হাটে ভারতীয় গরুর উপস্থিতি থাকলেও দেশী গরুর পরিমাণই বেশি

ঘনিয়ে আসছে ঈদুর আযহার দিন। ঈদুল আযহার অন্যতম ইবাদত পশু কোরবানি। তাই কোরাবানির পশু কেনার জন্য হাটমূখি ধর্মপ্রাণ মুসলমানরা। চাঁপাইনবাবগঞ্জের হাটগুলো ক্রেতাদের ভিড়ে গমগম করছে। জমে উঠেছে বেচা-কেনাও। বাড়ছে ক্রেতাদের ভিড়। সাপ্তাহিক হাট ছাড়াও বিভিন্ন গ্রামে গ্রামে বেচা কেনা হচ্ছে কোরবানির পশু। হাটে হাটে ভারতীয় গরুর উপস্থিতি থাকলেও দেশী গরুর পরিমাণই বেশি।
জেলার শিবগঞ্জ উপজেলার তর্তিপুর, আড়গাড়া, খাসেরহাট, মনাকষা, নাচোলের সোনাইচন্ডি, মল্লিকপুর, গোমস্তাপুরের রহনপুর, ভোলাহাটের গোহালবাড়ি, চাঁপাইনবাবগঞ্জ সদরের বটতলাহাট ও রামচন্দ্রপুরহাট সরেজমিনে ঘুরে দেখা গেছে, ভারতীয় গরুর চাইতে দেশি গরুর সরবরাহ বেশী। এর কারণ হিসেবে মনাকষা হাট ইজারাদার বাহারুল ইসলাম বেনজির জানান, জেলার বিভিন্ন সীমান্তের বিট/খাটাল দিয়ে ঈদুল ফিতর পর্যন্ত হাজার হাজার গরু আসলেও কোরবানির ঈদকে সামনে রেখে তুলনামূলক ভারতীয় গরু আসেনি। এ সুযোগে দেশি গরুর চাহিদা বেড়ে যাওয়ায় বিক্রেতারা গরুর দামও বাড়িয়ে দিয়েছে। হাটগুলোতে ছোট আকারের গরু ৫০-৫২ হাজার, মাঝারী আকারের ৭৫-৮০ হাজার, বড় আকারের গরু ১ লাখ থেকে ১ লাখ ৫ হাজার টাকা এবং ছাগল ৯ থেকে ২৫ হাজার টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে। আর এই ঈদকে সামনে রেখে জেলার ছোট-বড় খামারিরা এ বছর প্রায় ৮০ হাজার গরু মোটাতাজাকরণ প্রকল্পের মাধ্যমে পালন করেছে। দেশি গরু খামারের ব্যবসায়ী নামোশংকরবাটির শহিদুল ইসলাম জানান, কোরবানির আগে ভারতীয় গরুর আমদানি কম হওয়ায় এবার তারা দেশী গরু বিক্রি করে লাভবান হয়েছে। আগামীতেও কোরবানির আগে ভারতীয় গরু আমাদনি বন্ধ থাকলেও দেশী খামারিরা একদিকে যেমন উৎসাহিত হবে, তেমনি দেশে গরুর উৎপাদনের হার বৃদ্ধি পাবে।
শুক্রবার জেলা সদরের বটতরা হাটে গরু কিনতে গিয়েছিলেন ওয়াহব আলী ও ইবায়দুর রহমান। তারা জানান, প্রায় ১০০ কেজি মাংশ পাওয়া যাবে এমন একটি গরু তারা কিনেছেন ৪৫ হাজার টাকায়। এটা গতবারের তুলনায় একটু বেশি মনে হয়েছে।
ঢাকার ক্রেতা আব্দুল লতিফ জানান, ভারতীয় গরু কম আসার অজুহাতে বেশী দাম হাঁকছেন বিক্রেতারা। এতে মধ্যবিত্ত মানুষদের এবার কোরবানি দিতে হিমশিম খেতে হচ্ছে।
এদিকে, চাঁপাইনবাবগঞ্জ থেকে এখন প্রতিদিন ২৫/৩০ ট্রাক গরু ঢাকার গাবতলিসহ দেশের বিভিন্ন হাটে যাচ্ছে।
জেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা আবুল কাশেম জানান, জেলায় এবার  প্রায় ১ লাখ  ৪০ হাজার গরু, মহিষ, ছাগল ও ভেড়ার কোরবানির জন্য চাহিদা রয়েছে।  রোগাক্রান্ত গরু যাতে হাটগুলোতে প্রবেশ করতে না পারে সেজন্য ভ্রাম্যমাণ  মেডিকেল টিম কাজ করছে।
এদিকে, চাঁপাইনবাবগঞ্জ পুলিশ সুপার টিএম মোজাহিদুল ইসলাম জানান, এ বছর জেলায় ছোট-বড় ১৮টি কোরবানির পশুর হাট বসেছে। এর মধ্যে চারটি অস্থায়ী হাটও রয়েছে। হাটগুলোর ক্রেতা-বিক্রেতাদের নিরাপত্তার স্বার্থে পুলিশের টহল নিশ্চিত করা হয়েছে। পাশাপাশি জাল টাকার সনাক্তকরণে ৫টি মেশিন স্থাপন করা হয়েছে। যাতে কেউ প্রতারণা ও অজ্ঞান পার্টির খপ্পরে পড়ে ক্ষতিগ্রস্থ না হয় সেজন্য মাইকিং এর ব্যবস্থা করা হয়েছে, পাশপাশি জেলা থেকে ঢাকাসহ বিভিন্ন হাটের উদ্দেশ্যে গরু ভর্তি ট্রাক থেকে চাঁদা আদায়ের ব্যাপারে কঠোর ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে।

চাঁপাইনবাবগঞ্জ নিউজ/ নিজস্ব প্রতিবেদক/ ১০-০৯-১৬