হাইকোর্টের নিষেধাজ্ঞা সত্ত্বেও ‘সাদাপোশাকে’ পুলিশ ধরলেন বিএনপি নেতা আশরাফকে

মাত্র ১ মাস আগে দেয়া হাইকোর্টের নিষেধাজ্ঞা সত্ত্বেও পুলিশ ‘সাদাপোশাকে’ গ্রেফতার করেছে চাঁপাইনবাবগঞ্জের শিবগঞ্জ উপজেলার নয়ালাভাঙ্গা ইউনিয়ন পরিষদের নবনির্বাচিত চেয়ারম্যান ও বিএনপি নেতা আশরাফুল হককে। মঙ্গলবার দুপুরে চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলা প্রশাসক কার্যালয়ের সামনে শপথ গ্রহণ শেষে তাকে গ্রেফতার করা হয়।
সকালে চাঁপাইনবাবগঞ্জের জেলা প্রশাসকের সম্মেলন কক্ষে শিবগঞ্জ উপজেলার ১৪টি এবং ভোলাহাট উপজেলার ৪টি ইউনিয়ন পরিষদের নবনির্বাচিত শপথ গ্রহণ অনুষ্ঠিত হয়। চাঁপাইনবাবগঞ্জের জেলা প্রশাসক জাহিদুল ইসলাম নির্বাচিত চেয়ারম্যানদের শপথ বাক্য পাঠ করান। এসময় অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক তৌফিকুল ইসলাম, জেলা নির্বাচন অফিসার শহিদুল ইসলাম, জেলা প্রশাসনের কর্মকর্তা ও বিভিন্ন শ্রেণী পেশার মানুষ উপস্থিত ছিলেন।
আনুষ্ঠানিক শপথ গ্রহণ শেষে জেলা প্রশাসকের সম্মেলন কক্ষ থেকে শপথগ্রহণকারী অন্যান্য চেয়ারম্যানদের সঙ্গে বেলা সাড়ে ১১টার দিকে ইউপি চেয়ারম্যান আশরাফুল হক জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের সামনে আসেন।
জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের সামনে থাকা প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, আশারাফুল হক জেলা প্রশাসক কার্যালয়ের মুল প্রবেশ দ্বার থেকে কিছুটা সামনে এগিয়ে আসলে সাদাপোশাকে গোয়েন্দা পুলিশের একটি দল তাকে গ্রেফতার করে। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক প্রত্যক্ষদর্শী বলেন, ‘ গেঞ্জি পড়া তিনজন ব্যক্তি আশরাফ চেয়ারম্যানকে ঘিরে ফেলেন এবং দু’জন তার দু’ হাত জাপটে ধরে সামনের দিকে এগিয়ে যান’।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানায়, গ্রেফতারের পর ইউপি চেয়ারম্যান আশরাফকে পুলিশের একটি পিকআপ ভ্যানে করে নিয়ে যাওয়া হয়।
এব্যাপারে চাঁপাইনবাবগঞ্জের পুলিশ সুপার বশির আহম্মেদ পিপিএম (বার) এর সঙ্গে যোগাযোগের জন্য তার সেলফোনে কয়েকবার ফোন করলেও তিনি ‘কল রিসিভ’ করেননি।
চাঁপাইনবাবগঞ্জ গোয়েন্দা পুলিশের ওসি হামিদুর রশিদের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি প্রথমে বলেন, ‘বিষয়টি তার জানা নেই’। দ্বিতীয় দফায় তিনি জানান, চাঁপাইনবাবগঞ্জের নাচোল থানার একটি নাশকতার মামলার আসামী হিসেবে তাকে গ্রেফতার করা হয়েছে এবং তাকে আদালতে সোপার্দ করা হয়েছে।
নাচোল থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) ফাসির উদ্দীন বলেন, ‘তার বিরুদ্ধে নাচোল থানায় নাশকতার মামলা রয়েছে। সেই মামলার আসামী হিসেবে ডিবি পুলিশের সহযোগিতায় তাকে নাচোল পুলিশ গ্রেফতার করে’।
উল্লেখ্য, ১৭ মে ফৌজদারি কার্যবিধির ৫৪ ও ১৬৭ ধারা অনুযায়ী আটক ও রিমান্ডের ক্ষেত্রে হাইকোর্টের দেওয়া নির্দেশনার বিরুদ্ধে সরকারের করা আপিলের শুনানি চলাকালে প্রধান বিচারপতি সুরেন্দ্র কুমার সিনহা বলেন, ‘সাদা পোশাকে গ্রেপ্তার ভয়াবহ অপরাধ।’
গত ১৮ জানুয়ারি স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খাঁন কামাল বলেন, এখন থেকে সাদা পোশাকে পুলিশ ডিউটি করতে পারবে না। গোয়েন্দা পুলিশ যদি সাধারণ পোশাকে দায়িত্ব পালন করে তবে তাকে অবশ্যই গোয়েন্দা পুলিশের ট্যাগ মার্ক লাগানো কটি পরতে হবে। কটি না পরলে তিনি দায়িত্বরত বলে বিবেচিত হবেন না।’

চাঁপাইনবাবগঞ্জ নিউজ/ নিজস্ব প্রতিবেদক/ ২১-০৬-১৬

,