুলে আন্দোলিত। রবীন্দ্রনাথের ৫২টি কাব্যগ্রন্থ, ৩৮টি নাটক, ১৩টি উপন্যাস ও ৩৬টি প্রবন্ধ ও অন্যান্য গদ্যসংকলন তাঁর জীবদ্দশায় বা মৃত্যুর পরে প্রকাশিত হয়েছে। তাঁর ৯৫টি ছোটগল্প ও ১৯১৫টি গান যথাক্রমে গল্পগুচ্ছ ও গীতবিতান সংকলনে অন্তর্ভূক্ত হয়েছে। রবীন্দ্রনাথের প্রকাশিত ও গ্রন্থাকারে অপ্রকাশিত রচনা ৩২ খন্ডে ’রবীন্দ্র রচনাবলী’ নামে প্রকাশিত হয়েছে। রবীন্দ্রনাথের যাবতীয় পত্রসাহিত্য ১৯ খন্ডে চিঠিপত্র ও চারটি পৃথক গ্রন্থে প্রকাশিত। চিঠিপত্রগুলোকে ’ছিন্নপত্র’ বলে। এছাড়াও তিনি প্রায় দুই হাজার ছবি এঁকেছিলেন। রবীন্দ্রনাথের রচনা বিশ্বের বিভিন্ন ভাষায় অনূদিত হয়েছে। রবীন্দ্রনাথের স্বদেশ ভাবনার বিরাট একটা অংশ জুড়ে ছিল পরিবেশ-সচেতনতা। তিনি প্রকৃতিকে ভালোবেসে আপন করেছেন। দূষণমুক্ত পরিবেশ সংক্রান্ত চিন্তা-ভাবনায় তিনি ছিলেন অন্যতম পরিবেশবিদ। বিশ্বমানবতার বিশ্বকবি যদিও পরিবেশ বলতে বিশ্বমানবের পরিবেশই বুঝতেন, তবু তাঁর স্বদেশই ছিল এর কেন্দ্রে। তাঁর বাংলাদেশ ছিল, নগরবাংলা নয়, গ্রামবাংলা, সবুজ পত্রপল্লবে ঢাকা, পাখিডাকা, নদীমাতৃক বাংলাদেশ। সেজন্য রবীন্দ্রনাথের মৃত্যু দিবস তথা বাইশে শ্রাবণকে তাঁর আশ্রম শান্তি নিকেতনে ’বৃক্ষরোপণ দিবস’ হিসেবে ধার্য করা হয়েছে। শ্রমিক শ্রেণির মানুষের উন্নয়নের জন্য সমবায়ের বিকল্প নেই সেটি রবীন্দ্রনাথ অনেক আগেই বুঝতে পেরেছিলেন। সমবায় সম্পর্কে রবীন্দ্রনাথের আগ্রহও তাঁর কর্ম জীবনে প্রভাব ফেলে। তিনি পরিষ্কার বলেছিলেন, গ্রামকে বাঁচাতে হলে ‘সমবায়নীতি ছাড়া আমাদের উপায় নেই।’ ঐকত্রিক চাষ সম্বন্ধেও পথিকৃতের অবদান রবীন্দ্রনাথের। সমবায়নীতি বাস্তবায়নকল্পে যিনি পতিসরে সেই ১৯০৫ সালেই কৃষি ব্যাংক স্থাপন করেন ।

চাঁপাইনবাবগঞ্জ নিউজ/ নিজস্ব প্রতিবেদক/ ০৮-০৫-১৭