শিবগঞ্জের পাগলা নদীর পানি হঠাৎ বৃদ্ধি > ক্ষতিগ্রস্থ হচ্ছে তীরবর্তী ইরিবোরো ধান

নেই বর্ষা, নেই কোন উযান-ভাটার ঢেউ। তবুও দেখা দিয়েছে হঠাৎ পানির বৃদ্ধি। চাঁপাইনবাবগঞ্জের শিবগঞ্জের পাগলা নদীতে কয়েকদিনে হঠাৎ করে পানি বৃদ্ধি পাওয়ায় নদীর পার্শ্ববর্তী ইরি, বোরো ধান ক্ষেত তলিয়ে যেতে বসেছে। পানি বৃদ্ধির ফলে প্লাবিত হওয়ার আশঙ্কা প্রায় ৩ হাজার বিঘা বোরো ধানের জমি। আর ইতিপূর্বে পানির নিচে তলিয়ে গেছে প্রায় ১ হাজার বোরো ধান।
জানা গেছে, কয়েকদিনে নদীতে প্রায় ৩ ফুট পানি বৃদ্ধি পেয়েছে। অসময়ে পাগলা নদীর পানি হঠাৎ করে বৃদ্ধি পাওয়ায় উভয় তীরে রোপন করা ইরি, বোরে ধানের ব্যাপক ক্ষতি হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। এছাড়া, গত বছর এসময় একইভাবে পানি বৃদ্ধি পাওয়ায় ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছিল প্রায় ৩ হাজার বিঘা বোরো ধান। নদীর দক্ষিণের উত্তরে পানি অনেক কম অবস্থান রয়েছে। এদিকে অনুসন্ধানে জানা গেছে, উপজেলার ৪ টি ঘাটে অবৈধ বাঁধ দেয়ায় এ ঘটানাটি ঘটেছে। পাগলা নদী ও মহানন্দা নদীর মধ্য স্থানের বহলাবাড়ি ঘাট, ফকিরপাড়া ঘাট, মহদীপুর ঘাট ও তর্তিপুর ঘাটে একযোগে অবৈধ বাঁধ দেয়ায় প্লাবিত হওয়ার আশঙ্কায় রয়েছে এই সব ধানের জমি। ইতিপূর্বে নদীর গর্ভে তলিয়ে গেছে প্রায় ৩০ বিঘা জমির বোরো ধান। পানি প্রবাহের জন্য অবৈধভাবে নদীতে নির্মিত হওয়ায় বাঁধ উচ্ছেদ করার জন্য কাজ করছে কৃষি অধিদপ্তর ও উপজেলা প্রশাসন। এ ব্যাপারে পানি উন্নয়ন বোর্ড চাঁপাইনবাবগঞ্জ দপ্তরের এসডিই আবদুস সাত্তারের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি জানান, এই সময়টাতে ফারাক্কা বাঁধের গেট খুলে বাংলাদেশে পানি সরবরাহের কথা রয়েছে। সেই হিসাবে পানি ছেড়ে দেওয়ায় পদ্মা ও পাগলা নদীতে পানি বৃদ্ধি পেয়েছে। তবে নদীর পার্শ্ববর্তী জমিতে রোপনকৃত ইরি, বোরো ধান খেতে কিছুটা ক্ষতি হতে পারে বলে সম্ভাবনা রয়েছে। তিনি আরও জানান, ছেড়ে দেয়া পানি প্রবাহ অব্যাহত থাকলে ধান খেতের ক্ষতি হওয়ার সম্ভাবনা নেই। অন্যদিকে, বোরো ধান চাষী দুরুল ইসলাম, পার্শ্ববর্তী চাষী, আমির আলী, সোবহান হোসেন ও মোশারফ হোসেন মোসা জানায়, বহলাবাড়ি ঘাট, ফকিরপাড়া ঘাট, মহদীপুর ঘাট ও তর্তিপুর ঘাটে একযোগে বাঁধ দেয়ার ফলে তর্তিপুর ঘাট থেকে শাহাবাজপুর ইউনিয়নের শেষ মাথা পর্যন্ত নদীর ধারে যে সব ধানের জমি আছে ওই সব জমি পানিতে প্রায় প্লাবিত হয়ে গেছে। এর আগে গত বছর একই অবস্থা হয়েছিল আমাদের। ওই সব ঘাট কর্তৃপক্ষ একইভাবে অধৈবভাবে নদীর ভরাট করে পানি সচলের বিঘœতা ঘটাচ্ছে। গত বছরের ন্যায় যদি এবছরও হয় তাহলে আমরা প্রচুর ক্ষতির মধ্যে পড়বো। এব্যাপারে শিবগঞ্জ উপজেলা কৃষি অফিসার আমিনুজ্জামান জানান, পাগলা নদীর উভয় তীরে প্রায় ১২ হাজার হেক্টর জমি ইরি, বোরো ধান রোপন করা হয়েছে। তবে পানি প্রবাহ অব্যাহত অথবা বন্ধ হলে গেলেও ধানের ক্ষতি হওয়ার সম্ভাবনা নেই। আমরা পানি প্রবাহের জন্য নদীর ৪ টা ঘাটে যে সব অবৈধ বাঁধ নির্মাণ রয়েছে তা আমার ভেঙে দিচ্ছি যেনো নদীর পানি সচল ও সমতল হয়ে প্রবাহিত হয়।

চাঁপাইনবাবগঞ্জ নিউজ/ নিজস্ব প্রতিবেদক, শিবগঞ্জ/ ২৪-০২-১৬


,