পাঠকের আকাল সরকারি গণগ্রন্থাগারে
চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলার সর্বশ্রেণীর মানুষের পড়াশুনা করার জন্য শহরের শহীদ সাটু হল এলাকায় সর্বপ্রথম অস্থায়ী ভিত্তিতে গড়ে তুলা হয় তথ্য মুসলিম লাইব্রেরী বা তথ্য কেন্দ্র লাইব্রেরী নামে যার বর্তমান নাম চাঁপাইনবাবগঞ্জ সরকারি গণগ্রন্থাগার। এর পরে দীর্ঘদিন কাঠাল বাগিচায় পরে হুজরাপুর বেসরকারি জায়গায় বাড়ি ভাড়া নিয়ে পাঠাগার চললেও ২০০৫- ২০০৬ অর্থবছরে শহরের পাঠানপাড়া কোর্ট এরিয়ার সরকারি জায়গার উপর নির্মান করা হয় নতুন ভবন। যেখানে পাঠকদের জন্য রয়েছে বিভিন্ন ধরনের ২৫ হাজারের অধিক বই। রয়েছে বিভিন্ন দিবস পালন এমনকি সাংস্কৃতিক কর্মকান্ড পরিচালনার করার জন্য একটি অডিটোরিয়াম। কিন্তু ১ কোটি টাকা অধিক ব্যয়ে নির্মিত এই সরকারি গণগ্রন্থাগারে খুব একটা পাঠক যান না। এমনকি অডিটোরিয়ামে কোন সাংস্কৃতিক কর্মকান্ড ও পরিচালিত হয়না। শহর থেকে খুব দূরে না হলেও স্কুল-কলেজের শিক্ষার্থীরা সেখানে যেতে আগ্রহ প্রকাশ করেনা। বুধবার সকালে সরেজমিন পরিদর্শন করে দেখা গেছে দুই-তিন জন ছেলে বয়ে বই পড়ছে। আবার একইদিন বিকেলে গিয়ে দেখা যায় সেখানে ২ জন সাধারণ মানুষ পত্রিকা পড়ছে। নবাবগঞ্জ সরকারি কলেজের অনার্স তৃতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী মোঃ আবদুল বারী জানান, শহরের স্কুল কলেজ রোডের মডেল স্কুলের সামনে চাঁপাইনবাবগঞ্জ সাধারণ পাঠাগারে আমরা নিয়মিত বিভিন্ন বই পত্র সহ দৈনিক পেপার নিয়মিত পড়তে যায়। কিন্তু জেলায় সরকারি গণগ্রন্থারে তেমন যাওয়া হয়না। অন্যদিকে নবাবগঞ্জ সরকারি মহিলা কলেজের শিক্ষার্থী সাবরিনা জানান, চাঁপাইনবাবগঞ্জ শহরে সরকারি গণগ্রন্থাগার আছে এটা আমার জানা নেই। নবাবগঞ্জ সরকারি কলেজের অধ্যক্ষ প্রফেসর ড.মাযহারুল ইসলাম তরু জানান, সরকারি গণগ্রন্থাগারে বিভিন্ন ধরনের প্রচুর বই রয়েছে। এমনকি সরকারি বিভিন্ন ম্যাগাজিন, গেজেট, উন্নয়ন বার্তাসহ সাম্প্রতিক কালের বিভিন্ন ঘটনাবলীর সমাহার সেখানে রয়েছে কিন্তু এখানে গেলে বই ইন্সু করা হয়না। তাছাড়া পাঠাগার কর্তৃপক্ষের প্রচার প্রচারণা বা সদস্য হবার আহবান করা সহ গ্রন্থাগারের সৌজন্যে বিভিন্ন দিবস পালন নিয়মিত না হবার কারনে এখানে ছাত্র-ছাত্রী সহ সাধারণ পাঠক খুব কম আসে। নামোশংকরবাটী উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আসলাম কবীর জানান, সরকারি গণগ্রন্থাগারের কোন দিবসের রচনা প্রতিযোগিতা , সাধারণ জ্ঞান আয়োজনের খবর আমাদের জানানো হয়না বিধায় আমার বিদ্যালয়ের ছাত্র-ছাত্রীদের সেগুলোতে অংশগ্রহণ করাতে পারিনা। হরিমোহন সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী শাহরিয়ার শুভ জানান, পাঠাগারের সৌজন্যে ১লা বৈশাখ, ১৬ডিসেম্বর, ২৬মার্চ সহ বিভিন্ন দিবসের রচনা প্রতিযোগিতা প্রচার আমরা পায়না। এব্যাপারে সরকারি গণগ্রন্থাগারের জুনিয়র লাইব্রেরীয়ান সি এম শাহিনুর রহমান ঢাকায় ট্রেনিংরত থাকার কারনে মুঠোফোনে জানান, আমি ২ মাস হলো এখানে জয়েন্ট করেছি। সমস্য গুলোর ব্যাপারে অবগত আমি ট্রেনিং থেকে এসে সমস্যাগুলোর সমাধানের চেষ্ঠা করবো। লাইব্রেরীতে কর্মরত সহকারি লাইব্রেরীয়ান জানান, আমরা সপ্তাহে বৃহস্পতিবার ও শুক্রবার ছাড়া ৫ দিন গ্রন্থাগার খোলা থাকে প্রতিদিন সকাল ১০টা থেকে সন্ধ্যা ৬টা পযন্ত খোলা রাখা হয়। সদস্য হবার ব্যাপারে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ফর্ম সংগ্রহের পর শিশু ছাত্রদের জন্য ১ বছর মেয়াদে ৩০০ টাকা নিয়ে জামানত রাখা হয়। ও সর্বসাধারণের জন্য ১বছর মেয়াদে ৫০০ টাকা নিয়ে জামানত রাখা হয়। জুনিয়র লাইব্রেরীয়ান সি এম শাহিনুর রহমান আরো জানান, সরকারি গ্রন্থাগারে বর্তমানে লাইব্রেরীয়ান পোস্ট ফাঁকা থাকায় ও জনবল সংকট কম থাকায় কাজের কিছুটা সংকট দেখা দিচ্ছে।
চাঁপাইনবাবগঞ্জ নিউজ/ মেহেদি হাসান, নিজস্ব প্রতিবেদক/ ১১-০১-১৬
চাঁপাইনবাবগঞ্জ নিউজ/ মেহেদি হাসান, নিজস্ব প্রতিবেদক/ ১১-০১-১৬