মহিপুর কলেজ মোড়ে বখাটে কুপিয়ে মারল স্কুল ছাত্রীকে ❀ আহত তিন ছাত্রীর দু’জনকে রাজশাহী ও একজনকে ঢাকায় স্থানান্তর (আপডেটসহ)

চাঁপাইনবাবগঞ্জ সদর উপজেলার গোবরাতলা ইউনিয়নের মহিপুর কলেজ মোড়ে শুক্রবার সকালে আব্দুল মালেক নামের এক বখাটে যুবকের ধারালো অস্ত্রের আঘাতে এক স্কুল ছাত্রী নিহত হয়েছে। এ হামলায় আহত হয়েছে আরো ৩ ছাত্রী। নিহত কনিকা সদর উপজেলার দিয়াড় ধাইনগর গ্রামের লক্ষণ ঘোষের মেয়ে ।
আহতরা হলো, একই গ্রামের আব্দুল খালেকের মেয়ে তারিন আফরোজ (১৫), অরুনবাড়ি মহিপুর গ্রামের তাজেমুল হকের মেয়ে তানজিমা আক্তার (১৪) ও বেহুলা গ্রামের মোকবুল হোসেনের মেয়ে মরিয়ম আক্তার। এরা মহিপুর এস এম দ্বিমুখী উচ্চ বিদ্যালয়ের ১০ম শ্রেণীর ছাত্রী।

পুলিশ ও স্থানীয়রা জানায়, সকাল সোয়া ৯টার দিকে মহিপুর এস এম দ্বিমুখী উচ্চ বিদ্যালয়ের দশম শ্রেণীর চার ছাত্রী প্রাইভেট পড়ে বাড়ি ফেরার পথে মহিপুর কলেজ মোড়ে দিয়ার ধাইনগর গ্রামের আব্দুল লতিফের বখাটে ছেলে আব্দুল মালেক তাদের পথ রোধ করে হাসুয়া দিয়ে এলোপাতাড়ি কোপাতে শুরু করে। এ সময় হাসুয়ার আঘাতে আহত হয়ে মহিপুর গ্রামের লক্ষণ ঘোষের মেয়ে কনিকা রানী ঘোষ (১৫) মাটিতে লুটিয়ে পড়ে। কনিকার সঙ্গে থাকা অন্যান্য শিক্ষার্থী একই এলাকার তানজিলা, মরিয়ম ও তারমিন পালিয়ে যাবার চেষ্টা করলে তাদেরকেও এলোপাতাড়িভাবে কুপিয়ে আহত করে।

স্থানীয়রা আহতদের উদ্ধার করে হাসপাতালে নেয়ার পথে কনিকা মারা যায়।  আহতদের মধ্যে  তারিন আফরোজ ও তানজিমাকে প্রথমে চাঁপইনবাবগঞ্জ সদর হাসপাতালে পরে  রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে এবং মরিয়মকে স্থানীয় একটি ক্লিনিকে ভর্তি করা হয়।
পরে তাদের অবস্থার অবনতি হলে তারিন ও তানজিমকে রাজশাহী মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে এবং মরিয়মকে ঢাকার পঙ্গু হাসপাতালে স্থানান্তর করা হয়।
সদর হাসপাতালের কর্তব্যরত চিকিৎসক শামসুল আলম বলেন, নিহত কনিকার হাতের কব্জিতে ধারালো অস্ত্রের বড় আঘাত ছিল। হাতের হাডিড পর্যন্ত কেটে গেছিল। আর কোমরের গভীর কোপ ছিল। অতিরিক্ত রক্তক্ষরণের কারণেই তার মৃত্যু হয়েছে বলে ধারণা করা হচ্ছে। অন্যছাত্রীদের মাথার পেছনে, ঘাড়ে ও পায়ে বড় ধরণের ধারালো অস্ত্রের আঘাত রয়েছে। তাদের কানদিয়েও রক্ত বের হচ্ছিল। তাই উন্নত চিকিৎসার জন্য তাদের রেফার করা হয়েছে’। 
এদিকে, মর্মান্তিক এ ঘটনার পর স্থানীয়রা বখাটে মালেককে ধরে আটকে রাখে। পরে তাকে পুলিশে সোপার্দ করা হয়। 
পুলিশ, কনিকার লাশ উদ্ধার করে ময়না তদন্তের জন্য চাঁপাইনবাবগঞ্জ সদর হাসপাতালে পাঠালে বিকেল ৫টার দিকে ময়না তদন্ত সম্পন্ন করা হয়।
এদিকে সিনিয়র সহকারী পুলিশ সুপার (সদর সার্কেল) ওয়ারেশ আলী মিয়া ঘটনাস্থল পরিদর্শন শেষে বিকেল ৩টায় সাংবাদিকদের জানান, এ ঘটনায় জনগণের সহায়তায় মূল আসামি আব্দুল মালেককে আটক করা হয়েছে।

সেই সাথে হত্যাকন্ডের ব্যবহৃত হাঁসুয়াটি উদ্ধার করা হয়েছে।

তিনি আরো জানান, তদন্তের প্রাথমিক পর্যায়ে জানা গেছে, বছর দেড়েক আগে মাদক সেবনের দায়ে আসামি আব্দুল মালেককে ৩ মাসের সাজা দিয়েছিলেন ভ্রাম্যমাণ আদালত।

সাজা ভোগ করেও তিনি মাদক ছাড়তে পারেননি। তিনি মাদকাসক্ত বলেই এলাকার লোকজন আমাদের জানিয়েছে।


চাঁপাইনবাবগঞ্জ সদর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মাযহারুল ইসলাম জানান, খবর পেয়ে দ্রুত পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে হামলাকারীকের স্থানীয়দের সহায়তায় আটক করে।
 ঘটনাটি তদন্ত করে দেখা হচ্ছে। তদন্ত শেষে জানা যাবে প্রকৃত ঘটনা।
এ ব্যাপারে মামলা দায়ের প্রক্রিয়াধীন রয়েছে।


চাঁপাইনবাবগঞ্জ নিউজ/ নিজস্ব প্রতিবেদক/ ২৭-০৫-১৬