পুলিশের শ্যোন এ্যারেস্টের আবেদন নাকচ হওয়ায় কারাগার থেকে বেরিয়ে এলেন মেয়র নজরুল

বিষ্ফোরক মামলার আসামী হিসেবে শ্যোন এ্যারেস্টের জন্য পুলিশের করা আবেদন নামঞ্জুর হওয়ায় করাগার থেকে বেরিয়ে এসেছেন চাঁপাইনবাবগঞ্জ পৌরসভার সদ্য সাময়িকভাবে বরখাস্ত হওয়া মেয়র নজরুল ইসলাম। বৃহস্পতিবার দুপুরে জামিনে মুক্ত হওয়া নজরুল ইসলাম পৌরসভায় দায়িত্বপালন করতে গেলেও দ্বিতীয়বারের মত বরখাস্ত হওয়ায় তিনি ফিরে এসেছেন।
উল্লেখ্য, গত দু’দিন ধরে জেলা জামায়াতের সাবেক আমীর নজরুল ইসলামকে ঘিরে ঘটছে ‘জামিনে মুক্তি, শ্যোন এ্যারেস্ট, বরখাস্তের’ নানান নাটকীয় ঘটনা।
সূত্র জানিয়েছে, প্রথম দফায় বরখাস্ত হওয়ার পর স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রণালয়ের নির্দেশে এবছরের ২০ নভেম্বর চাঁপাইনবাবগঞ্জ পৌরসভার মেয়র হিসেবে দায়িত্ব গ্রহণ করেন নজরুল ইসলাম। ওই দিন দায়িত্ব গ্রহণের তিন ঘন্টার মাথায় সদর উপজেলার চামাগ্রামের একটি বিষ্ফোরক মামলায় আদালতে আত্মসমার্পণ করে জামিন আবেদন করলে আদালত জামিন আবেদন নামঞ্জুর করে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন। গত ৬ ডিসেম্বর চাঁপাইনবাবগঞ্জের অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ আদালত (অবকাশকালীন বেঞ্জ) এর বিচারক জিয়াউর রহমান চামাগ্রামের ওই বিষ্ফোরক মামলায় তাকে জামিন প্রদান করেন। জামিনে মুক্তি পাওয়ার দিনই চাঁপাইনবাবগঞ্জ সদর থানা পুলিশ মহারাজপুরের অপর একটি বিষ্ফোরক (জিআর নম্বর ৫৬৬/১৬) মামলায় নজরুল ইসলামকে শ্যোন এ্যারেস্টের জন্য সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের বিচারক জুয়েল অধিকারীর আদালতে আবেদন করে। ওই বিচারক শ্যোন এ্যারেস্টের আবেদনের শুনানীর দিন নির্ধারণ করেন ৮ ডিসেম্বর। ফলে ৬ ডিসেম্বর জামিনে মুক্ত হলেও কারাগারেই আটকা পড়েন নজরুল ইসলাম। বৃহস্পতিবার শুনানীতে আদালত পুলিশের শ্যোন এ্যারেস্টের আবেদন নামঞ্জুর করায় ‘মুক্ত’ হয়ে বেরিয়ে আসেন নজরুল ইসলাম।
এদিকে, আগের মামলায় (চামাগ্রামের) জামিনে মুক্ত নজরুল ইসলাম বৃহস্পতিবার দুপুরে পৌরসভায় মেয়রের দায়িত্ব নিতে গিয়ে দ্বিতীয় দফায় বরখাস্ত হওয়ায় দায়িত্ব না পেয়েই ফিরে এসেছেন।
পৌরসভা সূত্র জানিয়েছে, দুপুরে দলীয় কর্মী সমর্থক ও আইনজীবিদের নিয়ে নজরুল ইসলাম পৌরসভায় যান। সেখানে পৌর মেয়রের কক্ষে ঢুকলে তাকে জানানো হয় দ্বিতীয় দফায় বরখাস্ত হওয়ার বিষয়টি। ওই সূত্র জানায়, মেয়রের কক্ষে ঢোকার পর তাকে বরখাস্তের বিষয়টি অবহিত করা হলে তিনি কোন পত্র পাননি বলে জানান। পরে তাকে পত্র দেখানো হলে তিনি ঠিক আছে বলে চলে আসেন।
এব্যাপারে পৌরসভার ভারপ্রাপ্ত মেয়র সাইদুর রহমানের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, ‘ বিষয়টি মন্ত্রণালয়ের সিদ্ধান্তের ব্যাপার। মন্ত্রণালয়ের আদেশ অনুযায়ী আমি বুধবার দায়িত্ব গ্রহণ করেছি। আজ (বৃহস্পতিবার) দুপুরের পর নজরুল সাহেব পৌরসভায় এসেছিলেন। মেয়র কক্ষে সৌজন্যতা বিনিময়ের পর তাকে মন্ত্রণালয়ের বরখাস্তের পত্রটি দেখানো হলে তিনি তা দেখে চলে যান’।
উল্লেখ করা যেতে পারে, প্রথম দফায় বরখাস্ত থাকার পর গত ৬ ডিসেম্বর স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রণালয়ের উপ-সচিব আবদুর রউফ বিয়া স্বাক্ষরিত এক পত্রে সাময়িকভাবে বরখাস্ত করা হয়। ওই পত্রে বলা হয়, চাঁপাইনবাবগঞ্জ সদর মডেল থানা মামলা নম্বর ২৪ (জিআর নম্বর ১০৮/২০১৫) এর অভিযোগ পত্র আদালতে গ্রহণ হওয়ায় তাকে সাময়িকভাবে বরখাস্ত করা হল।
প্রসঙ্গতঃ সদর থানার ২৪ নম্বর মামলা হচ্ছে, চাঁপাইনবাবগঞ্জ পৌর এলাকার রেহায়চর (ফুলকুড়ির পেছনে) এর আরিফ হত্যা মামলা।

চাঁপাইনবাবগঞ্জ নিউজ/ নিজস্ব প্রতিবেদক/০৮-১২-১৬