আবহাওয়া বিরূপ না হলে আমের উৎপাদন ছাড়িয়ে যাবে আড়াই লাখ মেট্রিক টন
আমের রাজধানী খ্যাত চাঁপাইনবাবগঞ্জে চলতি মৌসুমে প্রচুর পরিমাণ মুকুল এসেছে। গাছের পর গাছ মুকুলে মুকুলে ছেয়ে গেছে। জেলাজুড়ে এখন যেদিকেই চোখ যায় সেদিকেই শুধু মুকুল আর মুকুল। মুকুলের মৌ মৌ গন্ধে মাতোয়ারা সু-স্বাদু ও বাহারী জাতের আম উৎপাদনের জেলা চাঁপাইনবাবগঞ্জ। সংশ্লিষ্টরা বলছেন, আবহাওয়া বিরূপ না হলে আমের উৎপাদন ছাড়িয়ে যাবে আড়াই লাখ মেট্রিক টন।
চাঁপাইনবাবগঞ্জ কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর সূত্র জানিয়েছে, উৎপাদনগত দিক থেকে এক সময় আমের ভাল ফলনের বছরকে ‘অন ইয়ার’ এবং কম ফলনের বছরকে ‘অফ ইয়ার’ বলা হতো। এখন আর সেই ধারার দেখা মিলেনা। সাম্প্রতিক বছরগুলোতে প্রতিবছরই ভাল ফলন হচ্ছে। এবছর শীত কেটে যাবার পর মৌসুমের শুরুতেই পর্যাপ্ত তাপমাত্রা থাকায় আম গাছগুলো ব্যাপকভাবে মুকুলায়িত হয়। অনুকুল আবহাওয়া ও বালাই না থাকায় মুকুল এসেছে গতবছরের মতই। ওই সূত্র জানায়, জেলার ৫ উপজেলার ২৬ হাজার ১৫০ হেক্টর আমবাগানের প্রায় ২০ লাখ আম গাছে এখন পর্যন্ত ৮৫ থেকে ৯০ ভাগ মুকুল এসেছে। গতবছর যা ছিল ৮৮ ভাগ।
মুকুল আসার পর থেকেই চাঁপাইনবাবগঞ্জের হাজার হাজার চাষী ব্যস্ত সময় কাটাচ্ছেন বাগান পরিচর্যার কাজে। পোকা ও বালাই দমনে গাছে গাছে চাষীরা স্প্রে করার পাশাপাশি গাছের গোড়ায় পানি দিচ্ছেন।
চাঁপাইনবাবগঞ্জের শিবগঞ্জ উপজেলার ১৩ বিঘা আম বাগানের মালিক আম চাষী মহাসিন আলী রূপবান বলেন, ‘ কৃষি বিভাগের পরামর্শ অনুযায়ী এখন গাছে গাছে স্প্রে করছি আর গাছের গোড়া খুড়ে পানি দিচ্ছি। আগে সার দিয়েছিলাম। এখন গাছের অবস্থা, মুকুলের অবস্থা খুবই ভাল। রোগ বালাইও তেমন নাই’। একই এলাকার আম চাষী কামাল উদ্দীন, ও চাঁপাইনবাবগঞ্জ সদর উপজেলার আম চাষী মাসরুর জামান, মনিরুজ্জামান জানান, এবার আবহাওয়া খুবই ভাল আছে। সকালে কুয়াশ দেখা দিলেও তা বেলা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে কেটে যাচ্ছে। ফলে মুকুলে ক্ষতি হওয়ার কারণ থাকছেনা। সব মিলিয়ে ভাল মুকুলে চাষীরা ভাল ফলনের আশা করছেন।
এদিকে, ব্যাপক মুকুলে বাম্পার ফলনের সম্ভাবনার মূখেও আম ব্যবসায়ীরা আমের বাজার ব্যবস্থানা নিয়ে শংকা করছেন। প্রশাসনের বেধে দেয়া সময় সীমা মোতাবেক গাছ থেকে আম ভেঙ্গে বাজারজাত করার ক্ষেত্রে আম ব্যবসায়ীরা ক্ষতির মুখে পড়ার আশংকা করছেন। আম ব্যবসায়ী হাসান আল সাদি পলাশ বলেন, ‘ গত দু’ বছর ধরে আম ভাঙ্গার সময় সীমা নির্ধারণ করছে স্থানীয় প্রশাসন। প্রথম বছর আম ভাঙ্গার সময় নির্ধারণ করা হয়েছিল ১০ জুন। কিন্তু ব্যবসায়ীদের ক্ষতির কথা বিবেচনায় গত বছর তা ১০ দিন এগিয়ে নিয়ে এসে করা হয়েছিল ১ জুন’। তিনি বলেন, ‘ এবছর পুরো শীতকালজুড়ে তেমন শীত ছিলনা। সেই কারণে আমরা ধারণা করছি, এবার হয়তো তাপমাত্রাও বাড়বে। তাপমাত্রা বাড়লে আম আগে পাকবে এটাই স্বাভাবিক। এখন গাছে আম পেকে যাবে। আর আমরা প্রশাসনের বেধে দেয়া সময় সীমা মোতাবেক বসে থাকবো। বিষয়টাতো ফলপ্রসু হবেনা।
উল্লেখ্য, অপরিপক্ক আম ক্ষতিকারণ রাসয়নিক দিয়ে পাকিয়ে বাজারজাত করা ঠেকাতে জেলা প্রসাশন, কৃষি বিভাগ ও ব্যবসায়ীরা যৌথভাবে আম বাজারজাত করার সময় সীমা নির্ধারণ করে।
সুমিষ্ট আমের জেলা চাঁপাইনবাবগঞ্জে বছর ঘুরে ঘুরে আমের বাগানের পরিমাণ বাড়ছে। গত বছর জেলার ৫ উপজেলায় আম বাগানের পরিমাণ ছিল ২৪ হাজার ৪৭০ হেক্টর। মাত্র এক বছরে বাগার পেয়েছে ১ হাজার ৬৮০ হেক্টর। চাঁপাইনবাবগঞ্জে আম নিযে গবেষণা করা প্রতিষ্ঠান আঞ্চলিক উদ্যানতত্ব গবেষণা কেন্দ্রের বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা ড. শরফ উদ্দীন বলেন, ‘ অনুকুল আবহাওয়া আর আম চাষীদের সচেতনাতার কারণে এবার ভালই ফলন আশা করা হচ্ছে। গত বছর আম উৎপাদন হয়েছিল ২ লাখ ৩০ থেকে ৪০ হাজার মেট্রিক টন। এবার যেহেতু মুকুল ভাল এসেছে। বাগানের পরিমাণও বেড়েছে। সেহেতু আম উৎপাদন আড়াই লাখ মেট্রিক টন ছাড়িয়ে যাবে’।
চাঁপাইনবাবগঞ্জ নিউজ/ নিজস্ব প্রতিবেদক/ ০৮-০৩-১৭
চাঁপাইনবাবগঞ্জ কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর সূত্র জানিয়েছে, উৎপাদনগত দিক থেকে এক সময় আমের ভাল ফলনের বছরকে ‘অন ইয়ার’ এবং কম ফলনের বছরকে ‘অফ ইয়ার’ বলা হতো। এখন আর সেই ধারার দেখা মিলেনা। সাম্প্রতিক বছরগুলোতে প্রতিবছরই ভাল ফলন হচ্ছে। এবছর শীত কেটে যাবার পর মৌসুমের শুরুতেই পর্যাপ্ত তাপমাত্রা থাকায় আম গাছগুলো ব্যাপকভাবে মুকুলায়িত হয়। অনুকুল আবহাওয়া ও বালাই না থাকায় মুকুল এসেছে গতবছরের মতই। ওই সূত্র জানায়, জেলার ৫ উপজেলার ২৬ হাজার ১৫০ হেক্টর আমবাগানের প্রায় ২০ লাখ আম গাছে এখন পর্যন্ত ৮৫ থেকে ৯০ ভাগ মুকুল এসেছে। গতবছর যা ছিল ৮৮ ভাগ।
মুকুল আসার পর থেকেই চাঁপাইনবাবগঞ্জের হাজার হাজার চাষী ব্যস্ত সময় কাটাচ্ছেন বাগান পরিচর্যার কাজে। পোকা ও বালাই দমনে গাছে গাছে চাষীরা স্প্রে করার পাশাপাশি গাছের গোড়ায় পানি দিচ্ছেন।
চাঁপাইনবাবগঞ্জের শিবগঞ্জ উপজেলার ১৩ বিঘা আম বাগানের মালিক আম চাষী মহাসিন আলী রূপবান বলেন, ‘ কৃষি বিভাগের পরামর্শ অনুযায়ী এখন গাছে গাছে স্প্রে করছি আর গাছের গোড়া খুড়ে পানি দিচ্ছি। আগে সার দিয়েছিলাম। এখন গাছের অবস্থা, মুকুলের অবস্থা খুবই ভাল। রোগ বালাইও তেমন নাই’। একই এলাকার আম চাষী কামাল উদ্দীন, ও চাঁপাইনবাবগঞ্জ সদর উপজেলার আম চাষী মাসরুর জামান, মনিরুজ্জামান জানান, এবার আবহাওয়া খুবই ভাল আছে। সকালে কুয়াশ দেখা দিলেও তা বেলা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে কেটে যাচ্ছে। ফলে মুকুলে ক্ষতি হওয়ার কারণ থাকছেনা। সব মিলিয়ে ভাল মুকুলে চাষীরা ভাল ফলনের আশা করছেন।
এদিকে, ব্যাপক মুকুলে বাম্পার ফলনের সম্ভাবনার মূখেও আম ব্যবসায়ীরা আমের বাজার ব্যবস্থানা নিয়ে শংকা করছেন। প্রশাসনের বেধে দেয়া সময় সীমা মোতাবেক গাছ থেকে আম ভেঙ্গে বাজারজাত করার ক্ষেত্রে আম ব্যবসায়ীরা ক্ষতির মুখে পড়ার আশংকা করছেন। আম ব্যবসায়ী হাসান আল সাদি পলাশ বলেন, ‘ গত দু’ বছর ধরে আম ভাঙ্গার সময় সীমা নির্ধারণ করছে স্থানীয় প্রশাসন। প্রথম বছর আম ভাঙ্গার সময় নির্ধারণ করা হয়েছিল ১০ জুন। কিন্তু ব্যবসায়ীদের ক্ষতির কথা বিবেচনায় গত বছর তা ১০ দিন এগিয়ে নিয়ে এসে করা হয়েছিল ১ জুন’। তিনি বলেন, ‘ এবছর পুরো শীতকালজুড়ে তেমন শীত ছিলনা। সেই কারণে আমরা ধারণা করছি, এবার হয়তো তাপমাত্রাও বাড়বে। তাপমাত্রা বাড়লে আম আগে পাকবে এটাই স্বাভাবিক। এখন গাছে আম পেকে যাবে। আর আমরা প্রশাসনের বেধে দেয়া সময় সীমা মোতাবেক বসে থাকবো। বিষয়টাতো ফলপ্রসু হবেনা।
উল্লেখ্য, অপরিপক্ক আম ক্ষতিকারণ রাসয়নিক দিয়ে পাকিয়ে বাজারজাত করা ঠেকাতে জেলা প্রসাশন, কৃষি বিভাগ ও ব্যবসায়ীরা যৌথভাবে আম বাজারজাত করার সময় সীমা নির্ধারণ করে।
সুমিষ্ট আমের জেলা চাঁপাইনবাবগঞ্জে বছর ঘুরে ঘুরে আমের বাগানের পরিমাণ বাড়ছে। গত বছর জেলার ৫ উপজেলায় আম বাগানের পরিমাণ ছিল ২৪ হাজার ৪৭০ হেক্টর। মাত্র এক বছরে বাগার পেয়েছে ১ হাজার ৬৮০ হেক্টর। চাঁপাইনবাবগঞ্জে আম নিযে গবেষণা করা প্রতিষ্ঠান আঞ্চলিক উদ্যানতত্ব গবেষণা কেন্দ্রের বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা ড. শরফ উদ্দীন বলেন, ‘ অনুকুল আবহাওয়া আর আম চাষীদের সচেতনাতার কারণে এবার ভালই ফলন আশা করা হচ্ছে। গত বছর আম উৎপাদন হয়েছিল ২ লাখ ৩০ থেকে ৪০ হাজার মেট্রিক টন। এবার যেহেতু মুকুল ভাল এসেছে। বাগানের পরিমাণও বেড়েছে। সেহেতু আম উৎপাদন আড়াই লাখ মেট্রিক টন ছাড়িয়ে যাবে’।
চাঁপাইনবাবগঞ্জ নিউজ/ নিজস্ব প্রতিবেদক/ ০৮-০৩-১৭