গোমস্তাপুর ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে বিদ্রোহী’র কারণে ধরাশায়ী বিএনপি

গোমস্তাপুরে ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে ভরাডুবি হয়েছে বিএনপির। আটটি ইউনিয়নের মধ্যে মাত্র একটিতে জিতেছে দলের প্রার্থী। ফলাফল বিশ্লেষণে দেখা গেছে, বিদ্রোহী প্রার্থীর কারণেই নির্বাচনে ধরাশায়ী হয়েছে দলটি। আট ইউনিয়নের পাঁচটিতেই ছিল বিএনপির বিদ্রোহী প্রার্থী তবে বিদ্রোহী প্রার্থীরা দলীয় প্রার্থীদের চেয়ে বেশি ভোট পেয়েছেন।
আলীনগর ইউনিয়ন বিএনপির প্রার্থী ছিলেন ইসরাফিল হক। তিনি ভোট পেয়েছে ২ হাজার ৮৪৮। বিএনপির বিদ্রোহী প্রার্থী আনোয়ার ইসলাম পেয়েছেন ২ হাজার ৬৪৭ ভোট। এ ইউনিয়নে আওয়ামী লীগ প্রার্থী ৩ হাজার ৮১ ভোট পেয়ে বিজয়ী হয়েছেন আওয়ামী লীগের প্রার্থী তরিকুল ইসলাম। বিএনপির দুই প্রার্থীর মিলিয়ে ভোট পেয়েছে ৫ হাজার ৪৯৫।
বাঙ্গাবাড়ি ইউনিয়ে বিএনপি প্রার্থী শহীদুল ইসলাম পেয়েছেন ৫ হাজার ৩৯১ ভোট। বিএনপি বিদ্রোহী প্রার্থী মনিরুল ইসরাম পেয়েছেন ৮৭১ ভোট। দুই প্রার্থীর মোট ভোট ৬ হাজার ২৬২ এ ইউনিয়নের ৬ হাজার ৯৫৮ ভোট পেয়ে আওয়ামী লীগের সাদরুল ইসলাম বিজয়ী হন।
রাধানগর ইউনিয়নে বিএনপি প্রার্থী মুখতারুল সুমন পেয়েছেন ৪ হাজার ৭৩৮ ভোট। বিএনপি বিদ্রোহী প্রার্থী মতিউর রহমান পেয়েছেন ৭ হাজার ৩০৩ ভোট। তিনি নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী ছিলেন। দুই প্রার্থীর মোট ভোট ১২ হাজার ৪১। এ ইউনিয়নে ১০ হাজার ৮৫৭ ভোট পেয়ে বিজয়ী হয়েছেন আওয়ামী লীগের প্রার্থী মামুনুর রশীদ।
পার্বতীপুর ইউনিয়নে বিএনপি প্রার্থী ইয়াসিন আলী পেয়েছেন ৫ হাজার ৯০৯ ভোট। বিএনপি বিদ্রোহী প্রার্থী ও সাবেক চেয়ারম্যান মোয়াজ্জেম হোসেন পেয়েছেন ৭ হাজার ৭৬৮ ভোট। তিনি নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী ছিলেন। দুই প্রার্থীর ভোট ১৩ হাজার ৬৭৭। এ ইউনিয়নে আওয়ামী লীগের প্রার্থী লিয়াকত আলী খান ৭ হাজার ৯৪৪ ভোট পেয়ে বিজয়ী হয়েছেন।
রহনপুর ইউনিয়নে বিএনপি প্রার্থী গোলাম রাব্বানী রকি পেয়েছেন মাত্র ৬৪০ ভোট। বিদ্রোহী প্রার্থী মনিরুজ্জামান সোহরাব পেয়েছেন ৪ হাজার ৯৬৪ ভোট। দুই প্রার্থীর মোট ভোট ৫ হাজার ৬০৪। রহনপুরে আওয়ামী লীগের প্রার্থী শাহজাহান আনসারী মামলত ৫ হাজার ৬৪০ ভোট পেয়ে বিজয়ী হয়েছেন।
বিএনপি নেতারা বলছেন, একক প্রার্থী দিতে পারলে অন্তত চারটি ইউনিয়নে জয় পেত বিএনপি। দলের একাধিক প্রার্থী থাকায় বিভ্রান্ত হয়েছেন কর্মী-সমর্থকরা। অনেকেই দলের বাইরের প্রার্থীকেও ভোট দিয়েছেন। এ ছাড়া একধিক প্রার্থী হওয়ায় নেতাকর্মীরা আন্তরিক হয়ে কাজ করেন নি ভোটের মাঠে। সবমিলিয়ে বলা যেতে পারে একাধিক প্রার্থীর কারণেই ভরাডুবি হয়েছে বিএনপির।
এ ব্যাপারে রহনপুর পৌর বিএনপির সাধারণ সম্পাদক তারিক আহম্মদ জানান, বিদ্রোহী প্রার্থীর কারণেই বিএনপি প্রার্থীদের পরাজয় হয়েছে। একাধিক প্রার্থীর সমষ্টি ভোট বিবেচনা করলে অন্তত চারটি ইউপিতে বিজয় বিএনপির। একাধিক প্রার্থী দেয়ার ক্ষেত্রে উপজেলা বিএনপির কতিপয় নেতা দায়ী বলেও মন্তব্য করেন তিনি। তিনি জানান বিদ্রোহী প্রার্থীদের বিরুদ্ধে সাংগঠনিক ব্যবস্থা নেয়া হবে। এ ক্ষেত্রে দলের বেশিরভাগ নেতা বিদ্রোহীদের দল থেকে বহিস্কারের দাবি তুলেছেন।
তবে বিএনপির উপজেলা সহ-সভাপতি ও পার্বতীপুর ইউনিয়নের বিএনপির বিদ্রোহী প্রার্থী মোয়াজ্জেম হোসেন বলেন, প্রার্থী মনোনয়নে ভুল সিদ্ধান্তের কারণেই পরাজিত হয়েছে বিএনপি। অন্য কোনো কারণই নেই। তিনি জানান, বিএনপির কতিপয় নেতা কেন্দ্রকে ভুল বুঝিয়ে গ্রহণযোগ্যতা নেই এমন ব্যক্তিদের প্রার্থী করেছে। তার ইউনিয়নে যাকে প্রার্থী করা হয়েছিল সেই ইয়াসিন আলী দলের প্রাথমিক সদস্যও নন। স্থানীয় কতিপয় নেতার ভুল সিদ্ধান্তের খেসারত দিতে হয়েছে বিএনপিকে। ওই নেতাদের ব্যাপারে কেন্দ্রের কাছে অভিযোগ করা হবে বলেও জানান তিনি।

চাঁপাইনবাবগঞ্জ নিউজ/ নিজস্ব প্রতিবেদক/ ০২-০৪-১৬

,