মোবাইল প্রতারণা > প্রলোভনে পা দিয়ে ৪০ হাজার টাকা খুয়ালেন এক গৃহবধু

দেশজুড়ে বায়োমেট্রিক পদ্ধতিতে বিভিন্ন সেল কোম্পানীর সীম নিবন্ধনের পরেও থামছেনা মোবাইল প্রতারণা। নানান প্রলোভনের জালে ফেলে সাধারণ মানুষের কাছ থেকে সংঘবদ্ধ চক্র হাতিয়ে নিচ্ছে লক্ষ লক্ষ টাকা। সাধারণ মানুষের অভিযোগ, প্রতারক চক্রের খপ্পড়ে পড়ে মানুষ সর্বশান্ত হলেও ধরাছোয়া’র বাইরে থেকে যাচ্ছে চক্রের মূলহোতারা। বুধবার চাঁপাইনবাবগঞ্জে প্রতারক চক্রের প্রলোভনে পা দিয়ে ৪০ হাজার টাকা খুইয়েছেন এক গৃহবধু।
চাঁপাইনবাবগঞ্জ শহরের ক্লাব সুপার মার্কেটের সামনের প্রেসক্লাব ভবনস্থ বিকাশ এজেন্ট রাকা মাল্টিমিডিয়া থেকে ওই গৃহবধু ৪০ হাজার টাকা পাঠিয়ে পুরো টাকায় খুইয়েছেন।
রাকা মাল্টিমিডিয়ার পরিচালক রয়েল জানান, দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে রিক্সাযাত্রী ২৬/২৭ বছর বয়সী এক গৃহবধু রিক্সাওয়ালে দিয়ে প্রথমে জানতে পাঠান যে বিকাশে টাকা পাঠানো যাবে কিনা। এর ওই গৃহবধু নিয়ে রিক্সা থেকে নেমে এসে ৫০ হাজার টাকা পাঠানোর ইচ্ছে পোষণ করেন। এতো বেশি পরিমাণ টাকা পাঠানোর কথা বলায় তাকে হয় যে ৫০ হাজার টাকা পাঠানো যাবেনা। ওই সময় সে দ্রুততার সঙ্গে টাকা পাঠানোর তাড়াহুড়া করতে থাকে।
রয়েল বলেন, ‘ প্রথমে তাকে জানানো হয় যে আমার এজেন্টে ব্যালান্স রয়েছে ৪০ হাজার এবং একটি নম্বরে ২৫ হাজারের বেশি টাকা পাঠানো যাবেনা। সে তখন ০১৭১৮০০০০০২ টি দিয়ে তাতে ২৫ হাজার টাকা পাঠানোর কথা বলে’।
তিনি জানান, ২৫ হাজার টাকা পাঠানোর পর ওই গৃহবধু ০১৭৭১১১০৬৫৬ নম্বরে বাকি ১৫ হাজার টাকা পাঠানোর জন্য বলে। এমনকি অন্যকোন দোকান থেকে বাকি ১০ হাজার টাকা ব্যবস্থা করার অনুরোধও করেন।
রয়েল বলেন, ‘ আমি তাকে আমার পক্ষে ১০ হাজার টাকা ম্যানেজ করা সম্ভব নয়। আর আপনি যেমন আচরণ করছে তাতে মনে হচ্ছে প্রতারণার শিকার হচ্ছেন’।
রয়েল জানান, এরপরই দোকানের সামনে থেকেই ওই গৃহবধু প্রতারক চক্রের সঙ্গে মোবাইল ফোনে কথা বলতে গিয়ে যখন জানতে ‘ আমি এখন টাকাগুলো কিভাবে পাবো’ তখনই আমারা নিশ্চিত হয়ে যায় যে, তিনি প্রতারণার শিকার হয়ে গেলেন।
ওই সময় ঘটনাস্থলে থাকা ডিবিসি টেলিভিশনের সাংবাদিক জহুরুল ইসলাম ওই গৃহবধুকে সচেতন করার চেষ্টাও করেন। সাংবাদিক জহুরুল বলেন, ‘ ওই মহিলার আচরণ এবং কথাবার্তা দেখে সন্দেহ হলে তাকে অবহিত করি যে, এখন মোবাইলে কিন্তু প্রতারণা হচ্ছে। আপনি প্রতরণার শিকার হচ্ছেননাতো’। তিনি জানান, ওই গৃহবধুকে এমন কথা বলার পরেও তাকে থামানো যায়নি। বরং সে মিথ্যের আশ্রয় নিয়ে বলেন, ‘তার ভাই ঢাকার একটি হাসপাতালে আইসিইউতে আছে তাড়াতাড়ি টাকা পাঠাতে হবে’।
এদিকে, বিষয়টি জানাজানি হলে ওই গৃহবধু’র স্বজনরা ঘটনাস্থলে আসেন এবং ওই গৃহবধুকে বাড়ি নিয়ে যান।
ঘটনার পর ভুক্তভোগি ওই গৃহবধু’র প্রতিবেশি অভিযোগ বলেন, ‘ দেশজুড়ে সংঘবদ্ধ প্রতারক চক্র এইভাবে সাধারণ মানুষকে মিথ্যে প্রলোভনের জালে জড়িয়ে সর্বশান্ত করছে। অথচ প্রতারক চক্রের কিছুই হচ্ছেনা। তারা থেকে যাচ্ছে ধরাছোয়ার বাইরে এবং একেরপর এক নিরীহ সাধারণ মানুষকে প্রতারণা করেই যাচ্ছে’।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক ওই প্রতিবেশি অভিযোগ করে বলেন, ‘ ব্যাপক আয়োজন করে সেল কোম্পানীর সীমগুলো বায়োমেট্রিক পদ্ধতিতে নিবন্ধন করা হল। কিন্তু সাধারণ মানুষের লাভের লাভ কি হচ্ছে’।

চাঁপাইনবাবগঞ্জ নিউজ/ নিজস্ব প্রতিবেদক/ ২৩-১১-১৬