বিদ্রোহীর ভারে ডুবল নৌকা ❀ একপক্ষের অভিযোগ ‘এমপি-ইউএনও পাল্টে দিয়েছে ফলাফল’ ❀ অন্যপক্ষের দাবি ‘মনোনয়ন বাণিজ্যের কারণেই এমন ভরাডুবি’

ভোটের হিসেবে ও সাংগঠনিক বিচারের চাঁপাইনবাবগঞ্জের শিবগঞ্জ ও ভোলাহাটে ‘সেয়ানে সেয়ানে’ অবস্থানে থাকা আওয়ামী লীগ, বিএনপি ও জামায়াতের মধ্যে এবারের ইউপি নির্বাচনে আওয়ামী লীগের ভরাডুবি ঘটেছে। ১৮ ইউনিয়নে মাত্র দু’টিতে জয়ী হয়েছে নৌকা। শিবগঞ্জের ১৪ ইউনিয়নে দু’টিতে জয় পেলেও ভোলাহাটের ৪ ইউনিয়নে একটিতেও জয় পায়নি আওয়ামী লীগের মনোনীত প্রার্থীরা। তবে, শিবগঞ্জের ৫ ইউনিয়নে জয়ী হয়েছে আওয়ামী লীগের বিদ্রোহীরা। শিবগঞ্জে জেলা আওয়ামী লীগ ও উপজেলা আওয়ামীগের দ্বন্দ্ব, প্রার্থী নির্ধারণে যোগ্যতা চেয়ে ‘অনুসারীদের’ প্রাধান্য দেয়াসহ বিদ্রোহী প্রার্থীরা ‘পৃষ্টপোশকাতা’ পাওয়া এই শোচনীয় পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছে বলে দলীয় সূত্রগুলো জানিয়েছে। এদিকে, রোববার চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলা আওয়ামী লীগ কার্যালয়ে পরাজিত ১০ চেয়ারম্যান প্রার্থী একযোগে সাংবাদিক সম্মেলন করে নৌকার পরাজনের জন্য এমপি ও ইউএনওকে দায়ি করেছেন।
দলীয় সূত্র জানায়, গত পৌরসভা নির্বাচনে দলীয় মেয়র প্রার্থী নির্ধারণকে ঘিরে শিবগঞ্জ উপজেলা আওয়ামী লীগ ও শিবগঞ্জ পৌর আওয়ামী লীগের আভ্যন্তরিণ দ্বন্দ্ব প্রকট আকার ধারণ করে। উপজেলা আওয়ামী লীগের মধ্যকার দু’গ্রুপের দ্বন্দ্বের প্রকাশ্যে জড়িয়ে জেলা আওয়ামী লীগ। শিবগঞ্জ উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি গোলাম রাব্বানী এমপি ও সাধারণ সম্পাদক এ্যাড. আতাউর রহমান গ্রুপ মেয়র পদে শিবগঞ্জ পৌর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক কারিবুল হক রাজিনের পক্ষ নিলে জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি মইনুদ্দীন মন্ডল ও সাধারণ সম্পাদক আব্দুল ওদুদ এমপি রাজিনের বিপরীত অবস্থানে চলে আসেন। কেন্দ্র থেকে শিবগঞ্জ পৌর নির্বাচনে প্রার্থী মনোনয়ন দেয়া হয় মন্ডল-ওদুদ অনুসারী জেলা আওয়ামী লীগের সাংস্কৃতিক সম্পাদক ময়েন খানকে। নির্বাচনে বিদ্রোহী প্রার্থী থেকে গিয়ে রাজিন পৌর মেয়র নির্বাচিত হন এবং ময়েন খানের জামানত বায়েজাপ্ত হয়। ওই নির্বাচনেই উপজেলা আওয়ামী লীগের সঙ্গে জেলা আওয়ামী লীগের দ্বন্দ্বে বহিপ্রকাশ হিসেবে জেলা আওয়ামী লীগের পক্ষ থেকে শিবগঞ্জ উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি গোলাম রাব্বানী এমপি, সাধারণ সম্পাদক এ্যাড. আতাউর রহমান, পৌর মেয়র কারিবুল হক রাজিনকে দল থেকে বহিস্কার করে চুড়ান্ত বহিস্কারের জন্য কেন্দ্রের কাছে সুপারিশ করে। এ নিয়ে পাল্টাপাল্টি বিক্ষোভ ও সমাবেশও অনুষ্ঠিত হয়েছে।
দলীয় সূত্র জানিয়েছে, উপজেলা আওয়ামী লীগ ও জেলা আওয়ামী লীগের মুখোমুখি অবস্থানের মুখে ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে দলীয় প্রার্থী নির্ধারণের বিষয়টি চলে আসলে সংকট প্রকট আকার ধারণ করে। ওই সূত্র জানায়, কেন্দ্র ঘোষিত নীতিমালা অনুযায়ী ‘তৃণমূল প্রার্থী বাছাই করবে’। সে অনুযায়ী ইউনিয়ন নির্বাহী কমিটি সভা করে সিদ্ধান্ত নিয়ে ইউনিয়নের সভাপতি, সাধারণ সম্পাদক, উপজেলার সভাপতি, সাধারণ সম্পাদক ও জেলার সভাপতি, সাধারণ সম্পাদক মিলিয়ে ৬ সদস্যের বোর্ড প্রার্থী নির্ধারণ করে তা চুড়ান্তের জন্য কেন্দ্রের কাছে পাঠাবেন। কিন্তু জেলা আওয়ামী লীগের ‘বিচারে’ শিবগঞ্জ উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক বহিস্কৃত হওয়ায় জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক প্রার্থী করেন। এক্ষেত্রে তারা কয়েকটি ইউনিয়নের শুধু ইউনিয়ন সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকের মতামত নিয়েছেন। দলীয় সূত্র জানিয়েছে, ইউনিয়ন আওয়ামী লীগ নির্বাহী কমিটি’র সভা করে প্রার্থী মনোনয়ন দেয়ার কথা থাকলেও শিবগঞ্জের ১৪ ইউনিয়নের শুধু মনাকষা ছাড়া অন্য ইউনিয়নে নোটিশ দিয়ে প্রার্থী নির্ধারণী সভা হয়নি। শিবগঞ্জের গোলাম রাব্বাীন-আতাউর পক্ষের বাইরের পক্ষ নির্ধারণ করে দেয়া প্রার্থীদের মনোনয়ন দেয়া হয়।
শিবগঞ্জ উপজেলা আওয়ামী লীগের প্রস্তাবিত কমিটির যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক তৌহিদুল আলম টিয়া বলেন, ‘ নেতাদের দ্বান্দ্বিক অবস্থার মধ্যে জেলা আওয়ামী লীগের পক্ষ থেকে ইউপি নির্বাচনে প্রার্থী হতে আগ্রহীদের কাছ থেকে দরখাস্ত আহবান করা হয়েছিল। সে অনুযায়ী অনেকে দরখাস্তও করেছিলেন। কিন্তু জেলা আওয়ামী লীগ দরখাস্তকারীদের নিয়ে কোন বৈঠকই করেনি’।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক আওয়ামী লীগ নেতা বলেন, ‘রাব্বানী গ্রুপের বিপরীত গ্রুপের নেতৃত্বদানকারী জেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ডা. সামিল উদ্দীন আহম্মেদ শিমুলের চোখ দিয়ে দেখা চিত্রের উপরই জেলা আওয়ামী লীগ প্রার্থী নির্ধারণ করেছেন। তবে, সদর উপজেলার পাশ্ববর্তী নয়ালাভাঙ্গা ও ঘোড়াপাখিয়া ইউনিয়নের জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও সদরের এমপি আব্দুল ওদুদ তার অনুসারীদের প্রার্থী চুড়ান্ত করতে তৎপরতা চালিয়েছিলেন এবং প্রার্থী চুড়ান্ত করিয়েছিলেন’।
দলীয় সূত্র জানায়, জেলা আওয়ামী লীগের তালিকা অনুযায়ী চেয়ারম্যান প্রার্থী মনোনয়ন চুড়ান্ত হলে শিবগঞ্জজুড়ে হ-য-ব-র-ল অবস্থার সৃষ্টি হয়। সিংহভাগ ইউনিয়নেই একাধিক আওয়ামী লীগ নেতা ‘বিদ্রোহী প্রার্থী’ হিসেবে প্রতিদ্বন্দ্বিতার কাতারে চলে আসেন। দলের নেতারা বলেন, ‘এলাকায় অপেক্ষকৃত কম গ্রহণযোগ্য ব্যক্তিদের শুধু নিজেদের অনুসারী হওয়ার কারণে প্রার্থী করায় ইউনিয়নে ইউনিয়নে একাধিক প্রার্থীর ছড়াছড়ি সৃষ্টি হয়’। দলের নেতারা জানান, একাধিক বিদ্রোহী প্রার্থী নির্বাচনে চলে আসার কারণে দলীয় মনোনয়ন পাওয়া প্রার্থীদের বেকায়দায় পড়ার মুখে বিদ্রোহীদের নিবৃত্ত করা কাজে আসেনি রাব্বানী-আতাউর ও রাজিন গ্রুপের পৃষ্টপোশকতার কারণে। দলীয় সূত্র জানায়, ১৪ ইউনিয়নে নৌকার প্রার্থী কাজ শুরু করার সঙ্গে সঙ্গে ১২ ইউনিয়নে বিদ্রোহী প্রার্থীরাও নির্বাচনী তৎপরতা শুরু করেন। এরমধ্যে রাব্বানী-আতাউর ও রাজিন গ্রুপ ১১ ইউনিয়নের ১১ জন বিদ্রোহী প্রার্থী চুড়ান্ত করে পৃষ্টপোষকতা দেয়া শুরু করেন। নির্বাচনে এই ১১ জনের মধ্যে ৫ জন বিজয়ী হন। ভরাডুবি ঘটে নৌকার। ১৪ ইউনিয়নে নৌকা জয়ী হয় মাত্র ২টি। বিএনপি পায় ৫টি। আর স্বতন্ত্রের আড়ালে জামায়াত নেতা জয়ী হয় দু’টিতে।
নির্বাচনী ফলাফলে দেখা গেছে, মনাকষায় শিবগঞ্জ উপজেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক মির্জা শাহাদাত হোসেন খুররম ও জামায়াত অধ্যুষিত এলাকা হিসেবে পরিচিত ধাইনগর ইউনিয়নে নৌকার প্রার্থী তাবারিয়া চৌধুরী জয়ী হলেও অন্যান্য অধিকাংশ ইউনিয়নে নৌকার প্রার্থীর অবস্থান তিন নম্বরে। কোথাও তারও নিচে।
১৪ ইউনিয়নের ১১ টিতেই পৃষ্টপোশকতা পাওয়া বিদ্রোহী প্রার্থীদের ৫জন ব্যাপক ভোটে জয়ী হয়েছেন। বিনোদপুর ইউনিয়নের বিদ্রোহী প্রাথী এনামুল হক যেখানে পেয়েছেন ১০ হাজার ৯৬৫ ভোট সেখানে নৌকার প্রার্থী পেয়েছেন ৬ হাজার ৯১৩ ভোট। উজিরপুর ইউনিয়নে বিদ্রোহী প্রার্থী ফয়েজ উদ্দীন ২ হাজার ৪৫৮ ভোট পেয়ে জয়ী হয়েছেন। এখানে আওয়ামী লীগে মনোনীত প্রার্থী দুরুল হোদা পেয়েছেন ২ হাজার ৩৮৯ ভোট। দুর্লভপুর ইউনিয়নের আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী প্রার্থী আব্দুর রাজিব রাজু ৯ হাজার ৩৮৮ ভোট পেয়ে বিজয়ী হয়েছেন। দুর্লভপুরে তিন নম্বর অবস্থানে থাকা নৌকার প্রার্থী আবু আহম্মেদ নজরুল কবীর মুক্তা পেয়েছেন ৫ হাজার ৬৬১ ভোট। ছত্রাজিতপুর ইউনিয়নে বিদ্রোহী প্রার্থী শামসুল হক হারিয়েছেন বিএনপি প্রার্থী তসিকুল ইসলামকে। শামসুল হক পেয়েছেন ৪ হাজার ৩৫৮ ভোট। বিএনপি’র প্রার্থী পেয়েছেন ৩ হাজার ৪৬২ ভোট। এখানে আওয়ামী লীগ মনোনীত গোলাম রাব্বানী ছবি পেয়েছেন ২ হাজার ১৮৮ ভোট। পাকা ইউনিয়নে আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থী পেয়েছেন মাত্র ১ হাজার ১৮৫ ভোট। এখানে বিদ্রোহী প্রার্থী মজিবুর রহমান ৪ হাজার ৩৩৯ ভোট পেয়ে বিএনপি প্রার্থী আব্দুল মালেককে পরাজিত করেন।
নির্বাচনে শাহবাজপুর, শ্যামপুর, মোবারকপুর, বিনোদপুর, উজিরপুর, চককৃর্তি ও নয়ালাভাঙ্গায় দ্বিতীয় অবস্থান করতে পেরেছেন নৌকার প্রার্থীরা। এসব ইউনিয়নের সিংহভাগ ইউনিয়নেই বিদ্রোহী প্রার্থীদের ‘ভোট টেনে নেয়ায়’ জয়ী হয়েছেন বিএনপি প্রার্থীরা এবং স্বতন্ত্রের আড়ালে জামায়াত নেতারা। অবশ্য দু’টি ইউনিয়নে লড়াই হয়েছে বিএনপি প্রার্থী বনাম বিদ্রোহী বিএনপি প্রর্থীর মধ্যে। এখানে আওয়ামী লীগ মনোনীত ও আওয়ামী লীগ বিদ্রোহীরা সফলতা দেখাতে পারেননি।
নির্বাচনে পরাজিত আওয়ামী লীগের প্রার্থীরা পরাজয়ের জন্য বিদ্রোহী প্রার্থীদের পাশাপাশি প্রশাসনিক হস্তক্ষেপকেও দায়ি করেছেন। উজিরপুর ইউনিয়নের আওয়ামী লীগের প্রার্থী দুরুল হোদা অভিযোগ করে বলেন, ‘ আমাকে মেকানিজম করে হারানো হয়েছে। স্থানীয় সংসদ সদস্য ও কয়েকজন আওয়ামী লীগ নেতা প্রভাবিত করে ফল বদলিয়েছেন। সুষ্ঠু নির্বাচন হলে আমিই জয়ী হতাম’। উল্লেখ্য, উজিরপুর ইউনিয়নে ফল পাল্টে দেয়ার অভিযোগ করে নির্বাচন কমিশনে আবেদন করেছেন আওয়ামী লীগের প্রার্থী দুরুল হোদা।
দলীয় সূত্রগুলো বলছে, দলীয় কোন্দলের কারণে রাব্বানী-আতাউর ও রাজিন গ্রুপের পৃষ্টপোশকতা প্রদান এবং উপজেলা আওয়ামী লীগকে পাশকাটিয়ে জেলা আওয়ামী লীগ থেকে প্রার্থী মনোনয়নের সুপারিশের কারণেই নৌকার এমন ভরাডুবি ঘটেছে। দলীয় প্রার্থী নির্ধারণে সমন্বয় ও জনপ্রিয়তাকে বিবেচনা করা হয়নি।
চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলা আওয়ামী লীগে যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ডা. সামিল উদ্দীন আহম্মেদ শিমুলের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, ‘ মনোনয়ন দেয়া নিয়ে যে কথা উঠছে তা সঠিক নয়। ২/১টিতে ত্রুটি থাকলেও ১১/১২টিতে মনোয়ন দেয়া হয়েছিল সঠিক ব্যক্তিদের। ইউনিয়ন আওয়ামী লীগ যাদের নাম জেলা আওয়ামী লীগের কাছে দিয়েছে তাদের নামই সুপারিশ আকারে জেলা থেকে কেন্দ্রে পাঠানো হয়েছে’। তিনি অভিযোগ করেন বলেন, এমপি গ্রুপ চায়নি নৌকার প্রার্থী বিজয়ী হউক। সেকারণে এমপি ও ইউএনও চক্রান্ত করে চক্রান্ত করে নৌকার প্রার্থীদের হারিয়েছেন’।
রোববার অনুষ্ঠিত সম্মেলনেও এমন অভিযোগ করা হয়। তাতে বলা হয়, আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থীর পরাজিত করতে এমপি ও ইউএনও নির্বাচনের ১০ দিন আগে থেকেই নানামূখি তৎপরতা শুরু করে। ইলেকশন ইঞ্জিনিয়ারিং-এর মাধ্যমে নৌকার প্রার্থীদের পরাজিত করা হয়। সম্মেলনে আরো অভিযোগ করা হয়, কৌশলে এমপি ও ইউএনও কোন কোন ইউনিয়নে বিদ্রোহী প্রার্থী আবার কোন কোন ইউনিয়নে বিএনপি- জামায়াতের প্রার্থীর পক্ষ অবলম্বন করেন। ইচ্ছামত ফলাফল তৈরী করে নৌকার প্রার্থীদের পরাজিত করান।
এ বিষয়ে প্রতিক্রিয়া জনাতে শিবগঞ্জ আসনের আওয়ামী লীগ দলীয় এমপি গোলাম রাব্বানীর সঙ্গে সেল ফোনে একাধিকবার যোগাযোগ করার চেষ্টা করেও তাকে পাওয়া যায়নি।
শিবগঞ্জ উপজেলা আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক এ্যাড. আতাউর রহমান বিদ্রোহী প্রার্থীদের পৃষ্টপোশকার অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, ‘আমাদেরকে বাদ দিয়ে তারাই ( জেলা আওয়ামী লীগ) প্রার্থী ঠিক করেছে। ইউনিয়নে কোন বর্ধিত সভায় মনগড়া প্রার্থীদেরকে মনোনয় দেয়া হয়েছে। এখানে জেলা আওয়ামী লীগ জনপ্রিয়তা ও যোগ্যতাকে বিচার না করে মনোনয়ন বাণিজ্য করছে। যার কারণেই এমন ভরাডুবি ঘটেছে।
এদিকে, ভোলাহাট উপজেলার ৪ ইউনিয়নের মধ্যে একটিতেও জয়ী হয়নি আওয়ামীলীগের প্রার্থীরা। দলীয় কোন্দলের কারণেই পরাজয় বরণ করতে হয়েছে বলে দাবি করেছেন দলীয় প্রার্থীরা। গোহালবাড়ি ইউনিয়নের নৌকার প্রার্থী ইয়াসিন আলী শাহ বলেন, ‘ বিএনপি-জামায়াত বিরোধীতা করবে এটাই স্বাভাবিক। কিন্তু আমার দলের ভেতরে লোকজনই চক্রান্ত করেছে। পরিকল্পিতভাবে স্বতন্ত্র প্রার্থী আলাউদ্দীনকে আওয়ামী লীগ নেতা বসিয়ে দিয়ে বিএনপি প্রার্থীর পথকে সুগম করেছে’। তিনি অভিযোগ করেন, আওয়ামী লীগের নেতার গ্রুপিংএর কারণে নৌকাকে গুরুত্ব না দিয়ে সদস্য প্রার্থীদের প্রতি বেশি মনোযোগী ছিলেন।
জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি মইনুদ্দীন মন্ডল যথাযথভাবেই মনোনয়ন দেয়া হয়েছে উল্লেখ করে বলেন, শিবগঞ্জে এমপি, ( গোলাম রাব্বানী), রাজিন আর ইউএনও আগে থেকেই বিদ্রোহীরা যাতে জিততে পারে সে তৎপরতায় ব্যস্ত ছিল। তাদের চক্রান্তের কারণেই নৌকার প্রার্থীরা পরাজিত হয়েছে’।

চাঁপাইনবাবগঞ্জ নিউজ/ নিজস্ব প্রতিবেদক/ ১৫-০৫-১৬

, ,